চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

ক্ষুধা

মোহাম্মদ হোসেন

৪ অক্টোবর, ২০১৯ | ১:৩৬ পূর্বাহ্ণ

ক্ষুধার জ¦ালায় সুধা পালায়। এ বড় মেদহীন নির্মম কথা। সোহেল ও মনিকা এখন প্রতিদিন প্রতি পলে পলে পান করে চলেছে সুধাহীন জীবনের নিমতেতো রস। প্রেমের বিয়ে তাদের। দুই পরিবারের একটা প্রাণীও তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি, বিয়েতে মত দেয়নি। তাই বলে কি দীর্ঘ তিন বছরের সম্পর্ককে ওরা কলাগাছের ভেলায় হেলাফেলায় ভাসিয়ে দেবে? একদিন সোহেল বলল মনিকাকে আড়ালে ডেকে নিয়ে, ‘আমরা এক আছি, এক থাকুম। পৃথিবীর কোন শক্তিই আমাগরে দুই করতে পারব না। চল আমরা পালাইয়া যাই।’ কথাটা খুব মনবান্ধব ঠেকে মনিকার কাছে। পরদিন চোখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে সকলের চোখকে ফাঁকি দিয়ে এবং চির-আপনকে চিরপর করে দিয়ে বেরিয়ে পড়ে এই কপোত-কপোতী রাতের অন্ধকারে অনিশ্চয়তাকে সঙ্গী করে। আপনজনদের মতের প্রতিকূলে গিয়ে তারা দুই দেহ এক করেছে, দুই মন এক করেছে। আজীবনের সঙ্গী হয়েছে একে অপরের। হয়েছে আত্মার আত্মীয়। সংসার পেতেছে আত্মীয় পরিজনদের নাগালের বাইরে গিয়ে দূর পাহাড়ের দেশে কোন এক মফস্বল শহরে। এবং হাতে হাত রেখে প্রেমের পরশ মেখে পণ করেছে, জীবনে চলার পথে যা কিছুই ঘটুক তারা ঝগড়া-কাজিয়ায় লিপ্ত হবে না, পরস্পরকে অসম্মান করবে না কোন অবস্থাতেই।

কোন এক বস্তির মত এলাকায় তারা ঘর ভাড়া নেয়। দুজনে দুই পরিবার থেকে টাকা স্বর্ণালংকার যা আনতে পেরেছে লুকিয়ে তাই দিয়ে শুরু করে যৌথ জীবন। সকালে নাস্তা সেরে কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে সোহেল। যাবার আগে ছলে বলে সে অনেক কথা বলে, আদর দেয় মনিকাকে। মনিকাও হেসে জবাব দেয় তার। সেই আমেজ আর ঘ্রাণ নিয়ে সারাদিন ঘরে একা থাকে মনিকা। সমস্ত কাজকর্ম সেরে সে বড় অধৈর্য হয়ে প্রতীক্ষায় থাকে সোহেলের। জানালার পাশে বসে দুই চোখে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে চেয়ে থাকে বাইরে পথপানে।

মাঝে মাঝে খেয়াল করে মনিকা, বাড়িওয়ালার দুটো লোভাতুর চোখ ওকে দেখছে, ওকে অনুসরণ করছে এখানে ওখানে। মনে হয় যেন চোখ দিয়ে লালা ঝরবে এখনই। তার কলেজ পড়ুয়া ছেলেটাও কম যায় না। রং-চটা জিন্সের প্যান্ট পড়ে সানগ্লাস লাগিয়ে শিস বাজায়, সিটি দেয়, গান ধরে ওকে দেখলেই, ‘তোরে পুতুলের মত করে সাজিয়ে, হৃদয়ের কোটরে রাখব…।’ বাপ-বেটার চেহারায় যেমন মিল আছে তেমনি আছে অদ্ভূত সাদৃশ্য তাদের শরীরের ভাষাতেও। ্এ কোন ভদ্রলোকের ভাষা নয়।
তবে এসবকে পাত্তা দেয়ার মেয়ে নয় মনিকা। দেয়ও না। সযতনে এড়িয়ে যায়। দেখেও না দেখার ভাণ করে ব্যস্ত থাকে নিজের কাজ নিয়ে। আর মনে মনে প্রেমের মালা গাঁথে শুধু সোহেলের জন্য। আর কারো জন্য আসন পাতা নেই সেখানে। সোহেল তার জান, সোহেল তার প্রাণ। সারাদিনমান সোহেলের জন্য মন করে আনচান।
একদিন খুশির বারতা নিয়ে হাজির হয় সোহেল। হাতে থাকে মিষ্টির প্যাকেট। প্রিয়তমাকে রসগোল্লা খাইয়ে দেয় প্রথমে। তারপর ওকে কাছে টেনে সুসংবাদটা শোনায়। কাছেই একটা ওয়ার্কশপে সে কাজ পেয়েছে। বেতন অবশ্য কম। তাতে কী? পেট তো মাত্র দুইখান। মোটামুটি চলে যাবে। খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়। সেদিন খুব আনন্দ করে দুজনে মিলে। রাতেও জেগে থাকে তারা। গল্পের ডুগডুগি বাজিয়ে রং ঢঙ তামাশা করে আদর-সোহাগের বজরায় চড়তে চড়তে পাড়ি দেয় রাতের দীর্ঘ প্রহর। চোখ খোলা রেখেই গায়ে মাখে কমনীয়তায় ভরা নরোম কোমল ভোরের আলো। সেদিন অনেক উথাল-পাথাল করে সোহেল ভালবাসার মানুষটিকে নিয়ে। তার পাগলামোতে ভারি আমোদ পায় মনিকা, আর হেসে লুটোপুটি খায়। বলে,এত পার তুমি! ওরা হাসি-আনন্দে বিভোর হয়ে থাকে। আর একটা দুশ্চিন্তার পাথর গড়িয়ে গড়িয়ে নেমে যায় তাদের দুজনার বুক থেকে। সঞ্জীবনী শক্তি পেয়ে তারা নব উদ্যমে শুরু করে সবকিছু।
আহা হা জীবন কত সুন্দর!

এদিকে কালের নিয়মে সময় বয়ে যায় পলপল করে। সোহেল ও মনিকা হাসিমুখে টেনে চলে তাদের আটপৌরে সংসারের ঘানি। অনেক স্বপ্ন অভিন্ন সুর-লয়-তালে খেলা করে তাদের চার চোখে। একদিন পাড়া-প্রতিবেশী অবাক হয়ে লক্ষ করে, বমি করছে মনিকা। তার দশ মাস পর তারা দেখে, একটা বাচ্চা হাসছে মনিকার মলিন কোল আলো করে। ওর সাথে হাসছে মা, হাসছে বাবা। ত্রয়ীর হাসির আলোয় আলোকিত হয় সংসার। এ দেখে কেউ কেউ আমোদিত হয়। আবার কারো বা চোখ টাটায়। বড্ড সুখের সময় ওদের। সুখ ও খুশি যেন আস্তানা গেড়েছে ছোট্ট ঘরটিতে।
তবে সাগরে জোয়ার যেমন আসে, আবার ভাটাও হয়। সবার কপালে সুখ সয় না চিরদিন।
হঠাৎ করেই একদিন পৌরকর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয়, প্রধান সড়কের দুই পাশের সব অবৈধ স্থাপনা তারা উচ্ছেদ করবে। সে অনুযায়ী শুরু হয় কাজ খুব দ্রুতই। বুলডোজার দিয়ে ভাঙার কাজ চলে প্রচুর সংখ্যক পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের পাহারায়। কারো কিছু করার ছিল না। অবশ্য প্রতিবাদ ও বাধা দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল। তবে সেটা বিস্তৃতি লাভ করতে পারেনি। এগোতে পারেনি বেশি দূর। রাবার বুলেট আর ব্যাটনের আঘাতে আহত হয়েছে। তারপর প্রাণ হারিয়েছে পুলিশের বুটের নিচে বেদম চাপা খেয়ে।
চাকরি হারিয়ে সোহেলের তো মাথায় হাত। আর মনিকা হয়েছে কাত। কী হবে এখন? ওর স্বপ্ন যে দুঃস্বপ্নের জাংগাল বরাবার পথ চলতে শুরু করেছে! পেটের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে দুই থেকে তিন। ছেলেটার এখন বেড়ে উঠার বয়স। নিজেরা কম খেয়ে বা না খেয়ে হলেও ওর জন্য ভাল-মন্দ কিছু জোগাড় করতে হয়। হাতে জমানো টাকা আছে খুব কম। সোনাদানাও যৎসামান্য। এ অবস্থায় বসে বসে খেলে তো থালা হাতে পথে নামতে হবে!

দিন যায় রাত যায়। কাজ তো আর মেলে না। অভাবের প্রভাব প্রাদুর্ভাব হয়ে ছড়িয়ে পড়ে তাদের দেহে মনে ও প্রেমে। হারাল মনের মিল, তার সাথে খুলে গেল খিল। ভালবাসাবাসির দিন শেষ। প্রেমের কারিশমা পরাহত। পাগলে আর মজা নেই, পিরিতে আর সুখ নেই। মিষ্টি কথায় আর মন ভিজছে না, পেট তো ভরছেই না। শুরু হয়ে যায় খিটিরমিটির, মনের অমিল, কথার অমিল। প্রশান্তির দিন গেছে। বইতে শুরু করেছে অশান্তির গরম হাওয়া। ভান্ডারের আয়ু শেষ। ধারকর্জও হয়ে গেছে বেশ কিছু। অশান্তির জ¦ালায় সোহেল এখন বাইরে বাইরেই সময় কাটায়। একান্ত দরকার না হলে ঘরমুখো হয় না।
রাতে যখন বাসায় ফেরে সোহেল তার হাত থাকে শূন্য। মনিকা খুশি হতে পারে এমন কোন কিছু থাকে না তার ঝুলিতে। সে নিজে খুশি হতে পারে এমন কোন দৃশ্য বা পরিস্থিতি ঘরে থাকে অনুপস্থিত। শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর ষন্ডা মেজাজে কথা কাটাকাটি, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। প্রথম প্রথম তারা পাড়া-প্রতিবেশীর ভয় করত, পাছে লোকে কিছু বলে এই ভয়ে ঝগড়া করত নিচু গলায় ফিসফিসিয়ে। এখন তারা ভয়কে জয় করেছে অসম সাহসে। লাজ শরম হায়ার মায়া ত্যাগ করতে পেরেছে। জড়তার ভড়ঙ কাটিয়ে উঠেছে। বড় গলায় পাড়া মাতিয়ে অপরজনকে আক্রমণ করতে কুন্ঠা অনুভব করে না আর। এমনকি শোনার অযোগ্য ভাষা প্রয়োগের ব্যাপারেও তারা এখন দ্বিধাহীন।
একমাত্র ছেলেটি চুপটি মেরে হা করে চেয়ে থাকে বাবা-মার দিকে। তাদের রণমূর্তি দেখে তার কচি মনে ভয়ের ভাব জেগে উঠে। কিছু বলতে পারে না। কান্না করতেও ভয় পায়। ঝগড়া যখন শেষ হয় মনিকা ছেলেকে বুকে নিয়ে শুয়ে পড়ে। আর চোখের পানি ফেলতে থাকে নীরবে। একবার ভাবে, এর মূলে আছে পাপ, বাবা-মায়ের অভিশাপ। তখন কান্নার গতি বেড়ে যায় ওর। ‘মাগো’, ‘বাবাগো’ বলে কাঁদতে থাকে ফুপিয়ে ফুপিয়ে। পেটে দানাপানি কিছু থাকে না বলে যন্ত্রণায় কাতরও হয়ে পড়ে। তারপর ঘুমিয়ে পড়ে একসময়।
ঝগড়া শেষের পর সোহেলও থাকে ক্লান্ত। খালি পেটে কত আর দাপাদাপি করা যায়। সেও তখন কাচুমাচু হয়ে শুয়ে পড়ে বিছানার একপাশে। ভাবতে থাকে কীভাবে কী করা যায়। ভাবনা আর শেষ হয় না। ভাবনার তল খুঁজে পায় না। তারই এক ফাঁকে সে হাত বাড়ায় ছেলের মাথায় হাত রেখে একটু আদর করবে বলে। সেটা আর হয়ে উঠে না। টের পেয়ে ঝামটা মেরে তার হাত সরিয়ে দেয় মনিকা। ছেলেকে নিজের আরও কাছে টেনে নেয়। আর বিরূপ মন্তব্য করতে থাকে গজরাতে গজরাতে।
সেদিন খাওয়ার কিছু নেই ঘরে, কিচ্ছু নেই। পয়সা-কড়ি সব শেষ। ছেলেটা ‘মা কী খামু’ ‘মা কী খামু’ বলে কান্নাকাটি করছে। সকাল থেকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে রাখা গেছে। আর তো পারা যায় না। কোনভাবেই শান্ত করা যাচ্ছে না। একসময় ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে সে। মায়ের মন অস্থির হয়ে পড়ে ছেলের এই করুণ দশা দেখে। মনিকার তখন পাগলপারা অবস্থা। কী করবে না করবে ভেবে পায় না। চোখের পানি ফেলতে ফেলতে একবার ঘরের বাইরে যায়। একবার ছেলের কাছে গিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে আকুলভাবে।

এমন অবস্থাতেই একটা বুদ্ধি খেলে মনিকার মাথায়। তখন সন্ধ্যাকাল। কান্নারত ছেলেকে ঘরে রেখে মাথায় ঘোমটা টেনে সে বেরিয়ে পড়ে। একটু দূরে আছে একটা ডাস্টবিন। পৌরসভার নিয়ন আলোতে সেখানে খাবার খুঁজতে থাকে বড্ড ব্যাকুল হয়ে। ওখানে কিছু না পেয়ে অস্থিরভাবে দৌড়ে গিয়ে হামলে পড়ে পরের ডাস্টবিনে। এভাবে চার পাঁচ জায়গায় হন্যে হয়ে খুঁজে একসময় পেয়ে যায় একটা প্যাকেট। অল্প কিছু বিরানী ভাত আছে সেখানে। আহা হা, এ যে সাত রাজার ধন, মানিক রতন। গুপ্তধন পাওয়ার মতন খুশি হয় মনিকা। আনন্দে চোখের কূল উপচে বেরিয়ে আসে অশ্রুজল। প্যাকেটটা আঁচলের আড়ালে লুকিয়ে রেখে দ্রুতলয়ে ফিরে আসে বাসায়। ছেলেকে খাইয়ে দিয়ে তারপর শান্ত হয় সে। ছেলেও শান্ত হয়। এবং একসময় মায়ের বুকে ঘুমিয়ে পড়ে প্রশান্ত মনে।

ঘুমিয়ে পড়ার পরও ছেলেকে বিছানায় শুইয়ে দেয় না মনিকা। বুকে জড়িয়ে রাখে। ওর মুখের দিকে চেয়ে হঠাৎ কান্না উথলে উঠে তার। খুব কাঁদে নিঃশব্দে। সকাল থেকে পেটে দানাপানি কিছু পড়েনি। এখন কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে ক্ষুধার যন্ত্রণায়।
ছেলেকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে হালকা ঠাটবাট করে মনিকা। পরম আদরে চুমু খায় নাড়িছেঁড়া ধনের কপালে। তারপর বেরিয়ে পড়ে। দু’পা এগোতেই দেখা হয়ে যায় বাড়িওয়ালার সাথে যিনি গোঁফ দাড়ি সবসময় কামিয়ে রাখেন বয়স ধরে রাখার চেষ্টায়। মনিকা বুঝতে পারে, তিনি গিয়ে এখন অফিসে বসবেন, আর ছেলে ফিরে আসবে বাসায়।
‘ কী গো বেডি কই যাও?’, মনিকার ঘনিষ্ঠ হয়ে জানতে চায় বুড়ো।
‘ মরতে যাইতেছি চাচা। খুব ইচ্ছা করতেছে মরতে।’
‘ অ, তয় আমারে নিবা লগে? জীবনডা কেমন পাইনসা পাইনসা লাগে। মজা পাই না। বুকের ভিতরডা খা খা মরুভূমি। তোমার লগে মরতে পারলে ভালই লাগব। নিবা?’
‘ কেউ দেইখ্যা ফেলাইব চাচা। আপনে যান। আমি নিজেই আমার পথ চিন্না লমু।’
‘কত ধনীর ভরা যাচ্ছে মারা পড়ে নদীর ঝড়-তুফানে’-লালন গুনগুন করতে করতে আপন পথ ধরে বুড়ো। যাওয়ার আগে আকুলভাবে আরেকবার দেখে নেয় মনিকার দেহ-সৌষ্ঠব। চোখের কোল জুড়ে থাকে কাম ও লালসার ছড়াছড়ি।
এর প্রায় দুই ঘণ্টা পর মনিকা ফিরে আসে বাসায়। এ সময় স্বামীকে দরজায় দাঁড়ানো দেখে একটু যেন চমকে উঠে সে। সোহেল ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
‘কই গেছিলি ক।’

‘কাম খুজতে গেছিলাম।’ ভয়ে ভয়ে জবাব দিয়ে স্বামীকে পাশ কাটিয়ে ঘরে ঢুকে পড়ে মনিকা।
স্ত্রীকে আক্রমণ করার পরিবর্তে দুই হাতে মুখ ঢেকে নিজেই কান্নায় ভেঙে পড়ে সোহেল, ‘এইডা তুই কী করলি রে মনি। ইজ্জত আব্রু সব বেইচ্যা দিয়া আইলি।’
এবার আক্রোশে ফেটে পড়ে মনিকা, ‘হ দিছি, ত কী অইছে? ইজ্জত দিয়া কী অইব কও? পেট ভরব, না ক্ষুদার জ¦ালা মিটব? তোমার ত বউ পোলার পেট চালাইবার মুরদ নাই।’
ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সোহেল। সজোরে ওর চুলের মুঠি ধরে সে বলতে থাকে,‘ অরে মাগী, এতদিন তোগ দেখভাল করি নাই আমি? নাকি অন্য নাগর আইয়া তর পেটে হাত বুলাইয়া গেছে?’
নিজেকে মুক্ত করে জবাব দেয় মনিকা, ‘মুরদ শেষ, এখন ত আর পারতাছ না।’
‘তাই বইলা এই অকাম করবি তুই! অই বুইড়া লুইচ্চার লগে….। ছি ছি ছি।’

‘ছি ছি করার কী আছে। বুইড়া বহুৎ টাকা দিছে আমারে। এই দেখ।’ মনিকা কোঁচা থেকে পাঁচটি কড়কড়ে একশ টাকার নোট বের করে দেখায়। তারপর বলে,‘ আর দিব কইছে। যার পেডে বাত নাই তার জাতও নাই। আমি জাত হারাই ফেলছি। তোমার পেডে ক্ষুদা না থাকতে পারে। আমার আছে, আমার পোলার আছে। আমরা কী খামু কও,কী খাইয়া বাইচ্যা থাকমু।’
সোহেল মনিকার গালে সজোরে চড় বসিয়ে দিয়ে বলে,‘গু খাইবি, গু।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট