চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সপ্তাহে লেনদেন ১০০ কোটি টাকা

বিদেশে চাহিদার তুঙ্গে নরসিংদীর লুঙ্গি

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ মে, ২০১৯ | ৫:২৭ অপরাহ্ণ

এদেশের লুঙ্গির গুণগত মান সম্বন্ধে ধারণা পেয়েছেন বিদেশিরা। ঘরের পোশাকে তুমুল জনপ্রিয় নরসিংদীর লুঙ্গি এবার বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের বহু দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। নরসিংদীর লুঙ্গি তাদের কাছে চাহিদার শীর্ষে। যদিও মূলত বিদেশে থাকা বাংলাদেশিরাই এর আসল ক্রেতা।
ব্যবসায়ীদের মতে, এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের লুঙ্গির মান সবচেয়ে ভালো। এ কারণে রপ্তানিতে অনেক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। রঙে, ডিজাইনে ও গুণগত মানে ভালো হওয়ায় মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, আমেরিকাসহ বিশ্বের ২১টি দেশে নরসিংদীর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের লুঙ্গি রপ্তানি হচ্ছে। বছরে প্রায় সাত কোটি পিস নরসিংদীর লুঙ্গি রপ্তানি করা হয় বিদেশে। যার বাজারমূল্য প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। এবারের ঈদ ঘিরে এ বাজারের সাপ্তাহিক লেনদেন ছাড়িয়েছে ১০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ লুঙ্গি ম্যানুফ্যাকচারার্স, এক্সপোর্ট এন্ড ট্রেডার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ও আমানত শাহ গ্রুপের চেয়ারম্যান হেলাল মিয়া বলেন, অতীতে দেশে লুঙ্গির চাহিদা মেটাতে স্থানীয় উৎপাদনের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী ভারত ও মিয়ানমার থেকে আমদানি করা হতো। কিন্তু বর্তমানে দেশের পুরো চাহিদা পূরণ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লুঙ্গি রপ্তানি করছে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রতি বছরই ঈদে লুঙ্গির চাহিদা বেড়ে যায় দ্বিগুণ। এই চাহিদা সামাল দিতে ব্যস্ত সময় পার করেন বিক্রেতারা।
দীর্ঘদিন ধরে বাবুরহাটের কাপড় নিয়ে ব্যবসা করছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, হাট থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার থ্রি-পিস, প্রিন্টের শাড়ি ও ছাপা লুঙ্গি কিনেছি। নরসিংদীর লুঙ্গি মানে ভালো, চাহিদাও বেশি। তাই আমরা ঈদে লুঙ্গি কেনার জন্য বাবুরহাটে এসেছি। তিনি এও বলেন, সরকারি সহযোগিতা পেলে তৈরি পোশাকের পর লুঙ্গি শিল্প দিয়ে বিশ্ববাজারে নতুন জায়গা করে নেয়া যাবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কাপড় কিনতে আসা ব্যবসায়ী আল-আমিন বলেন, আরাম-আয়েশের জন্য এখনও বাসায় লুঙ্গির কোনো বিকল্প নেই। বাবুরহাটে একসঙ্গে বিভিন্ন প্রকারের লুঙ্গি পাওয়া যায়। মান ভালো, দামেও সাশ্রয়। তাই বছরের অন্যান্য সময়ের মতো ঈদে লুঙ্গি কিনতে বাবুরহাটে এসেছি।
স্ট্যান্ডার্ড, আমানত শাহ, এটিএম, অনুসন্ধান, পাকিজা, বোখারি, সোনার বাংলা টেক্সটাইল, ডিসেন্ট, ইউনিক, রুহিতপুরী, স্মার্ট, ফজর আলী, অনুসন্ধান-২, জেএম, স্কাই, ওয়েস্ট, রংধনু, অমরসহ ১২৫টি ব্র্যান্ডের লুঙ্গি বাজারে বিক্রি হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের অভিমত, এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ভালো মানের লুঙ্গি তৈরি হয় বাংলাদেশে। এ কারণে দেশের বাইরে লুঙ্গির চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, স্বাধীনতার পর থেকে নরসিংদীর রায়পুরার চরসুবুদ্ধি, হাইরমারা, নিলক্ষা, আমিরগঞ্জ, মনিপুরা, সদর উপজেলার হাজিপুর, ঘোড়াদিয়া, করিমপুর, নজরপুর, বাবুরহাট (শেখেরচর), মাধবদী, পৌলানপুর, ভাটপাড়া, ভগীরথপুর এলাকায় হস্তচালিত তাঁতে তৈরি হয় এই লুঙ্গি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট