চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের

বহিরাঙ্গন শিশুতোষ নাটকের ধারণ শুরু

তসলিম খাঁ

৯ নভেম্বর, ২০১৯ | ৩:৫৮ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উদ্যোগে বহিরাঙ্গনে শিশুতোষ নাটকের ধারণ শুরু হয়েছে। গত ২১ অক্টোবর হতে সার্সন রোড পাহাড়ের মনোরম দৃশ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের বহিরাঙ্গনে শিশুতোষ নাটকের ধারণ কার্যক্রম শুরু হয়। নাটক পরিবেশন করে কিড্স কালচারাল ইন্সটিটিউট। পরিবেশিত হয় নাটক : ইচ্ছেঘুড়ি ও যাদুর পাঠশালা। ইচ্ছেঘুড়ি (রচনা ও নির্দেশনা : ড. সৌরভ শাখাওয়াত, সহ নির্দেশনা : মাসউদ আহমেদ, প্রযোজনা : অরিন্দম চৌধুরী বিংকু ) ও যাদুর বেহালা (রচনা : উপেন্দ্রৃকিশোর রায় চৌধুরী নাট্যরূপ: অসীম দাস নির্দেশনা : ড. সৌরভ শাখাওয়াত) ধারনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের গুনগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের এ উদ্যোগ। ইচ্ছেঘুড়ি নাটকে অভিনয় করে কিড্স কালচারাল ইন্সটিটিউট এর ক্ষুদে অভিনেত্রী সহস্রাব্দী, শতাব্দী, তন্ময়, সৌহার্দ্য, নদী, সানজিদা, ¯েœহা,শুভ্র, জিলান, আবরার, অর্ক, ফারাহ, সীমা, মাসউদ ও শুভ। যাদুর বেহালা নাটকে অভিনয় করে নদী, সহস্রাব্দী, তিশা, ¯েœহা ,শুভ্র, জারিফ, তন্ময়, জিসান ও শতাব্দী।

দুরন্ত দুপুর। নীল আকাশ। আকাশে অনেক ঘুড়ি- সবুজ, লাল,নীল, বেগুনী, হলুদ, বাদামী, গোলাপী। অপলক চোখে তাকিয়ে ঘুড়ির খেলা দেখে নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র মতিঝর্না বস্তির শ্রমজীবি দুরন্ত কিশোর ফকির। একটা ব-কাট্টা পাংখিল ঘুড়ি লেজুড় তুলে লুটোপুটি খায় ঘুড়ির মেলায়। তারপর নীল পাহাড় পেরিয়ে কাঁটাবনে ঘুড়িটা ধরা পড়ে ফকিরের মুঠোয়। আনন্দে ‘হুররে’ বলে ফকির নেচে নেচে গান গায় আর ঘুড়ি ওড়ায়।
ফকির রেল স্টেশনে কুলির কাজ করে। বাবা নেই, মায়ের আঁচলে বেড়ে ওঠে সে। মা বড়লোকের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে। মায়ের অসুখ বলে আজ মন ভালো নেই ফকিরের। রেল স্টেশনে কুলির কাজ করে যা পেয়েছে তাতে আধসের আটাও কেনা যাবে না। তাই এক বড়লোকের বাড়িতে ঢকে পড়ে-যদি কিছু খাওয়া পায়। ঢুকেই দেখা পায় বড়লোকের প্রতিবন্ধি ছেলে হাবলুর সাথে। হাবলু বাসায় একা কাজের মেয়ের সাথে থাকে। বাবা মা দু’জনেই সারাদিন অফিসে ব্যস্ত থাকে। কাজের মেয়ে মোবাইলে টাকা রিচার্জ করেতে গেলে হাবলু ঘরের দরজায় আসে। ফকিরের আকুতিতে সে আটা, জামা কাপড় উপহার দেয়।

যাদুর বেহালা নাটকে বেচারাম কেনারাম নাটকে গৃহকর্মে নিয়োজিত পিতৃমাতৃহীন শিশু কেনারাম। হাড়কিপটে গৃহকর্তার বাড়িতে কাজ করে আসছে দশ বছর ধরে। কোন মাইনা মেলেনি। ষোল বছর পূর্ণ হতেই কেনারাম সিদ্ধান্ত নেয় যে, সে আর এ মনিবের অধীনে কাজ করবে না। তাই মাইনা চাইতেই মনিবের কানে কম শোনার ব্যামো। তাই পত্র লিখে জানিয়ে দেয় তার আবেদন। মনিব বাধ্য হয়ে হিসাব নিকাশ করে পাওনা বুঝিয়ে দেয় কেনারামকে। কেনারামের খুশি দেখে কে? পথেই দেখো হয় ঈশ্বরের দূতের সাথে। তিনি খুশি হয়ে তাকে একটি যাদুর বেহালা উপহার দেয়। যাদুর বেহালার সুরে শিশু কেনারামের প্রতি অবহেলা আর মিথ্যে অপবাদ প্রমাণিত হয়। যাদুর বেহালার সুরে সুরে সকল নিপীড়নের অবসান হয়ে সত্যের জয় শেষে। নাটকের শিক্ষায় জানা যায় শিশুদের ভালবাসতে হবে-সকল শিশুকে নিজের শিশুর মতো সমান চোখে দেখতে হবে।

আগামী নভেম্বর মাস হতে শুরু হবে ছোটদের ধারাবাহিক নাটক : ইচ্ছেবুড়ির কিচ্ছে। নাটকের রচনা ও নির্দেশনা : ড. সৌরভ শাখাওয়াত। প্রযোজনা: অরিন্দম চৌধুরী বিংকু। পরিবেশনায় কিড্স কালচারাল ইন্সটিটিউট এর নাট্যকলা বিভাগ : চিলড্রেন্স থিয়েটার ও ইউথ থিয়েটার স্কুলের শিল্পীরা। নাটকের প্রযোজক অরিন্দম চৌধুরী বিংকু কলকাতার শান্তি নিকেতন হতে পড়াশুনা শেষে বাংলাদেশ টেলিভিশন এ যোগ দেন। বড়দের নাটকের পাশাপাশি ছোটদের নাটকের ধারনে তার অক্লান্ত শ্রম ও নিষ্ঠা আর কিড্স কালচারার ইন্সটিটিউট এর ২৬ বছরের ধারাবাহিক শিশুতোষ নাট্যচর্চার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মানসম্মত ছোটদের নাটক উপহার দেবে বলে আশা করা যায়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট