চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

অভিমত ওমর কায়সারের অস্তিত্ব সংকটের কাব্য আমিহীন

শোয়েব নাঈম

২৪ জানুয়ারি, ২০২০ | ৮:০৯ পূর্বাহ্ণ

“কখনো কখনো ছায়া কি দূরে সরে যায়? খুঁজে পাওয়া যায় না তাদের? মানুষ কি আসলেই সবসময় তার ছায়ার সঙ্গে থাকে? আমি জানি না…. ‘আমিহীন আমার ছায়াগুলো’…”—- কবি ওমর কায়সারের প্রকাশিতব্য কাব্যগ্রন্থের এসব কাব্যিক প্রতিশ্রুতির তাঁরই কথকতা, পাঠককে উদ্দেশ্য করে বোধের অর্থযুক্তিতে নিজগ্রন্থ সম্পর্কে এভাবেই তিনি উক্তিগুলি করেছেন।
বিদ্যমান আমিত্ব থেকেই কবিত্ব, সেই কবিত্ব থেকেই তুমিত্ব সৃষ্টি, এভাবেই কবিতায় সর্বনামের বিস্তৃতি ঘটিয়ে আমি-তুমি সান্নিধ্যে এই দুইয়ের সত্তায় কবি দ্বিবচনাত্মক দ্বন্দ্বে এক শূন্যতাবোধে নিষ্প্রতিভ ‘আমিহীন’ হয়ে পড়েন। দুজনের ব্যক্তি-নাম থাকা সত্ত্বেও পারস্পরিকতার কাব্য একটি যুগল সর্বনাম কবিতার গ্রন্থে যুগ্মপরিচয়ে বিস্তৃতি পায়। উপলব্ধিগত বোধে উত্তম পুরুষ সর্বনামে সত্তামান ‘আমি’ ফিরে পেতে কবি তখন অভেদ্য অস্তিত্ব সংকটে বিজড়িত হয়ে পড়েন। কবি ওমর কায়সারের গ্রন্থ ‘আমিহীন আমার ছায়াগুলো’ কাব্য নামকরণের প্রথম শব্দ ‘আমি’ সর্বনামের সাথে বিশেষণ ‘হীন’ যুক্ত করে ‘আমিহীন’ ধারণাটি ‘বাক্যপদীয়’ পরিভাষায় ‘প্রত্যক্তা’ ও ‘পরভাব’ আখ্যান সৃষ্টি হয়েছে। ‘প্রত্যক্তা’ বলতে ব্যক্তিমানসের সেই বৈশিষ্ট্য বুঝায় যখন একজন মানুষ সম্পূর্ণ আত্মমুখী হয়ে নিজেকে জানার লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। গ্রন্থের এই নামকরণধর্মী এক কাব্যজিজ্ঞাসাতে কবি ওমর কায়সার তাঁর অস্তিত্ব সংকটকে প্রচ্ছদে নামপ্রদান করে কাব্যিক চিত্রকল্পে আলোকপাত করেছেন। নিজের ছায়ার বিম্বিত প্রতিকৃতিকে দ্বিতীয় আমিকে ‘আমার’ এই পরভাবে নিজের অস্তিত্বকে অনুভব করছেন। কিন্তু কবি পরভাবে আমি, তুমি ও অন্যান্য অবমিশ্র সর্বনামগুলিকেও ‘ছায়াগুলো’ এই অপরত্ব বহুবচনীয় নামকরণেও চিহ্নিত করেছেন। এসব অবমিশ্র সর্বনামগুলি থেকে নিজেকে আলাদা করার তাগিদে আর আমিত্বের অস্থিরতাই এই গ্রন্থ নামজারিতে কবিকে সাহিত্যের এক বনিয়াদি মর্যাদা দিয়েছে।

শেয়ার করুন