চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজার মন্দা

কেন এমন পরিস্থিতি ? ‘এ ক্ষেত্রে বড় সমস্যা তৈরি করেছে ব্যাংক ও অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থায়ন সীমিত করে দেয়া’

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৯ মে, ২০১৯ | ২:৩২ পূর্বাহ্ণ

প্রতিবছর ঈদের আগে ঠিক এ সময়টাতে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ব্যবসা হয় জমজমাট। বাজেট সামনে রেখেও প্রচুর গাড়ি বিক্রি হয়। কিন্তু এবারে পরিস্থিতি অন্যরকম। নিদারুণ মন্দা বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স এন্ড ডিলারস এসোসিয়েশন ( বারভিডা ) সেক্রেটারি জেনারেল হাবিবুর রহমান জানান, বিগত বাজেটে রিকন্ডিশন্ড ও নতুন গাড়ির মধ্যে যে শুল্ক বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে তার জেরে ক্রেতারা কিছুটা ঝুঁকে পড়েছেন নতুন গাড়ির দিকে। কারণ নতুন গাড়ির তুলনায় ব্যবহৃত গাড়ির দাম বেশি। তাই বাজেটের পর থেকে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজার মন্দা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তবে, এখনও যতটুকু ব্যবসা রয়েছে সেটা জাপানি রিকন্ডিশন্ড গাড়ির গুণগত মানের কারণে। নতুন ও রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানিতে শুল্ক বৈষম্য প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, টয়োটা রাশ ১৪৯৬ সিসির নতুন গাড়িতে ডিউটি ১৫,৮৯,০০০ টাকা। আর টয়োটা রাশ-২০১৮ ব্রান্ডের ১৪৯৬ সিসির গাড়িতে ডিউটি ১৮,০৬,০০০ টাকা। নতুন গাড়ির তুলনায় রিকন্ডিশন্ড গাড়িতে ডিউটি ২ লাখ ১৭ হাজার টাকা বেশি। নিশান আরভান ( মাইক্রোবাস ), টয়োটা ইয়ারিস, টয়োটা করোলা, হাভাল এইচ টু, মিৎসুবিশি আউটলেন্ডার, নিশান এক্স-ট্রেইল ফোর ডব্লিউডি’র ক্ষেত্রেও অধিক শুল্ক । রিকন্ডিশন্ড গাড়িতে বছরভিত্তিক অবচয় প্রথার পরিবর্তে কনসোলিডেটেড প্রথা চালু হলে এই বৈষম্য দূর হবে বলে জানান তিনি। দেশে সড়কপথের অবস্থা অনেক ভাল আগের তুলনায়। হরতাল, রাজনৈতিক অস্থিরতাও নেই। তাই প্রচুর চাহিদা গাড়ির। কিন্তু চাহিদা থাকলেও বিক্রি নেই। এ ব্যাপারে নগরীর এক ব্যবসায়ী জানালেন, ইতিপূর্বে প্রতিমাসে তাদের চট্টগ্রামের শোরুম থেকে ১৫/২০ ইউনিট গাড়ি বিক্রি হতো। বর্তমানে ৫ ইউনিট বিক্রিতেও হিমশিম খেতে হয়। কেন এমন পরিস্থিতি? কারণ হিসেবে বললেন, নয়া ও ব্যবহৃত গাড়ির মধ্যে শুল্ক বৈষম্যের কারণে দামের বিষয়টি একমাত্র কারণ নয়। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সমস্যা তৈরি করেছে ব্যাংক ও অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থায়ন সীমিত করে দেয়া। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিধি নিষেধ এবং তারল্য সংকটে একেবারে কমে গেছে গাড়ি কেনায় ঋণের পরিমাণ। ফলে অস্বাভাবিক মন্দা নেমে এসেছে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির ব্যবসায়। বারভিডা সূত্রে জানা যায়, দেশে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানিকারক রয়েছে ৪ শতাধিক। শোরুম

রয়েছে কমপক্ষে ৩৫০। চট্টগ্রাম, ঢাকা, গাজিপুর, কুমিল্লা, খুলনা, সিলেট এবং অন্যান্য স্থানে এসব শোরুম। গত অর্থ বছরে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি বিক্রি হয়েছে ২৩,১০২ ইউনিট। আগের অর্থবছরে ( ২০১৬-২০১৭ ) বিক্রি হয়েছিল ২০,১৪৯ ইউনিট।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট