চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

যমুনা অয়েল কোম্পানিতে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা দেখিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ!

যমুনা অয়েল কোম্পানিতে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা দেখিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ!

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ ডিসেম্বর, ২০২০ | ৪:২৫ অপরাহ্ণ

রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণন প্রতিষ্ঠান যমুনা অয়েল কোম্পানির এক শ্রমিকের বিরুদ্ধে অধিক কর্মঘণ্টা দেখিয়ে ওভারটাইমের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গুপ্তখালের অয়েল ডিপোতে ফিটার হিসেবে কর্মরত মো. খোরশেদ আলম এমন কাজ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে উল্লেখ করে গতবছরের মে মাসে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

অভিযোগ আমলে নিয়ে ডিপোর পক্ষ থেকে করা হয়েছিল দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি। যমুনা অয়েলের ম্যানেজার (একাউন্টস) মেসবাহ উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে কমিটিতে সদস্য ছিলেন কোম্পানির সিনিয়র অফিসার (সেলস) মোহাম্মদ সাইফুর রহমান। অভিযুক্ত শ্রমিক মো. খোরশেদ আলমকে দোষী সাব্যস্ত করে তদন্ত প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে কমিটি। তবে ওই তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেনি যমুনা। এমনকি অভিযোগের প্রায় এক বছর পার হলেও ওই শ্রমিকের বিরুদ্ধে গ্রহণ করা হয়নি কোন ব্যবস্থা।

তদন্ত প্রতিবেদনে ওই তদন্ত কর্মকর্তারা উল্লেখ করেন, যমুনা গুপ্তখালের অয়েল ডিপোর গেটে রাখা দৈনিক হাজিরা খাতা বিশ্লেষণে দেখা যায়, মো. খোরশেদ আলম অধিক কর্মঘণ্টা দেখিয়ে ওভারটাইম গ্রহণ করেছে। ওই হাজিরা খাতার প্রবেশ ও বাহির হওয়ার সময় পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৮ সালের ১, ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর মো. খোরশেদ আলম বিলে উল্লেখিত সময়ের পরে অফিসে প্রবেশ এবং পূর্বে বের হয়ে গেছেন। যার পাশে তার স্বাক্ষরও রয়েছে।

এদিকে, ডিপো থেকে তদন্ত প্রতিবেদনটি যমুনার ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হলেও তা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি বিষয়টি সম্পর্কে জানতে যমুনার ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন আনচারীর অফিস কক্ষে অবস্থান করলেও তিনি প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে রাজি হননি। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে যমুনার মানব সম্পদ বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপক মাসুদ করিমের সাথে কথা বলার জন্য প্রতিবেদককে পরামর্শ দেন তার ব্যক্তিগত সহকারী।

যমুনার মানবসম্পদ বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপক মাসুদ করিমের কাছে ‘অভিযুক্ত কর্মচারীর বিরুদ্ধে এখনও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কিনা’ জানতে চাইলে তিনি পূর্বকোণকে বলেন, ‘তদন্ত চলছে। এরপর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’ কেন সময়ক্ষেপণ হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি আবারও একই মন্তব্য করেন।

অভিযুক্ত শ্রমিক মো. খোরশেদ আলম তদন্ত কমিটিকে জানান, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি করা হয়েছে তার আইনগত ভিত্তি নেই। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সঠিকভাবেই অধিকাল করেছেন এবং জমা দিয়েছেন। যা সঠিকভাবে দেখে-শুনে বিলে স্বাক্ষর করেছেন কর্তৃপক্ষ। এছাড়া গেটে যে রেজিস্টার রয়েছে তাতে তিনি শুধুমাত্র প্রবেশের সময় স্বাক্ষর করেছেন। বের হওয়ার সময় তিনি সময় লেখেননি। সিকিউরিটি গার্ডরাই বাহির হওয়ার সময় লিপিবদ্ধ করেন। এমনকি বর্তমান রেজিস্টার পদ্ধতি সঠিক নয় মন্তব্য করার পাশাপাশি সিস্টেমটিতে গলদ আছে বলেও জানান তিনি।

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট