চট্টগ্রাম বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

সংসদকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের নিবিড় পর্যবেক্ষণে ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

২৭ জানুয়ারি, ২০২০ | ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

ভারতের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন এবং এর জের ধরে সৃষ্ট বিতর্কের ব্যাপারে ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি বাংলাদেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন। সীমান্তে উদ্বেগজনক কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সীমান্ত ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

গতকাল রাতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) অসীম কুমার উকিলের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একথা জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। গতকালের প্রশ্ন ও উত্তর সদস্যদের টেবিলে উপস্থাপিত হয়েছে বলে বিবেচনা করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতীম প্রতিবেশী দেশ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান অনস্বীকার্য। ভারতের সঙ্গে আমাদের প্রতিবেশীসুলভ সুসম্পর্ক অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি ভারত সরকার তাদের নিজস্ব পলিসি অনুযায়ী বিভিন্ন প্রদেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও এনআরসি পরিকল্পনা নিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার সিএএ-কে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে মনে করে। একইভাবে বিলটিকে ঘিরে গড়ে ওঠা বির্তককে ভারতের ঘরোয়া রাজনীতির অংশ হিসেবে দেখা যেতে পারে। ভারত সরকার তার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়ার সময় প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের সঙ্গে তাদের দৃঢ় পারস্পরিক বিশ্বাস, সৌহার্দ্য ও বোঝাপড়ার প্রতি পূর্ণ মনোযোগ দেবে। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এ ব্যাপারে ভারতের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

বাংলাদেশ এনআরসি (জাতীয় নাগরিকপঞ্জি) ইস্যুকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় মনে করে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এনআরসি ইস্যুতে বাংলাদেশের ওপর কোনও অযাচিত প্রভাব পড়বে না, সে নিশ্চয়তা ভারত সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে বাংলাদেশ সরকারকে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সীমান্তে অবৈধ গমনাগমন, চোরাচালান প্রতিরোধসহ সীমান্তবর্তী অপরাধ দমনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সর্বদাই সীমান্তে কড়া নিরাপত্তা গ্রহণ করে থাকে। তবে আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি সীমান্ত সংক্রান্ত অপরাধসহ যে কোনো ধরনের বৈআইনি কর্মকা- প্রতিরোধে সদা সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থায় রয়েছে। উদ্বেগজনক কোনও পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সীমান্ত ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে যাতে ভারত থেকে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর অধিনস্থ রিজিয়ন/সেক্টর/ ব্যাটালিয়ন সদস্যরা সীমান্তবর্তী এলাকায় টহল জোরদারসহ গোয়েন্দা ও সার্বক্ষণিক নজরদারি করে চলেছে। একইসঙ্গে সীমান্তের আট কিলোমিটারের বাইরেও প্রয়োজনে টাস্কফোর্স এর মাধ্যমে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়ে থাকে।

মন্ত্রী বলেন, সীমান্ত রক্ষা তথা চোরাচালান প্রতিরোধে সীমান্তে ৬৯৭টি বিওপি নির্মাণ করা হয়েছে। বিওপিগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে নজরদারি বাড়ানোর লক্ষ্যে এ পর্যন্ত ১২৮টি বর্ডার সেন্ট্রি পোস্ট (বিএসপি) তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধে স্থানীয় জনগণের মধ্যে প্রয়োজনীয় জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিজিবি নিয়মিত কাজ করে চলেছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট