দেশজুড়ে আলোচিত ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানাটি এখন নিখোঁজ। সাত দিন আগে আদালত থেকে ফেনী পুলিশ সুপার কার্যালয়ের ঠিকানায় পরোয়ানাটি পাঠানো হলেও পুলিশ সুপার জানিয়েছেন তিনি এখনো পরোয়ানাটি হাতে পাননি।

গত ২৭ মে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে হওয়া মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়। ওই দিনই আদালত মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু সাত দিন পরও সেই পরোয়ানা সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছায়নি বলে দাবি পুলিশের।

সাইবার ট্রাইব্যুনালের পেশকার শামীম আল মামুন জানান, চিঠি পৌঁছাতে এক দিন, বড়জোর দুই দিন লাগতে পারে। এত দিন লাগার কোনো কারণ নেই। পরোয়ানা যেদিন জারি হয়েছে, সেদিনই ফেনী পুলিশ সুপারের ঠিকানায় সেটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। চিঠির স্মারক নম্বর ৬৬৯।

ফেনীর পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান ও সোনাগাজী থানার ওসি মঈনুদ্দীন আহমেদ জানান, পরোয়ানার চিঠি তাদের কাছে পৌঁছায়নি। এমনকি রংপুর রেঞ্জেও পরোয়ানা পৌঁছায়নি। রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক দেবদাস ভট্টাচার্য এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে সাময়িক বরখাস্তের পর মোয়াজ্জেম হোসেন রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত আছেন তা জানালেও তার অবস্থান কোথায় সে সম্পর্কে কিছুই জানাতে পারেননি।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মোয়াজ্জেম হোসেন মামলার কাজে ঢাকায় আছেন। গত ২৯ মে আইনজীবী সালমা সুলতানার মাধ্যমে তিনি হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদনও করেছেন। এ বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও মোয়াজ্জেমকে পাওয়া যায়নি।

মামলার বাদি সৈয়দ সাইয়েদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেনকে পুলিশ সদস্য নয়, আসামি হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ যত সময় নেবে, বাহিনীটির প্রতি মানুষের আস্থা তত কমতে থাকবে।

তিনি জানান, আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পর জামিন আবেদনের সুযোগ নেই। আর জামিন আবেদনের শুনানির সঙ্গে গ্রেপ্তারের কোনো সম্পর্ক নেই।

উল্লেখ্য, মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানাতে গেলে মোয়াজ্জেম তার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ভিডিওতে দেখা যায়, নুসরাতকে বেশ কিছু আপত্তিকর প্রশ্ন করেন তিনি। ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যুর পর ভিডিওটি ব্যাপকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সাইয়েদুল হক এ ঘটনায় বাদি হয়ে মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে।

পূর্বকোণ/ রাশেদ