চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রিয় কবি নজরুল

ড. মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন

৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১:১৪ পূর্বাহ্ণ

১৮৯৯ সালের ২৫ মে, মঙ্গলবার। বাংলা ১৩০৬, ১১ জ্যৈষ্ঠ। বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া মৌজার কাজী বাড়ি। কাজী আমিন উল্লাহ’র পুত্র কাজী ফকির আহমদের দ্বিতীয় পত্নী জাহেদা খাতুনের ষষ্ঠ সন্তান জন্ম লাভ করে। যার নাম কাজী নজরুল ইসলাম। যিনি আমাদের প্রাণের কবি, জাতীয় কবি। শুভ জন্মদিন প্রিয় কবিকে। ভাঙা ঘর হোক। সৃষ্টির আলো বাতাস তো দেয়াল আর ভাঙা ঘর বোঝে না। তেমনি ভাঙা ঘরে চাঁদের আলো। হোক গরীবের সংসার বাড়িতে মেহমান তারমধ্যে আবার নতুন মেহমান এই খুশী রাখা যায় কি ? যায় না। পিতা কাজী ফকির আহমেদ মাতা জাহেদা খাতুনের মনেও আজ নতুন অতিথিকে বরণের মহাসমারোহ। শুধু পিতা-মাতা নয়, পাড়ার লোকজনও বসে নেই। সকলের মনে আনন্দের বন্যা। তাঁদের প্রথম সন্তান কাজী সাহেবজানের পর চার চারটি সন্তান অকালে বাবা মায়ের কোল খালি করে চলে যাওয়ার পর এই পাওয়া অপ্রত্যাশিত আনন্দের অংশ বিশেষ বৈকি?

আনন্দের সাথে আশংকার উঁকি তাই বার বার মা বাবাকে আহত ও শংকিত করে তুলছে। খোদার নিকট মানত-আর প্রার্থনার কমতি ছিল না। অবশেষে যায়নি বেঁচে ছিল অনেক দিন। শুধু বাচেনি বেঁচে আছে আজও। ছেলে হয়েছে তার নামতো রাখা দরকার। সকলে মিলে নাম রাখলেন কাজী নজরুল ইসলাম। সুন্দর নাম অতি আদরে রাখা নাম। কিন্তু সকল সময় ডাকার জন্য একটি নামতো রাখা চাই- সেই নামটি কি ? সকলে মিলে ঠিক করলেন দুখু মিয়া। দুখের সংসারে এলো বলে দুখু মিয়া ? না সংসারে সন্তান মরে বলে তাকে স্মরণ করতে দুখু মিয়া ঠিক জানা যায়নি।
দুখু মিয়ার আরো একটি ভাই হয় যার নাম রাখা হয় কাজী আবুল হোসেন। ছয় ভাইয়ের একটি মাত্র বোন নাম উম্মে কুলসুম। জাহেদা খাতুন ছাড়া আরো একজনকে বিবাহ করেছিল ফকির আহমেদ। এই মায়ের ঘরে কোন ভাই ছিল না দুখুর একজন বৈমাত্রেয় বোন ছিল যার নাম সাজেদুন্নেসা।

‘গ্রামের ছেলে খোলামেলা মুক্ত আবহাওয়াই চাই। দুখু মিয়ার ও এই বিষয়েকোন প্রকার ফাকির সুযোগ ছিল না। রাণীগঞ্জে পড়েছে দুখু ততদিনে আর দুখু মিয়া নাই। চারদিকে নজরুল হয়ে গেছে। বাল্যকালে অন্য দশটি ছেলে যেমন হয় কথিত আছে নজরুল ততখানি অস্থির না সে ছিল শান্ত-ভদ্র। তাঁর হাতেখড়ি হয়েছির ঠিক উপযুক্ত বয়সে। কে তাঁকে প্রথম অক্ষর জ্ঞান দিয়েছিল? সম্ভবত তাঁর বাবাই তাঁকে প্রথম অক্ষর জ্ঞান দিয়েছিলেন। তারপর মক্তব। মক্তবের শিক্ষা নেয়ার মাধ্যমে তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ শুরু হয়।

গ্রামের পড়ালেখা এক দুই গুণতে পারলেই একবারে স্কুলে। নজরুলেরও তাই হল। মক্তবে শিক্ষা নিতে গিয়ে কোরান পড়তে গিয়ে একেবারে ফার্সি শিখে ছেলে। মক্তবের হুজুরের বক্তব্য ছেলের মেধার কোন কমতি ছিল না। অভাবের সংসারে শুধু মাত্র বই নিয়ে পড়ে থাকলে গরীবের চলে ? শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি ঘরের কাজটা দুখুকে দেখতে হয়। এভাবে আট বছরে দুখুর উপর পড়ল ভীষণ দায়িত্ব। দুখু পড়ালেখা চালাবে না সংসার।
আট বছর বয়সে দুখু বাবা মারা যান। ১৩১৪ বাংলার ৭ চৈত্র। বাবার মৃত্যুর পর দায়িত্বটা আরো খানিকটা বেশি। পড়ালেখা ছেড়ে এবার দুখু সংসারী। যে সময়ে আমাদের ধনীর দুলালেরা পৃথিবী সম্পর্কে কিছু জানে না ঠিক তখন দুখুকে পৃথিবীর সকল দায়িত্ব নিতে হয়েছে এটি অনেকটা গল্পের মত। তখন দুখু অর্থের জন্য কোথায় ছুটবে। ঐ মক্তবে তার চাকুরির ব্যবস্থা হল। সেই সঙ্গে পিতার শূন্যস্থানটুকু ও পূরণ হল। মাজারের খাদেমগিরি আর মসজিদের ইমামতিই হল দুখুর প্রথম চাকুরি। নিজ সম্প্রদায়ের লোকজন এবং ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানতে লাগল দুখু।

দুখুর চাচা বজলে করিম ছিল রসিক মানুষ। মাঝে মাঝে কবিতা, গদ্য আর ফার্সিতে কবিতা বানারোর চেষ্টা করতেন। দুখুও চাচার সাথে কবিতা রচনা করার চেষ্টা করতেন। কাব্য রসিক এই চাচার কারণে নিজের অলক্ষে কখন যে কবি হতে লাগল তা নিজের অজান্তেই। পদ্য রচনা আর মুখে মুখে পদ্যের লাইন বলা ছিল সেই সময়ে কবির বড় স্বপ্ন। আর এর থেকে কবি-কবিতা। আর কবিতার হাতেখড়ি চাচা বজাল করিমের। পুরো কৃতিত্ব তাকে দেয়া যায়। এভাবে চলতে থাকে বহুকাল আর এক সময় দুখু হয়ে যান কবি নজরুল ইসলাম। অবশেষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।

পরবর্তী কবি আরেকটি কাজ পেয়ে যায়। কাজটি সোজা। কবি মায়ের কাঝে সংবাদ পাঠালেন আজ আমি বাড়ি যাব না মাকে বলবে আমি একটি কাজ পেয়েছি। কাজটি সোজা। দেড় মাইল কাঁচা রাস্তা দিয়ে গার্ড সাহেবকে বাড়ি পৌছে দেয়া। টিফিন ক্যারিয়ারে করে খাবার ভর্তি করে খাবার এন দেয়া। আর আরেকটি কাজ হল আসানসোল থেকে কলকাতা যাওয়া এবং সেখান থেকে মদ ভর্তি বোতল নিয়ে আসা। এভাবে কাজের বর্ণনা দিয়ে মায়ের কাছে সংবাদ পাঠানো হল।
চুরুলিয়া থেকে বের হয়ে না এলে বৈচিত্র এই পৃথিবীকে চিনা সত্যিই দায় হয়ে যেত। চুরুলিয়া কাছে ধারে সবচেয়ে বড় জায়গা হল আসানসোল। বর্ধমান জেলার মহকুমা সদর। সাহেবের কাজে একদিন অন্তর একদিন এখানে আসতে হত। নানা জাতের লোকদের সাথে মিশতে হত এখানে। এখানে আসার কারণে আসানসোলের সাথে চেনা জানা হতে লাগল। রাস্তাঘাট, দোকানদার, মানুষদের সাথে চেনা জানা হতে লাগল। আর এর ফলে সাহেব বাড়ির চাকুরি গেলেও কষ্ট হল না।
একটা চা-রুটির দোকানে চাকুরি হয়ে গেল। হুগলির লোক আসানসোল এসে চাকুরি দিয়েছেন। মালিকের নাম এম বখত। খাওয়া ফ্রি মাসে একটাকা বেতন থাকার ব্যবস্থা নাই। রুটির দোকানের পাশে এক তিনতলা বাড়ি থাকা নিয়ে আর ভাবনা কি ? সেখানে রাত কাটানোর একটি চমৎকার স্থান হয়ে গেল। সঙ্গে যেহেতু চাল-চুলো নেই ততবেশি ভাবনার কারণ নেই সিঁড়ির কোণে শুয়ে থাকলে কে আর কি বলবে ? এভাবে রাত কাটানো ব্যবস্থা হল।
এই তিনতলা বাসারর ভাড়াটে হল কাজী রফিজউলাহ। পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর। তার স্ত্রী শামসুনেসা খানম। স্বামী-স্ত্রীর ছোট সংসার। পুর্ববাংলার ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল থানার কাজীর সিমলা গ্রাম। ঘুমন্ত শিশুকে একদিন আবিষ্কার করে ভদ্রলোক। অভাবের কারণে এখানে এসেছে লোকটি দুখুর ইতিহাস শুনে তাদের সঙ্গে থাকার প্রস্তাব করে। খাওয়াদাওয়া সব ফ্রি আর মাসে ৫টাকা মাইনে দেয়ার চুক্তিতে দুখুকে নিয়ে যায় কাজী রফিজ উল্লাহ।
জীবন যে কি কঠিন অনেক আগেতো এই বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী দুখু নিয়ে নিয়েছে। তাই চাকর হওয়া আর পারপরমেশ খাটা তার জন্য কোনো কষ্টের নয়। খাদেম-ইমাম দুখু মিয়া। লেটো দলের কবি দুখু মিয়া। বাবুচি-খানসামা দুখু মিয়া। এবার গৃহভৃত্যের কাজে যায় দুখু মিয়া তাতেও দুঃখ নাই দরকার টাকার। না এই ঘরে পরিশ্রম তেমন কিছু নয় রুটির দোকান থেকে অনেক কম। কাজের অন্যতম কাজ কাজী সাহেবকে তামাক সেজে দেয়া। নিঃসন্তান দম্পত্তির অপত্য¯েœহের কারণে দুখুর আস্তে আস্তে দুঃখ শেষ হতে লাগল।

গান কবিতা রচনা ইত্যাদির প্রতি কাজী সাহেবের দৃষ্টি ইতিমধ্যে পড়ে গেল বেশি দিন আর চাকুরি করতে হল না দুখুকে। তাদের বিবেচনায় দুখু অত্যন্ত মেধাবী তাকে স্কুলে ভর্তি করানোই শ্রেয়। সে পড়ালেখা করবে-মানুষ হবে। পুলিশের চাকুরি একবার একজায়গায় কোথায় স্কুলে ভর্তি করাবে? সর্বশেষ ঠিক হল তাকে গ্রামের স্কুলে ভর্তি করানো হবে। রফিজউলাহ সাহেবের বড় ভাই কাজী সাখাওয়াত উলাহ থাকেন গ্রামে তার কাছে রেখে দুখুকে স্কুলে ভর্তি করানোর বিষয়ে মনোস্থির করা হল। থাকা খাওয়া কাজী বাড়িতে সেখান থেকে স্কুলে যাওয়া। স্কুলে পড়তে কোনো বেতন লাগবে না। ফ্রিস্টুডেন্ট শিপ মিলেছে। ঘটনাটি ঠিক ১৯১৪ সালের নজরুল তখন ১৫ বছরের কিশোর।

কাজী বাড়িতে বেশি দিন থাকেনি। স্কুলে আসা যাওয়ার যে দুরন্ত তা দুখুকে সে বাড়িতে থাকতে দেয়নি। স্কুলের কাছে একটি জায়গায় স্থান করে নেয় দুখু। ক্লাসে কখনও দুষ্টুমি করেনি। তবে সব সময় অন্য মনস্ক থাকত দুখু। হরিহর আত্ম বন্ধু তিন জন। নুরু, শৈল, শৈলেন। একজন মুসলিম একজন হিন্দু আর অন্যজন খ্রিস্টান। জাত বা ধর্মের বিচার নাই। মানুষই তাঁর কাছে প্রধান। মানুষে মানুষে বিভাজনে কবি কখনও যাননি। তিনি সর্বদা চেয়েছেন একতার বন্ধনে সকলে মিলে থাকবে চিরকাল। তাই হয়েছির বটে। তিনি মানুষের কবিতে পরিণত হয়েছিলেন। তিনি কোন সম্প্রদায়ের কবি হিসাবে বিবেচিত হননি।
এভাবে কবির বেড়ে ওঠা। লেখালেখি শুরু প্রথম স্কুল জীবন থেকে। স্কুল জীবন শেষ করে যাবে তখন সময়টা ত্রিশ বছরের চারদিকে ইংরেজ বিরোধী আন্দোলন তীব্রতর হচ্ছে। সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে ওরা আমাদের উপর শাসন চারাবে এ হতে পারে না। কবিও সেই নেই আন্দোলনের রোডম্যাপ তৈরিতে ব্যস্ত। নজরুল তখন ১০ম শ্রেণীর ছাত্র। সে শ্রেণেিত ফাস্ট বয়। তার প্রতি স্কুল একটা পাওনা রয়েছে। কিন্তু সবাই বলছে বন্দে মাতরম-সে বলবে কিভাবে ? যুদ্ধবিদ্যার কৌশল ঠিক শিখা চাই। সময়টা তখন ১৯১৭ চারদিকে যুদ্ধ চলছে। ভারতবর্ষের চারদিকে যুদ্ধে লোকজন যাচ্ছে তখন দেয়ালে দেয়ালে লেখা হয়-
‘কে বলে বাঙ্গালী যোদ্ধা নয় ? কে বলে বাঙ্গালী ভীতু ? জাতির এই কলংক
মোচন করা একান্ত কর্তব্য, আর তা পারে একমাত্র যুবশক্তি।
ঝাপিয়ে পড় সিংহবক্রিম। বাঙালি পল্টনে যোগ দাও।’

সিদ্ধান্ত নিতে একটু বিলম্ব করেনি নজরুল। পল্টনে যোগ দিতেই হবে দেশ আগে তারপর পড়ালেখা। এরপর শৈলকে নিয়ে কলকাতা যাওয়া। উদ্দেশ্য বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগদান। এখানে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল দু’বন্ধুর কারণ শৈল পরীক্ষায় টিকেনি। মামার হাত ধরে কান্না আর কান্নার রোলে শৈল ফিরে গেল। আর নজরুলকে পাঠানো হল ছাউনিতে। কলকাতা শহরের বুকে ফোর্ট উইলিয়াম নামের দুর্গে। এর পর কয়েক দিনের ভিতর লাহোর, সেখানে থেকে পেশোয়ার, সেখানথেকে নৌশেরা। সেখানে ট্রেনিং নিতে হবে। আঠার বছরের সময়ের আর পিছনে ফিরে তাকানোর সময় তার ছিল না।
১৯১৯ সালে প্রথম মহাযুদ্ধ শেষ হয়ে গেল। বাঙালি ছেলেদের সেনাবাহিনীতে নেওয়া হয়েছিল এই বিশ্বযুদ্ধ লড়বার জন্য। ১৯২০ সালে নজরুল এক সপ্তাহের ছিল নিল। এর তিনদিন চুরুলিয়া আর চারদিন কলকাতায়। নজরুল যখন কলকাতায় কমরেড মোজাফ্ফর তখন কলকাতায়। বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতি নামে একটি সংঘ বা দল গঠিত হল। যার প্রধান কাজ হবে বাঙালি মুসলিম সমাজকে আলোকিত করা। সমিতির পক্ষ থেকে একটি পত্রিকা বের হচ্ছে যার নাম-‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা’। দু’জন সম্পাদকের একজন হলেন-মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক অপর জন হলেন- মুহম্মদ শহীদুলাহ। পত্রিকার প্রকাশক ও সহযোগি সম্পাদক ছিলেন মোজাফ্ফর আহমদ। এই পত্রিকায় করাচি থেকে কবিতা এসেছে এক হাবিলদারের যার নাম-কাজী নজরুল ইসলাম। কবিতার নাম ক্ষমা। কবিতাটি পড়ে সকলেল ভালো রেগেছে কিন্তু শিরোনাম কারো পছন্দ হয়নি যার ফলে কবিতার শিরোনাম করা হয় মুক্তি। এটাই নজরুলের প্রথম প্রকাশিত কবিতা। ছাপালেন মোজাফ্ফর আহমদ, বঙ্গীয় মুসলিম পত্রিকায়। সেই সূত্রে মোজাফ্ফরের সাথে পত্রালাপ এবং বন্ধুত্ব।
মোজাফফরের সাথে দেখা হল কবিন যখন ছুটি কাটাতে এসে কলকাতায় এলন তখন। কবিকে দেখে মোজাফ্ফর আহমদ লিখেছিলেন এভাবে-‘হাঁ, কাজী নজরুল ইসলামকে সেদিন আমি প্রথম দেখি। সে তখন একুশ বছরের যৌবনদীপ্ত যুবক। সুগঠিত তার দেহ আর অপরিমেয় তার স্বাস্থ্য। কথায় কথায় তার অপরিমেয় হাসি। তাকে দেখলে, তার সঙ্গে কথা বললে যে-কোন লোক তার প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে পারত না।’

এভাবে তিনি চাকুরি ছেড়ে এসে সাহিত্য জগতে পা রাখলেন কমরেড মোজাফ্ফরের মাধ্যমে। শুরু হল যথার্থ সাহিত্য চর্চা। কলকাতা থেকে আরো একটি মাসিক পত্রিকা বের করার উদ্যোগ নেয়া হল যার সম্পাদক হবেন মোজ্জাম্মেল হক এপ্রিল থেকে বের হবে। পত্রিকার নাম মোসলেম ভারত। পত্রিকার সম্পাদক এই পত্রিকায় কবি নজরুল ইসলামকে লেখার জন্য অনুরোধ করলেন। কবিও বিষয়টি লুপে নিলেন। সেই মূহুর্তে কবির হাতে একটি লেখাও জমা ছিল যার নাম ‘বাঁধন হারা’। ধারাবাহিক এই লেখাটি ছাপানোর ব্যবস্থা হয়ে গেল।

পূর্বে যেসকল পত্রিকায় কবি লেখেছিলেন তাহল-সওগাত, বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা, প্রবাসী, নূর। কবি কে তখনও গীতিকার হিসাবে কোন পত্রিকা তেমন লেখেনি। সেই উপাধিটা দিল প্রথম মোসলেম পত্রিকা। কবি এর পর আলোড়ন সৃষ্টি কারী সকল কবিতা লিখতে শুরু করলেন যেমন, শাত-ইল-আরব, খেয়াপারের তরণী, কামাল পাশা, বিদ্রোহী একটির পর একটি। এভাবে একের পর এক যেন নতুন আন্দোলন, নতুন সৃষ্টি। যা কিনা সেই সময়ে চিন্তা করাও কষ্ট ছিল। এভাবে কবি ও সংবাদ মাধ্যমে কবির পরিচিতি ছাপাতে লাগল এবং সংবাদপত্র জগতে তিনি খ্যাতি লাভ করতে লাগলেন। প্রিয় কবি, জাতীয় কবি, বিদ্রোহ আর প্রেম-ভালোবাসার কবির জন্মদিন। কবিকে আজও আমাদের জন্য অনিবার্য। কবির কর্ম চিন্তা, সাহিত্য গান আমাদের অনুপ্রেরণা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট