আজ ১০ নভেম্বর। ‘শহীদ নূর হোসেন দিবস বা স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’। বাঙলাদেশ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন-সংগ্রাম এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর এই দিনে তৎকালীন সেনাশাসকের বিরুদ্ধে ঢাকার রাজপথে সংগ্রাম করতে গিয়ে আত্মাহুতি দেন নূর হোসেন। তাই বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে শহীদ নূর হোসেন এক অনন্য নাম।
নূর হোসেন ১৯৬১ সালে বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। জীবিকার সন্ধানে তার পরিবার ঢাকায় এসেছিল। নূর হোসেনের পরিবার থাকত রাজধানীর পুরনো ঢাকার বনগ্রামে। নূর হোসেনের বাবা মজিবুর রহমান পেশায় ছিলেন একজন বেবিট্যাক্সি চালক। মা মরিয়ম বেগম গৃহিণী। নূর হোসেন নিজেও ছিলেন একজন পরিবহন শ্রমিক।
গায়ের শার্ট কোমড়ে বাঁধা, পরনে জিন্সপ্যান্ট, পায়ে কেডস, খালি গায়ে বুকে পিঠে লেখা ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’। নূর হোসেনের পুরো শরীরটাই যেন প্রতিবাদি পোস্টার। নূর হোসেনের এ প্রতিবাদ সহ্য করতে পারেনি স্বৈরাচার সরকার। নির্মম বুলেট ছুটে আসে প্রতিবাদি যুবক নূর হোসেনের দিকে।
গুলিবিদ্ধ নূর হোসেনকে যখন একটি রিকশায় করে হাসপাতালের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন এক যুবক। গুলিবিদ্ধ নূর হোসেনকে রিকশা থেকে নামিয়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে নেয়া হয়। নূর হোসেন যখন মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন তখনও একজন পুলিশ সদস্য পায়ের বুট তার বুকের উপর চেপে ধরে। স্বৈরাচারী পুলিশ এমন নিষ্ঠুরভাবে সেদিন নূর হোসেনকে হত্যা করে। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর সেনাশাসকের পতন ঘটে।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর গুলিস্তানে শহীদ নূর হোসেন স্কয়ারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন ও তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসের সাহসী পুরুষ শহীদ নূর হোসেন দিবস যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে পালনের জন্য দলের সব সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া বিএনপি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ সকালে শহীদ নূর হোসেন স্কয়ারে (জিরো পয়েন্ট) পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে।
পূর্বকোণ/পিআর