চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে ইসি

ডা. সাবরিনার বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ আগস্ট, ২০২০ | ৯:৫৬ অপরাহ্ণ

জেকেজি হেলথ কেয়ারের সাবেক চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মিথ্যা তথ্যে দুইবার ভোটার হওয়া ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংগ্রহ করায় তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিব মো. আলমগীর।

সাবরিনা মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজের নামে দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছেন বলে জানতে পেরেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সক্রিয় দুই আইডিতে বয়সের পার্থক্যও দেখানো হয়েছে। বিষয়টি টের পাওয়ার পর বিস্তারিত জানতে ইসির কাছে তথ্য দেয় দুদক। বিষয়টি ইসি তদন্ত করছে।

নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, মামলা করার জন্য এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া সাবরিনার দ্বিতীয় এনআইডিটি ব্লক করে দেয়া হয়েছে। কোন প্রক্রিয়ায় ও কার সুপারিশে তিনি দ্বিতীয়বার ভোটার হয়েছেন, আমাদের কেউ কোন অসৎ উদ্দেশ্যে সহায়তা করেছেন কি-না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মো. আলমগীর বলেন, ইতিমধ্যে আমরা দুদকের চিঠি পেয়েছি। কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ জাতীয় পরিচয়পত্রের বিষয়টি দেখে। আমরা সেই বিভাগকে চিঠির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে বলেছি। তারা প্রতিবেদন জমা দিলে এ বিষয়ে আমরা বিস্তারিত জানাতে পারবো। এর আগে কিছু বলা যাচ্ছে না। দ্বৈত ভোটারের বিষয়টি প্রমাণিত হলে এবং এর সঙ্গে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে মৌখিকভাবে নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট থানা নির্বাচন কর্মকর্তাকে দেয়া হয়েছে। এরপরও মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করার জন্য আমরা একটা চিঠি দিচ্ছি।

সূত্রমতে, ২০১৬ সালের ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় দ্বিতীয়বার ভোটার হন প্রতারক সাবরিনা। একটিতে সাবরিনা শারমিন হোসেন নাম দিয়ে ভোটার হন। এতে জন্ম তারিখ ১৯৭৮ সালের ২রা ডিসেম্বর দেখানো হয়। অন্যটিতে ১৯৮৩ সালের ২রা ডিসেম্বর। দুটি আইডিতে বয়সের তফাত অন্তত পাঁচ বছর। একটিতে স্বামীর নাম হিসেবে ব্যবহার করেছেন আর এইচ হক। দ্বিতীয়টিতে স্বামীর নাম লেখা হয়েছে আরিফুল চৌধুরী। একটিতে বাবার নাম সৈয়দ মুশাররফ হোসেন ও মায়ের নাম কিশোয়ার জেসমীন। অপরটিতে মা-বাবার নাম পরিবর্তন করে সৈয়দ মুশাররফ হুসেন ও জেসমিন হুসেন দিয়েছেন। দুই এনআইডিতে দুই ঠিকানাও ব্যবহার করেছেন তিনি। একটিতে মোহাম্মদপুরের পিসিকালচার হাউজিং সোসাইটির ঠিকানা অন্যটিতে বাড্ডা এলাকার প্রগতি সরণির আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে।

এদিকে, ইসির এনআইডি শাখা থেকে জানা গেছে, ২০০৯ সালে প্রথমবার ভোটার হন সাবরিনা শারমিন হোসেন। সেই অনুযায়ী তার এনআইডি নম্বর: ৬৪৪০০৮৩৮৩৭। ভোটার নম্বর: ২৬১৩০১০০০০২৫। বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা: ১২২/ক, মোহাম্মদপুর পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি। জন্ম তারিখ: ২ ডিসেম্বর, ১৯৭৮। মাতার নাম: কিশোয়ারা জেসমিন, স্বামীর নাম: এইচ হক। পেশা: সরকারি চাকরি আর শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতকোত্তর। অন্যদিকে তথ্য গোপন এবং মিথ্যা তথ্যে ২০১৬ সালে পুনরায় ভোটার হয়েছে সাবরিনা শারমিন হোসেন। সিই অনুযায়ী, তার অপর এনআইডি নম্বর: ৮৭০৪৩৭৩০৮৬। ভোটার নম্বর: ২৬১১১৫৫০০২৩২৫। বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা: ১৪/এ, আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক, প্রগতি সরণি, বাড্ডা। এই এনআইডিতে তার জন্ম তারিখ: ২ ডিসেম্বর, ১৯৮৩। অর্থাৎ ৫ বছর বয়স কমিয়েছেন তিনি। মায়ের নাম জেসমিন হোসেন আর স্বামী আরিফুল চৌধুরী। মায়ের ও স্বামীর নামে পরিবর্তন হয়েছে। এছাড়া শিক্ষাগত যোগ্যতা কমিয়ে স্নাতক উল্লেখ করা হয়েছে। আগের এনআইডিতে শনাক্তকারী কোনো চিহ্ন না থাকলেও দ্বিতীয় এনআইডিতে ‘চিবুকে তিল’ থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

 

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট