চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

ব্যাংককে ইন্তেকাল বিশিষ্ট সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ্র

২৮ এপ্রিল, ২০১৯ | ২:৫৯ পূর্বাহ্ণ

বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক মাহফুজ উল্লাহ আর নেই। গতকাল শনিবার সকালে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি…..রাজিউন)। সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ দীর্ঘদিন থেকেই হৃদরোগ, কিডনি ও উচ্চ রক্তচাপজনিত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন। মরহুমের স্ত্রী দিনারজাদী বেগম, ছোট মেয়ে ডা. নুসরাত হুমায়রা, ছোট জামাতা মিনহাজুল হক হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যু সংবাদটি নিশ্চিত করে মাহফুজ উল্লাহর বড় ভাই অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, ‘বামরুনগ্রাদ হাসপাতালের চিকিৎসকরা শনিবার সকালে মাহফুজ উল্লাহর মৃত্যু নিশ্চিত করেছেন বলে জানান তার মেয়ে নুসরাত হুমায়রা।’ মাহবুব উল্লাহ বলেন, আজ রবিবার বাদ জোহর ঢাকার গ্রিন রোড ডরমেটরি জামে মসজিদে মরহুমের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

পরে বাদ আসর জাতীয় প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় জানাজা শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মাহফুজ উল্লাহর মরদেহ দাফন করা হবে।-বাসস
মরহুমের পারিবারিক সূত্র জানায়, গত ২ এপ্রিল সকালে ধানমন্ডির গ্রিন রোডের নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গুরুতর অসুস্থ হলে গত তিন সপ্তাহ ধরে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন মাহফুজউল্লাহ। গত ২১ এপ্রিল তার মৃত্যুর খবরও ছড়িয়ে পড়লে, মেয়ে নুসরাত তখন জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা বেঁচে আছেন। মরহুমের পারিবারিক সূত্র জানায়, তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে, আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
১৯৫০ সালের ১০ মার্চ নোয়াখালীতে জন্ম নেওয়া মাহফুজ উল্লাহ বাংলাদেশের প্রতিটি অধিকার আদায়ের আন্দোলনের একজন নেতৃস্থানীয় কর্মী। ছাত্রাবস্থায়ই সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন তিনি।
বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাপ্তাহিক বিচিত্রাসহ দেশের বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে তিনি কাজ করেছেন। মাঝে চীনে বিশেষজ্ঞ, কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগেও খ-কালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন সিনিয়র এই সাংবাদিক।
সেন্টার ফর সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্টের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জেনারেল মাহফুজ উল্লাহ বাংলাদেশে পরিবেশ সাংবাদিকতার সূচনা করেন। রাজনীতি উন্নয়ন ও পরিবেশ বিষয়ে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লেখা তার বইয়ের সংখ্যা পঞ্চাশের বেশি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট সদস্য এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর করজারভেশন অব নেচারের একজন নির্বাচিত সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে তিনি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত হন।
মাহফুজ উল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যা ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর করেন। তার বাবা শিক্ষাবিদ মরহুম হাবিবুল্লাহ ও মাতা মরহুমা ফয়জুননিসা বেগম। তৎকালীন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কমরেড মোজাফফর আহমদের নাতি সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট