চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

তিতাসের তদন্ত কমিটি: মসজিদে বিস্ফোরণের কারণ অবৈধ গ্যাস-বিদ্যুৎ

তিতাসের তদন্ত কমিটি: মসজিদে বিস্ফোরণের কারণ অবৈধ গ্যাস-বিদ্যুৎ

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ৯:৫২ অপরাহ্ণ

নারায়নগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, অবৈধ গ্যাস সংযোগের রাইজার থেকে ও পাইপ লাইনের ওপর মসজিদ নির্মাণ করায় লাইনের ছিদ্র থেকে নির্গত গ্যাস মসজিদ জমা হয়। বিদ্যুতের অবৈধ লাইন ব্যবহার করতে গিয়ে স্পার্কের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটে মসজিদে আগুন ধরে।

তিতাস গ্যাসের অনুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহাব আজ বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

গত বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) তদন্ত কমিটির প্রধান তিতাস গ্যাস ঢাকা কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা) আবদুল ওয়াহাব তালুকদার বলেন, তাঁরা মাটি খুঁড়ে তিতাসের পাইপলাইনে ছয়টি ছিদ্র পেয়েছেন। ওই ছিদ্র দিয়ে গ্যাস যেখানে জায়গা পেয়েছে সেখানে ছড়িয়ে পড়েছে। মসজিদের কলাম বেইজ নির্মাণের সময় তিতাসের পাইপলাইনের র‌্যাপিং নষ্ট হয়ে মাটির সংস্পর্শে এসে পাইপ লিকেজ হয়েছে বলে জানান তিনি।

মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল গফুর এই বক্তব্য নাকচ করে দেন।

প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে অর্ধশতাধিক মানুষ দগ্ধ হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ৩৭ জনকে ভর্তি করা হয়। এখন পর্যন্ত সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুসহ ৩১ জনের মৃত্যু হয়। ভয়াবহ ওই বিস্ফোরণে মসজিদের ছয়টি এসি পুড়ে গেছে ও থাই জানালার গ্লাস উড়ে গেছে।

ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন কবির মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গত শনিবার মসজিদ পরিচালনা কমিটি, তিতাস গ্যাস ও ডিপিডিসির অবহেলাকে দায়ী করে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে মামলা করেন।

বিস্ফোরণের ঘটনায় মসজিদ কমিটি অভিযোগ করেন, তিতাস গ্যাস থেকে গ্যাস লিকেজের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে লিকেজ মেরামত করতে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়া হয়। তাঁরা ঘুষের টাকা জোগাড় করতে পারেননি বলে গ্যাস লিকেজ মেরামত করা যায়নি। মসজিদ কমিটির এই বক্তব্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস, জেলা প্রশাসন, তিতাস গ্যাস, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) ও সিটি করপোরেশন পৃথক পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির গণশুনানিতে ৪৩ জন সাক্ষ্য দেন। ডিপিডিসি মসজিদের সামনে থেকে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও একটি খুঁটি সরিয়ে নিয়েছে।

বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে তিতাস গ্যাস মসজিদের পূর্ব ও উত্তর পাশের সড়কের পুরো মাটি খুঁড়ে পরিত্যক্ত পাইপলাইনে ছয়টি ছিদ্র দেখতে পান। এ ঘটনায় তিতাসের চার কর্মকর্তাসহ আটজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

 

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট