চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

বিজিবি ফায়ারিং ইভেন্টে কৃষককন্যা বিথীই প্রথম, প্রধানমন্ত্রীর উচ্ছ্বাস

২৫০০ নারী-পুরুষ সৈনিকের প্রতিযোগিতা

বিজিবি ফায়ারিং ইভেন্টে কৃষককন্যা বিথীই প্রথম, প্রধানমন্ত্রীর উচ্ছ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

৬ ডিসেম্বর, ২০২০ | ৬:২৪ অপরাহ্ণ

হাসিনা আক্তার বিথি (১৯)। বাড়ি শেরপুর জেলার নকলা থানায়। বাবা আনিসুর রহমান পেশায় কৃষক, মা মনোয়ারা বেগম গৃহিণী। দুই বোন একভাইয়ের পরিবারে সবার ছোট বিথি। বড় ভাই আজিজুর রহমান ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। বড় ভাই কাজ করেন ঢাকায়। সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে যোগ দিয়ে জীবন গড়বেন-একমাত্র ভাইয়ের এমন আশাতেই যোগ দেন বিজিবিতে। ছ’মাস আগে বিজিবির ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়নে রিক্রুট হন। সেখানে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনশেষে প্রশিক্ষণের জন্য আসেন দেশের একমাত্র প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বাইতুল ইজ্জতস্থ বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজে।

প্রশিক্ষণকালে সব কষ্ট ভুলে যেতেন বড় ভাইয়ের ইচ্ছের কারণে। সেখানে বন্ধুদের সাথে আনন্দ-মজার মধ্যেই ভুলে থাকতেন সব। আজ বিথি সফল। ৬ মাস প্রশিক্ষণশেষে প্রায় আড়াই হাজার নারী-পুরুষকে পিছনে ফেলে ১০০ মিটার ফায়ারিং রেঞ্জে প্রথম হয়েছেন। শপথ গ্রহণ ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত আনন্দের সাথে এই নারী সৈনিককে বিশেষ অভিনন্দন জানান। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসিমুখে তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মেয়েরা যে ভালো ফায়ারার হতে পারে সেটি প্রমাণিত হলো। আবার নামটাও আমার নামে নাম। কাজেই আমার অনেক আনন্দ হচ্ছে।

হাসিনা আক্তার বিথি বলেন, আজ এ পর্যন্ত আসা সম্ভব হয়েছে আমার ভাইয়ের জন্য। আমার ভাইয়ার ইচ্ছে ছিল আমি বিজিবিতে যোগ দিয়ে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার পাশাপাশি দেশ সেবায় কাজ করি। আবেদন করা থেকে শুরু করে ট্রেনিং সেন্টার পর্যন্ত আসা সব কাজ আমার ভাই নিজেই করেছেন।

নারী হয়েও ফায়ারিংয়ের মতো চ্যালেঞ্জিংয়ের একটি ইভেন্টে প্রথম হয়েছেন কেমন লাগছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আশা করিনি, এ পর্যন্ত আসব। নারী-পুরুষ আলাদা কিছু না। এটা সমাজ মনে করে।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ ধন্যবাদ ও নাম নিয়ে মজা করার ব্যাপারটি কেমন লেগেছে জানতে চাইলে বিথী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নামের সাথে আমার নামের কিছুটা মিল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ধন্যবাদ দেয়ার পর, আমার বন্ধুরা আমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছিল। বলছিল, দেখ প্রধানমন্ত্রী, তোর নাম ধরে মজা করে শুভেচ্ছা জানাল। প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে পুরস্কার পেয়ে আনন্দ লাগছে। তারপরও সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিতে পারলে আরো ভালো লাগতো।

২০১৭ সালে চরমধুয়া শিক্ষা নিকেতনের মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ করে ভর্তি হন চৌধুরী ছবরুন নেছা মহিলা কলেজে। সেখান থেকে ২০১৯ সালে এইচএসসি পাশ করেন তিনি। বর্তমানে অনার্স করছেন শেরপুর কলেজ থেকে। ২০০১ সালের শেরপুর জেলার নকলা গ্রামে জন্ম নেয়া এ নারীর লক্ষ্য আদর্শ ও দক্ষ সৈনিক হিসেবে গড়ে উঠে দেশের সীমান্ত রক্ষা, চোরাচালান রোধ করা।

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট