চুরির অপবাদে গাছে বেঁধে এক স্কুলছাত্রকে নির্যাতন করা হয়েছে গাংনী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের কড়ুইগাছি গ্রামে। নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্রের নাম রাব্বি হাসান (১৫)। অপমান সইতে না পেরে রাব্বী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
রাব্বি হাসান ওই গ্রামের চিনিরউদ্দীনের ছেলে। সে স্থানীয় কেএবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিলো। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে রাব্বি নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
গাছে বেঁধে শারীরিকভাবে নির্যাতন এবং পরে সালিশের নামে অপমান ও জরিমানাকারীদের বিরুদ্ধে গাংনী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে রাব্বির বাবা চিনিরউদ্দীন।
স্থানীয়রা জানান, কেএবি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রায়পুর মধ্যপাড়া গ্রামের কছিমউদ্দীনের একটি চায়ের দোকানে সম্প্রতি সিগারেট ও বিষ্কুট চুরি হয়। ওই সিগারেট চুরির বিষয়ে রাব্বি ও তার বন্ধু ঝোরপাড়া গ্রামের এনামুলের ছেলে জনিকে দোষারোপ করে দোকানদার কছিম উদ্দীন। এ নিয়ে দোকানদার কছিম উদ্দীন ও রায়পুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার নকিমউদ্দীনের ছেলে হুদা তাদের দুই বন্ধুকে মঙ্গলবার সকালে দড়ি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারপিট ধরে।
পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান ওরফে হনা ও গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাসান রাজা সেন্টু একটি সালিসের মাধ্যমে রাব্বি ও তার বন্ধু জনিকে ৫ হাজার টাকা করে সর্বমোট ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এ নিয়ে ক্ষোভে, দুঃখে, অপমানে, অভিমানে মঙ্গলবার দুপুরে রাব্বি আত্মহত্যা করে।
রাব্বির বাবা চিনিরউদ্দীন ও মা আনজিরা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে ও তার বন্ধু জনিকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গাছে বেঁধে মারপিট করে জরিমানা করেছে। আমার ছেলে এ অপবাদ সহ্য করতে না পেরে সকলের অজান্তে আত্মহত্যা করেছে। আমার ছেলেকে আত্মহত্যা করতে প্ররোচনাকারী ও নির্যাতনকারীদের বিচার চাই। এই ঘটনায় আব্দুল হান্নান ওরফে হনা মেম্বর, হাসান রেজা সেন্টু, নকিমউদ্দীনের ছেলে হুদা, আবুবকরের ছেলে মিনাজ, মোস্তফার ছেলে ডাবলু, দোকানদার কছিমউদ্দীনসহ আরও কয়েকজনের নামে গাংনী থানায় মামলা করেছি।’
গাংনী থানার ওসি হরেন্দ্রনাথ সরকার (পিপিএম) জানান, এ ঘটনায় ইতিমধ্যে হত্যা মামলা হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে।