চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস আজ

বেড়েছে সাজার হার

আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস আজ

ইমাম হোসাইন রাজু

৯ ডিসেম্বর, ২০২০ | ১:২১ অপরাহ্ণ

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ২০১৮ সালের মামলায় সাজার হার ছিল ৬০ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর নিষ্পত্তির হার ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। পরবর্তী বছর (২০১৯ সাল) এই হার সামান্য বেড়ে দাঁড়ায় ৬১ দশমিক ২০ শতাংশ। বিপরীতে নিষ্পত্তি হার ছিল ৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সবশেষ চলতি বছরের (২০২০ সাল) অক্টোবর পর্যন্ত মামলার সাজার হার এসে দাঁড়ায় ৭৭ শতাংশ। চলতি বছরে সাজার হারের যে প্রবৃদ্ধি সেটি বহাল থাকলে বছরের শেষ দুই মাস অন্তে সেটি ৯২ শতাংশে পৌঁছবে।

এদিকে দুদকের মামলা এবং নিষ্পত্তি সংক্রান্ত প্রতিবেদনের তথ্যে দেখা যায়, ২০০৯-২০১০ সালে কিছুটা ধারাবাহিকতা থাকলেও ২০১৫ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে দুদকের মামলায় সাজার হার নেমে আসে ২০ শতাংশে। তবে ২০১৬ সালে এসে কিছুটা গতি ফিরে। বাড়ে মামলা নিষ্পত্তি ও সাজার হারও। দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিখুঁতভাবে অনুসন্ধান-তদন্ত ও মামলা পরিচালনার ফলে সাজার হার বাড়ছে। আর সাজার হারের এই প্রবণতাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন দুর্নীতিবিরোধী কাজে সংশ্লিষ্টরা। এ ধারা আরও বাড়ানো গেলে দেশে দুর্নীতির পরিমাণ আরও কমবে বলে মনে করছেন তারা। ফি বছর সাজার ক্রমবর্ধমান হারের কারণ বর্ণনা করে দুদক কমিশনার ড.

মোজাম্মেল হক গণমাধ্যমকে জানান- একদিকে অনুসন্ধান, তদন্ত এবং মামলা পরিচালনাসহ সর্বস্তরে দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে আইনি বিষয়গুলো নিখুঁতভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সঠিকভাবে আলামত উপস্থাপন করার ফলেই সাজা বৃদ্ধির হার বেড়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি এডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী বলছেন, সাজার পরিসংখ্যানটি কাগজের হিসেব। বাস্তবতার সাথে এর মিল নেই।

তিনি বলেন, করোনার মহামারীর সময়ে কি পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে, তা আঙ্গুল দিয়েই দেখিয়ে দিয়েছে। শুধুমাত্র এপ্রিল, মে ও জুন মাসেই সাড়ে তিন হাজার কোটিপতি বেড়েছে। এতেই দুর্নীতির চিত্র বোঝা যায়। দুর্নীতি বন্ধে সাময়িক ‘লোকদেখানো’ উদ্যোগের বিপরীতে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।

এডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী বলেন- আশা করবো দুদকে যারা আছেন, তারাও আরও বেশি স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করবেন। তাহলে একদিকে যেমন দুর্নীতি বন্ধ হবে, তেমনি বাংলাদেশও বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
দুর্নীতির এমন মিশ্র অভিজ্ঞতা আর প্রতিক্রিয়ার মধ্যেই দেশে আজ ৯ ডিসেম্বর পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস।

২০০৩ সালে সারাবিশ্বকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে জাতিসংঘ প্রতি বছর ৯ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর ২০০৭ সাল থেকে দিবসটি পালন শুরু হয়। তবে বাংলাদেশে সরকারিভাবে ২০১৭ সাল থেকেই দিবসটি পালিত হচ্ছে।

করোনাকালে দিবসটি পালনের লক্ষ্যে অন্যান্য কর্মসূচি বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একই সাথে তথ্যচিত্র প্রদর্শনসহ অন্যান্য কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। চট্টগ্রামেও এ দিবস উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছে নানান কর্মসূচির।

 

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট