চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

কণ্ঠের যাদুতে আকাশ ছুঁতে চান রনি রোজালিন

হুমায়ুন কবির কিরণ

৭ মার্চ, ২০২০ | ১:৫৯ পূর্বাহ্ণ

এস আই টুটুলকে আলাদা করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। কিন্তু রনি রোজালিন, ২০১৭ সালে ইউটিউবে যখন দু’জনের ‘জানে জানে খোদা’ গানটি রিলিজ হয় তখন সঙ্গীতপ্রিয়রা কিছুটা চমকে উঠেন। সুন্দরী রনি রোজালিনের প্রাণবন্ত গায়কীর সাথে সুরেলা কণ্ঠ আর এস আই টুটুলের মোহনীয় উপস্থাপনা ‘জানে জানে খোদা’ গানটিকে দ্রুতই শ্রোতামহলে পৌঁছে দেয়। প্রথম লুকেই এলেন দেখলেন আর জয় করলেনের মতো প্রেক্ষাপট তৈরি করে ফেলেন রনি। এরপর আর থেমে থাকেননি। সর্বশেষ ভালোবাসা দিবস উপলক্ষ্যে ৪ফেব্রুয়ারি লেজারভিশন থেকে রনি রোজালিনের সাম্প্রতিক ক্রেজ গান ‘মারিস কেন চোখ’ রিলিজ হয়। ইউটিউবে গানটি প্রকাশের পর থেকেই রনি’র জনপ্রিয়তা বাড়তেই থাকে। ইদানিং বিভিন্ন স্টেজ শো’তে চট্টগ্রামের তরুণীর প্রাণবন্ত উপস্থিতি সঙ্গীত পিপাসুদের নজর কাড়ছে।

মুসলিম পরিবারে জন্ম রেনি রোজালিনের বাবা ইকবাল মাহমুদ, গৃহিণী মা, ছোট বোন রুপা রোজালিন আর একমাত্র ভাই-এ নিয়েই পরিবার। বাবা ইকবাল মাহমুদ একাধারে সুরকার-গীতিকার, ছোট বোন রুপাও স্ব-পরিচয়ে গানের জগতে নিজের একটি স্থান তৈরি করে নিয়েছেন। বাবার গানের সূত্র ধরে ছোটবেলা থেকে আলাদা একটি পরিবেশ পেয়েছেন রনিরা। সেই সূত্রেই সঙ্গীতের সাথে তাদের সখ্যতা।
সম্প্রতি কথা হয় রনি রোজালিনের সাথে। আলাপচারিতায় রনি গানের জগতে নিজের ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের কথা থেকে শুরু করে অনেক কিছুই বলেন। জানালেন সঙ্গীতের প্রাথমিক পাঠটা পরিবার থেকেই পেয়েছেন। বাবা ইকবাল মাহমুদ চট্টগ্রামের অনন্ত মিউজিক্যাল গ্রুপের কর্ণধার। তার বন্ধুরা প্রায়শই তাদের চকবাজারের বাড়িতে আসতেন। বাবার বন্ধুদের একজন বাবুল আচার্য্য। মাত্র ৬বছর বয়সেই তাঁর কাছেই শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নেওয়া শুরু রনি রোজালিনের। এরপর ওস্তাদ সুরবন্ধু অশোক স্যার ও দোলন সাহার কাছ থেকেও তালিম নেন তিনি। স্মৃতির পাতা হাতড়ে জীবনের প্রথম স্টেইজ শো’র প্রসঙ্গে রনি রোজালিন বলেন, ২০০৬ সালের দিকে যখন আমার বয়স ১১, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী, তখন থার্টি ফাস্ট নাইটের এক প্রোগ্রামে বাবার সাথে যাই। অনুষ্ঠানে সেদিন কণ্ঠশিল্পী পাওয়া যাচ্ছিলো না। বাবার আমাকে গাইতে বললেন। আমিও সাহস করে স্টেইজে উঠে যাই। সবাই সেদিন আমার গান শুনে প্রশংসা করেছিল। এমনও হয়েছিল তারা আমাকে একের পর গান গাইতে বাধ্য করেছিল এবং আমি স্টেইজ থেকে নামতেই পারছিলাম না। সে অনুষ্ঠান শেষে গানের প্রতি আমার আলাদা একটা মোহ তৈরি, নিজেকে এই পরিম-লে সঁপে দেওয়ার পণ করি। সেই থেকে গান করে যাচ্ছি। প্রায় সব রকমের গান করার অভ্যাস আছে রনির। আমরা যারা স্টেইজ প্রোগ্রাম করি, প্রতিটি দর্শকের মন জয় করতে হয় আমাদের। যেমন বিভিন্ন শো’তে দর্শকরা ভা-ারি, আধুনিক, হিন্দি, গজল, দেশাত্মবোধক, ইংরেজি গানের অনুরোধ করে। দর্শককে খুশি করতে আমাদের ঐ গান করতে হয়। তবে যদি আমার ব্যক্তিগত পছন্দের কথা বলা হয়, তাতে আধুনিক গানেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।

রনি রোজালিন এখন স্বপ্ন দেখেন সঙ্গীত জগতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার। স্টেইজ শো’র পাশাপাশি গান করতে চান চলচিত্রসহ সব জায়গাতেই। বাবা ইকবাল মাহমুদ জানালেন, রনির জন্য বেশ কয়েকটি চলচিত্রের গানের অফার আছে, আসছে আরও। গানের কথা ও ছবির প্রেক্ষাপট পছন্দ হলেই রনির ভক্তরা চলচিত্রে তার কণ্ঠ পাবে। রনি যোগ করলেন, এ বছরই তিনি ৬টি গান নিয়ে সিডি আকারে একটি এ্যালবাম বাজারে ছাড়বেন। এরইমধ্যে তিনটি গান তৈরি হয়ে গেছে বলে জানালেন তিনি। অ্যালবামে আধুনিক-এর সাথে ফোক গানও থাকবে বলে জানান তিনি। চট্টগ্রামের বোয়ালখালি থেকে উঠে আসা রনি রোজালিন এই অ্যালবামের মাধ্যমে নিজের পরিচিতিকে আরও পোক্ত করতে চান। তার স্বপ্ন পরিধি আরও বিস্তৃত। শুধু গানই নয়, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত নারী উদ্যোক্তা হিসাবেও দেখতে চান তিনি। ভালো প্রস্তাব পেলে মডেলিংসহ অভিনয় জগতেও প্রবেশের ইচ্ছা আছে রনি রোজালিনের। ব্যবসার পাশাপাশি সমাজসেবা মুলক কাজেও নিজেকে বিলিয়ে দিতে চান চলতি সময়ে গানের জগতে চট্টগ্রামের ক্রেজ রনি রোজালিন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট