রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বালিশ কেলেঙ্কারির অন্যতম হোতা ঠিকাদার শাহাদাত হোসেন আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। আদালত ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্র জানায়, পাবনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে গত বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) জামিন পেয়ে ওইদিনই শাহাদাত কাশিমপুর কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে রূপপুরে রাশিয়ানদের আবাসস্থল নির্মাণের অন্যতম শীর্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাজিন কনস্ট্রাকশান লিমিটেডের মালিক শাহাদাত হোসেন রূপপুর প্রকল্পের আসবাবপত্র সরবরাহে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যান। তার বিরুদ্ধে দুদক, পাবনা কার্যালয় দুটি আলাদা দুর্নীতির মামলা দায়ের করে। এতে বলা হয়, রূপপুর প্রকল্পে আসবাবপত্র সরবরাহে অস্বাভাবিক দর দিয়ে তারা প্রায় ১৬ কোটি টাকা তছরুপ করেছে। দুদকের পাবনা কার্যালয় মামলাটি তদন্ত করছে।
দুদক পাবনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, গত বৃহস্পতিবার শাহাদাতের আইনজীবীরা পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তার জামিনের জন্য আবেদন করে। পাবনা জেলা ও দায়রা জজ মকবুল আহসান শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করে। ওইদিন তড়িঘড়ি করে জামিনের আদেশ গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠালে বৃহস্পতিবার রাতে কাশিমপুর কারাগার থেকে তিনি ছাড়া পান।
দুদকের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, জামিনের বিষয়টি আমরা পড়ে শুনেছি ও জামিনের কাগজ পাওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে জামিনের কাগজ হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এদিকে, জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, জামিন আদেশ পাবনা থেকে প্রায় আড়াই’শ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এত দ্রুত কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছালো কিভাবে?
উল্লেখ্য, একটি বালিশ কিনতে ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা ও তা ফ্লাটে তুলতে আরও ৭৬০ টাকা ব্যয় দেখানো হয় রূপপুর প্রকল্পে। এছাড়া একটি চুলা ক্রয়ে ৭ হাজার ৭৪৭ টাকা ও তা ফ্লাটে তুলতে ৬ হাজার ৬৫০ টাকা ব্যয় দেখানো হয়। একটি ইস্ত্রি কিনতে ৪ হাজার ১৫৪ টাকা এবং তা তুলতে ২ হাজার ৯৪৫ টাকা ব্যয় দেখানো হয়। এভাবে রূপপুর প্রকল্পে কেনাকাটায় পুকুর চুরির সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে তদন্ত শুরু করে দুদক। এসব ঘটনায় ইঞ্জিনিয়ার, ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হয়।
পূর্বকোণ/আরপি