চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

বড়মাপের অভিনেত্রী হতে চান জ্যোতিকা জ্যোতি

শাকিল চৌধুরী

৯ নভেম্বর, ২০১৯ | ৩:৫৮ পূর্বাহ্ণ

কলকাতার পরিচালক প্রদীপ্ত ভট্টাচার্যের ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’ ছবির মাধ্যমে টলিউডে অভিষেক হচ্ছে বাংলাদেশি মডেল ও অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতির। ছবিটি রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে নায়িকা জানান, এ ছবির জন্য নাকি দেড় বছর ধরে তিনি নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। উচ্চারণে মনযোগ দিয়েছেন, ক্ল্যাসিক্যাল নাচের তালিম নিয়েছেন।
পাশাপাশি জ্যোতিকা জ্যোতি এও জানান, একজন নারী শিল্পী হিসেবে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের তুলনায় কলকাতার ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে তিনি বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছেন। তার কথায়, ‘কলকাতায় সবাই পড়াশোনা জানা। এখানে টাইম ও শিডিউল মেনটেন করে চলা হয়। নারী শিল্পী হিসেবে এখানে সম্মানও অনেক বেশি।’

অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি ময়মনসিংহের গৌরীপুরের মেয়ে। কলকাতায় তার মামাবাড়ি। টলিউডের প্রথম ছবিতে কাজ করার সূত্রে ২৫ বছর পর তিনি মামাবাড়িতে গেছেন। ’ বাংলাদেশে দীর্ঘ কেরিয়ারের পর এবার কলকাতার ইন্ডাস্ট্রিতে জায়গা করে নিতে চান বলেও জানান তিনি।

কলকাতায় জ্যোতির প্রথম ছবি ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’তে তার নায়ক ঋত্বিক চক্রবর্তী। আরও আছেন রাহুল ব্যানার্জী। প্রথম ছবিতে ঋত্বিকের মতো একজন বড় মাপের অভিনেতা। নার্ভাস লাগেনি? জ্যোতির উত্তর, ‘প্রথম বার ঋত্বিকদাকে দেখে আকাশ থেকে পড়েছিলাম। এত বড় একজন তারকা কী করে এতটা সিম্পল হতে পারেন! কোনো ইগো নেই। তাই কাজের ক্ষেত্রে নার্ভাসও লাগেনি।’

অভিনেত্রী যোগ করেন, ‘ছবির কথাবার্তা শুরু হওয়ার পরে একদিন ঋত্বিকদাই আমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলেন। প্রথম প্রথম বিশ্বাসই করতে পারেননি। জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘এটা কি আপনার আসল আইডি?’ ঋত্বিকদা জবাব দিয়েছিলেন, ‘নকলরাও তো নিজেদের অরিজিনালই বলে।’ তার পরই বুঝেছিলাম, এটা ঋত্বিকদারই আইডি।’

সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতি ছোটবেলা থেকেই জ্যোতির বিশেষ দুর্বলতা। সেই দুর্বলতা থেকেই ময়মনসিংহ শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। তার স্বপ্ন ছিল একজন বড়মাপের অভিনেত্রী হওয়ার। ময়মনসিংহে একবার স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে নাটক নির্মাণ করা হলো। জ্যোতি অভিনয় করলেন। জ্যোতির অভিনয় দেখে একজন তাকে বললেন, ‘কবরী আয়না নামের একটি সিনেমা বানাবেন। যোগাযোগ করে দেখতে পারো।’ জ্যোতি যেন কিছুটা আশার আলো খুঁজে পেলেন। কবরী তাকে একটি চরিত্রের জন্য নির্বাচন করলেন। প্রথম সিনেমায় অভিনয় করে জ্যোতি নজর কাড়লেন অনেকেরই। টিভি নাটক ছাড়াও তিনি উপস্থাপনায় নিজের নাম লিখিয়েছেন। ২০০৪ সালে লাক্স-আনন্দধারা ফটোজেনিক প্রতিযোগিতায় সেরা দশে স্থান করে নিয়েছিলেন।

জ্যোতিকা জ্যোতির জন্মস্থান ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। তার লেখাপড়া ইংরেজি সাহিত্যে। আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স করেছেন জ্যোতি। ওই সময় যোগ দেন ময়মনসিংহের বহুরূপী থিয়েটারে। তবে এ নাট্যদলের হয়ে মঞ্চে ওঠার সুযোগ হয়নি তার।

২০০৫ সালে জ্যোতি অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র কবরী সারোয়ারের ‘আয়না’। এরপর মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত বেলাল আহমেদের ‘নন্দিত নরকে’ এবং তানভীর মোকাম্মেলের ‘রাবেয়া’। জ্যোতি অভিনীত প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটির নাম ছিল ‘ব্রেক আপ’। ২০১০ সালের শুরুর দিকে ‘ব্রেক আপে’ অভিনয় করেছিলেন তিনি। অনন্ত হীরার ‘স্বপ্নের পাঠশালা’ জ্যোতির প্রথম টিভি নাটক। তবে আলোচনায় আসেন ‘মাহনা’ধারাবাহিকে অভিনয় করে। জ্যোতি অভিনীত কিছু ধারাবাহিক নাটকগুলো হচ্ছে পালাবার পথ নেই, কলেজ রোড, আপন আপন খেলা, রঙিলা এবং গৃহদাহ। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এটিএন বাংলার জন্য ‘ভ্যালেন্টাইন স্পেশাল কমেডি আওয়ার’ নামের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উপস্থাপনায় যাত্রা শুরু করেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট