চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ঢাকার সঙ্গে চলতি মাসেই বৈঠকে আগ্রহী দিল্লি

নিজস্ব প্রতিবেদক

৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ | ৫:৫৪ অপরাহ্ণ

চলতি সেপ্টেম্বরে মাসেই বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের (জেসিসি) ষষ্ঠ বৈঠক করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লি। এর জন্য শেখ হাসিনা সরকার প্রস্তুতি নিলেও চলতি মাসেই বৈঠকটি নাও হতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে গত ১৯ আগস্ট বৈঠকের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, দ্রুত পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগের বৈঠকগুলোর ধারাবাহিকতায় আসন্ন বৈঠকেও উঠবে এমন কিছু বিষয় হচ্ছে সীমান্ত হত্যা বন্ধ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিকাশ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, নদীর পানি বণ্টন, পরিবহন ও রেল কানেকটিভিটি, সংস্কৃতি ও মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক প্রভৃতি। একইসঙ্গে মুজিববর্ষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলেছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেসিসির পঞ্চম বৈঠকে নানা বিষয়ে ভারতের কাছে ‘আশু সুরাহা’ চাইলে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘আশু সমাধানের’ আশ্বাস দিয়েছিলেন। আসন্ন বৈঠকে ‘আশু সুরাহা’ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কী কী ‘আশু সমাধান’ হয়েছে তা জানতে চাইবে ঢাকা। প্রসঙ্গত, পরপর তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ এর ফেব্রুয়ারিতে জেসিসির পঞ্চম বৈঠক হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ওই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে এবং ভারতের পক্ষে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বলেছে, দিল্লি চাইছে চলতি মাসেই দুদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের জেসিসির বৈঠকটি সেরে ফেলতে। কিন্তু শুধু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকটি মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। অনেকগুলো মন্ত্রণালয়ের নানা ইস্যু নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ফলে দ্বিপক্ষীয় সব ইস্যু মিলিয়ে বৈঠকের আলোচ্য বিষয় নির্ধারণ করা হবে। আর এই আলোচ্য বিষয় নির্ধারণ করতে কিছুটা সময় লাগবে। এরফলে চলতি সেপ্টেম্বরে দিল্লির চাহিদামতো ভারত-বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক নাও হতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন যাতে দিল্লি সফর করেন সে বিষয়েও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাগাদা দিচ্ছে। তবে এখনো মাসুদ বিন মোমেনের দিল্লি সফরসূচি চূড়ান্ত হয়নি।

এর আগে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে হঠাৎ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ঢাকা সফর করেন। গত ১৯ আগস্ট মাসুদ বিন মোমেন ও শ্রিংলার বৈঠকের পরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব গণমাধ্যমকে জানান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক দ্রুত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটির একটি ভালো দিক হচ্ছে বিভিন্ন লাইন মন্ত্রণালয়ে যে প্রকল্পগুলো আছে সেগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করা যাবে। সেসব প্রকল্প আরো দ্রুত হবে। দুই দেশের সুবিধা অনুযায়ী আমরা এই বৈঠক করব।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের পঞ্চম বৈঠকে উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় আসন্ন বৈঠকেও দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে। তবে আমাদের দেশে প্রধান আগ্রহের বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি ও রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের গণহত্যার বিচার এবং শরণার্থী সংকট উত্তরণে ভারতের অবস্থান। কিন্তু রোহিঙ্গা বিষয়ে ভারতীয় অবস্থান জানা গেলেও তিস্তা চুক্তি কিংবা শরণার্থী বিষয় নিয়ে দিল্লির কথাবার্তা ঢাকাকে হতাশায় ফেলেছে।

 

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট