চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কণ্ঠসৈনিক প্রবাল চৌধুরী সঙ্গীত একাডেমি’র হারমোনি

যীশু সেন

৭ মার্চ, ২০২০ | ১:৫৯ পূর্বাহ্ণ

দেশের সংগীতাকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, চট্টগ্রামস্থ রাউজান থানা বিনাজুরী গ্রামের পিতা স্বর্গীয় মনমোহন চৌধুরীর সন্তান কণ্ঠ শিল্পী প্রবাল চৌধুরী। ষাট দশক থেকে শুরু করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সঙ্গীত সাধনায় থেকে দেশের সংগীতাঙ্গনকে করেছে সমৃদ্ধি। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক প্রবাল চৌধুরীর গান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনীকে যেভাবে যুগিয়েছিল সাহস, ঠিক তেমনি ভাবেই আগামী প্রজন্মের মাঝেও তিনি বেঁচে থাকবেন শ্রদ্ধার সাথে, তার অসংখ্য গানে। তার অবদান বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে এক অনস্বীকার্য ভূমিকা রেখে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় তার সুযোগ্য সন্তান শিল্পী তাপস চৌধুরী তার বাবার নামে ‘কণ্ঠসৈনিক প্রবাল চৌধুরী সঙ্গীত একাডেমি’ প্রতিষ্ঠা করে সংগীতের ধারাটি বহমান রেখে চলেছে। তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই। রয়ে গেছে তার কীর্তি যা সঙ্গীত পিপাসু মনের তৃষ্ণা মেটাবে যুগযুগ ধরে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক প্রবাল চৌধুরী সংগীত একাডেমি’র ১ম আয়োজন ‘হারমোনি’ স্মারক সম্মাননা ও সংগীত সন্ধ্যা, গত ২১ জানুয়ারি ২০২০ খ্রি. বৃহস্পতিবার, সন্ধ্যা ৬ টায় চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন- স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক সুজিত রায়। বরেণ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেনÑ বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী তপন চৌধুরী, প্রধান অতিথি ছিলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ। বিশেষ অতিথি ছিলেনÑচট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২১নং জামাল খান ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন। গীতিকারদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন- দিলীপ ভারতী ও পংকজ দেব অপু। অনুষ্ঠানে একক সংগীত পরিবেশন করেন- ‘কি হবে কাঁদে আর’ সুতপা চৌধুরী মুমু, ‘জীবনের বৃন্তে’ স্বস্তিকা দাশ, ‘তোকে রাঙা মন’ প্রীতম ভট্টাচার্য্য, ‘তুমি রাঙা সকাল’ প্রিয়া চক্রবর্তী, ‘কার লাগিয়া’ আলাউদ্দিন তাহের দ্বৈত সঙ্গীত পরিবেশন করেনÑ‘জীবনের সব’ সৌরভ রায়, নিপা চৌধুরী, ‘সে এখন ঘুম’ কেয়া লাহিড়ী, ‘আঙুল ছোঁয়া’ পাপড়ী ভট্টাচার্য্য, ‘কি সুরে ডাকি’ শম্পা, ‘জানি তুমি আমার’ মধুলিকা ম-ল, ‘আকাশ তলে’ মৌমিতা বড়–য়া, ‘ভালোবাসা তোমাকে’ নাবিলা, ‘আমি আকাশের নীল’ রঞ্জন চৌধুরী, ‘আমার মনে কিছু’ সাইফুদ্দিন মাহমুদ খান,‘ওরে ও কাজল চোখ’ নিখিলেশ বড়–য়া, ‘দেখো এ মনটা পড়ে’ সন্দীপন দাশ, ‘যদি আষাঢ় ডাকে’ মৌমিতা বড়–য়া, ‘লাল সবুজের পতাকা’ সহদেব।
সুর ও সংগীত পরিচালনায় ছিলেনÑশিল্পী তাপস চৌধুরী, যন্ত্রানুষঙ্গে ও সংগীত আয়োজনে- সব্যসাচী। গানের গীতিকার ছিলেন- জি. কে. দত্ত, এস. আনিস আহমদ বাচ্চু, মো. ওবায়দুল্লাহ, পংকজ দেব অপু, ইসমাইল মানিক, দিলীপ ভারতী, প্রদীপ দাশ পরাগ, তাপস আচার্য্য, অনুপ বড়ুয়া, প্রবীর দত্ত, পংকজ চৌধুরী, সুশান্ত বড়ুয়া ও হুমায়ুন চৌধুরী। সঞ্চালনায় ছিলেন- মিলা নোভা। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক শিল্পী তপন চৌধুরী তিনটি গানের মুখ গেয়ে শুনান। এটি দর্শকদের কাছে একটি বাড়তি আকর্ষণ ছিল। শিল্পী তপন চৌধুরী বলেন-অন্যের গাওয়া গান গেয়ে নয় মৌলিক গান গেয়ে একজন শিল্পীর দক্ষতা প্রমাণ করতে হবে। শুধু ভালো শিল্পী নয় পাশাপাশি একজন ভালো মানুষও হতে হবে। পরিশেষে কণ্ঠসৈনিক প্রবাল চৌধুরীর সুযোগ্য পুত্র সঙ্গীত পরিচালক শিল্পী তাপস চৌধুরী বলেনÑআমার বাবার সৃষ্টিগুলো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আমার এই সংগীত একাডেমী প্রতিষ্ঠা করা। এ সংগীত একাডেমীর মাধ্যমে ভবিষ্যতের কিছু ভালো অনুষ্ঠান পরিচালনা করার ইচ্ছা আমার আছে। সেই উদ্দেশ্য আজকের এই সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজন করা। আজ এই অনুষ্ঠান করার পিছনে যারা আমাকে সহযোগিতা করেছেন তাদের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। অনুষ্ঠান সমাপ্তি করার আগে শিল্পী তপন চৌধুরীর হাতে ফুলের তোড়া ও সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন সংগীত পরিচালক শিল্পী তাপস চৌধুরী, শিল্পী সুজিত রায় এবং অতিথিবৃন্দ। সুন্দর আয়োজনে পুরো অনুষ্ঠানস্থল জুড়ে ছিল দর্শকের সমাগম।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট