চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

কাজী নজরুলের গানে রাগের ব্যবহার

ড. লীনা তাপসী খান

৩০ আগস্ট, ২০১৯ | ১:১৮ পূর্বাহ্ণ

কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিভা ছিল অপরিসীম এবং ঐশ^রিক। তার সাংগীতিক প্রতিভার স্ফুরণ ঘটেছে বাংলা সংগীতের সকল অঙ্গনে। সঙ্গীত সৃষ্টিতে তিনি ছিলেন আত্মপ্রত্যয়ী যদিও সঙ্গীতে তিনি ধারাবাহিকভাবে শিক্ষা গ্রহণের সময় বা সুযোগ কোনোটিই তাঁর অনুকূলে ছিল না। তথাপি আমরা তাঁর সঙ্গীত শিক্ষাগুরু হিসেবে স্কুলজীবনে পাই কাঞ্জিলাল, ঠুমরী স¤্রাট ওস্তাদ জমিরউদ্দিন খান, মুর্শিদাবাদের ওস্তাদ কাদের বক্স, ওস্তাদ দবির খান, মঞ্জু সাহেব, মাস্তান গামা, সুরেশ চক্রবর্তীকে যাদের কাছে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সঙ্গীতের সারমর্মকে আত্মস্থ করে ছিলেন। তারই ফলাফল রূপ দেখা যায় তাঁর সঙ্গীতে রাগ সঙ্গীতের ব্যবহারের মাধ্যমে। তিনি হিন্দুস্থানী রাগের ব্যবহার করেই ক্ষান্ত হননি। নিজে ১৭টি রাগ সৃষ্টি করেছেন এবং দক্ষিণ ভারতীয় রাগের ব্যবহার করেছেন তাঁর গানে। তাঁর গানে প্রায় ১৬টি হিন্দুস্থানী রাগের ব্যবহার করেছেন। তাছাড়া নানা রাগের মিশ্রণও ঘটিয়েছেন। রাগ সঙ্গীত সম্পর্কে স্পষ্ট ও সম্যক জ্ঞান না থাকলে রাগের মিশ্রণ ঘটানো সম্ভবপর নয়। তাঁর রচিত গানের শিরোনামে রাগের উল্লেখ পাওয়া যায়। মিশ্র কথাটি পাওয়া যায় তার গানে। কোন রাগে আবির্ভাব বা তিরোভাব অথবা কোথায় একটি বিবাদী স্বর ব্যবহার করা যায় সে সব বিষয়ই ছিল তার নখদপর্ণে। রাগ ব্যবহারের বিষয়ে কখনো কখনো দেখা যায় নির্দিষ্ট একটি রাগকে প্রধান করে গান রচনা শুরু করে, গানের কোনো একটি অংশে সুর বৈচিত্র্য ঘটানোর জন্যে এমন একটি স্বর ব্যবহার করলেন যা ওই রাগ বহির্ভূত স্বর, সে বিষয়টিও তিনি অত্যন্ত নিশ্চিত এবং সুনিপুণভাবে করতেন। যেমন ‘আসে বসন্ত ফুল বনে’ গানটি ভীমপলশ্রী রাগে রচিত গানটির দ্বিতীয় লাইনে ‘সাজে বনভূমি সুন্দরী’ এই সুন্দরী শব্দে তিনি শুদ্ধ গান্ধার অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করেছেন। উল্লেখ্য ভীমপলশ্রী রাগে কোমল গান্ধার ব্যবহার হয়। এমনটি অসংখ্য গান পাওয়া যায়।
স্বল্প পরিসরে তাঁর গানে রাগ ব্যবহার বা নজরুলের রাগপ্রীতির বিষয়টি বিশ্লেষণ করতে গেলে পুষ্পাবস্থায় অর্থাৎ ১৯৪২ সালের জুলাই-এর পূর্বাবধি তার পরিকল্পনায় ও তত্ত্বাবধানে কিছু গান বিশ্লেষণ করলেই তাঁর রাগপ্রীতির বিষয়টি পরিষ্কার বোঝা যায়। তার বিখ্যাত সঙ্গীত গ্রন্থগুলো থেকে পরিসংখ্যানের মাধ্যমে সহজেই তা বোঝা সম্ভব।

তাঁর সুস্থাবস্থায় রচিত দশটি গীতি সংষ্করণ প্রকাশকাল ১৯২৮-১৯৩০ সাল। যেমন-তাঁর রচিত গ্রন্থ ‘বুলবুলে’ মোট গান ছিল ৪৯টি, তার মধ্য ৪৯টি গানই রাগভিত্তিক।
গ্রন্থ : ‘চোখের চাতক’ মোট গান ছিল ৫৩টি, এর মধ্যে ৪৫টি রাগভিত্তিক এবং ০৮টি ছিল লোক ও কীর্তন সুরে।
গ্রন্থ : ‘চন্দ্রবিন্দু’ মোট গান ৬০টি। রাগভিত্তিক গান ৩৮টি, ৫টি লোক এবং ১৭টি হাসির গান।
গ্রন্থ :‘নজরুল গীতিকা’ মোট গান ১২৭টি এর মধ্যে ১১১টি রাগভিত্তিক। ৯টি লোক ও ৬টি স্বদেশী।
গ্রন্থ : ‘সুরসাকী’ মোট গান ৯৮টি, তার মধ্যে ৮৬টি রাগভিত্তিক ও ১২টি লোক।
গ্রন্থ : ‘জুলফিকার’ মোট গান ২৪টি, তাতে ২৪টিই রাগভিত্তিক।
গ্রন্থ :‘বনগীতি, মোট গান ৭১টি, তাতে ৫৪টি রাগভিত্তিক ও ১৭টি লোক।
গ্রন্থ : ‘গুলবাগিচা’ মোট গান ৮৭টি, তাতে ৭৮টি রাগভিত্তিক। ১২টি লোক ও কীর্তন এবং ৭টি হাসির গান।
গ্রন্থ : ‘গীতিশতদল’ মোট গান ১০১টি তাতে ৭১টি রাগভিত্তিক গান।
গ্রন্থ : ‘গানের মালা’ মোট গান ১০৫টি, তাতে ৮০টি রাগভিত্তিক।
উপরোল্লিখিত দশটি গ্রন্থের মধ্যে সর্বমোট ৭৭৫টি গান পাওয়া যায় এবং তার মধ্যে ৬৩৭টি গানই রাগভিত্তিক ফলে একটি কথা নিশ্চিত এবং পরিষ্কার যে নজরুলের রাগসঙ্গীতপ্রীতি ছিল অত্যন্ত গভীরে।

রাগসঙ্গীতের চারটি ধারা :
ক. ধ্রুপদ ও ধামার
খ. খেয়াল
গ. টপ্পা
ঘ. ঠুমরী
নজরুল তাঁর গানে এই চারটি ধারাকেই ব্যবহার করেছেন, তবে সবচেয়ে বেশী ব্যবহার করেছেন ঠুমরী এরপর খেয়াল এবং সর্বশেষ ধ্রুপদ/ধামার ও টপ্পা।
উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের আদিরূপ ধ্রুপদ/ধামার যা প্রবন্ধ পরপর সৃষ্ট হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানে নানাভাবে ধ্রুপদ এর ব্যবহার করেছেন। ধ্রুব অর্থ স্থির আর পদ অর্থ প্রবন্ধ বা কথাযুক্ত গান। পদ শব্দটি সর্ব প্রথম সঙ্গীতের ব্যবহৃত হতো। ‘চর্যাপদ’ শব্দটিতেও পদ কথাটি পাওয়া যায়। প্রবন্ধ বলতেও সমার্থক পদ ছিল। ৩৬টি ধারার প্রবন্ধের প্রচলন ছিল বলে জানা যায়। ধ্রুপদ গাওয়ার বিধিবদ্ধ রীতি, ভাব, গভীরতা, গাম্ভীর্য, কঠিন তালের প্রয়োগ, তালের গতি, তালের দ্বিগুণ, তিনগুণ, চৌগুণ, বাট, উপজ ইত্যাদি পদ্ধতিগুলো ছিল আদি গুণসম্পন্ন জটিল গায়ন পদ্ধতির এতে খেয়াল বা ঠুমরীর ন্যায় স্বাধীনতা থাকে না। তা পরিবেশন বা সাধনালব্ধ করা অত্যন্ত দুরূহ কাজ। কাজী নজরুল বাংলা সংগীতে এই ধারার ব্যবহার করেছেন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে। তিনি তাঁর গানে বাণীর ব্যবহার, লয়, তাল, গাম্ভীর্য অত্যন্ত সচেতনভাবে ব্যবহার করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু ধ্রুপদ ও ধামার।
১. দোলে ঝুলন দোলায় কামোদ রাগে (ধামার) ধামার তাল
২. শংকর অংগলীনা (ধ্রুপদ) একতাল, রাগ শংকরী
৩. এসো শংকর ক্রোধান্নি (সুর ফাক্তা) ধ্রুপদ রাগ রুদ্র ভৈরব
৪. হে প্রবল দর্পহারী কৃষ্ণ মুরারী (সুরফাক্তা) ধ্রুপদ রাগ রুদ্র রাগেশ্রী
৫. যোগী শিব-শঙ্কর ভোলা (ঝাপতাল) ধ্রুপদ। রাগ-আড়া
সঙ্গীতজ্ঞ আমীর খসরু সৃষ্টি ‘খেয়াল’, এই খেয়ালেও অবাধ বিচরণ করেছেন নজরুল। তাঁর রচিত খেয়াল অঙ্গের গানকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়।
১. মূলগান ভাঙ্গা গান
২. বাংলায় রাগ সংগীত (খেয়াল)

মূলগান অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট রাগ-এর বন্দিশের হুবহু বাংলা রচনা। আগ্রা সারানার ফৈয়াজখাঁন বেশ কিছু বন্দিশকে বাংলায় রূপান্তর করে সুকণ্ঠ শিল্পী দিপালী নাগকে দিয়ে পরিবেশন করান। যেমন-মূল গান : ‘মোরে মন্দর আবলো নাহি আরে’।
ভাঙ্গাগান : মেঘ-মেদুর বরষায়, কোথা তুমি’
মূলগান : ঝন্ ঝন্ ঝন্ পায়েল বাজে
জাগে মোরীসাস নমদীয়া
ঔর দোরনীয়া হাঁরে জৌপীয়া মা। (॥)
ভাঙ্গাগান : রুম্ ঝুম রুমঝুম্ নূপুর বোলে
বন পথে যায় সে বালিকা
গলে শেফালিকা
মালতী মালিকা দোলে (॥)

১৯৩৯ এবং ১৯৪২ এই বছরে এ ধারায় কবি প্রায় ১৭টি রাগ বাংলা রূপান্তর করেন। এতো গেল খেয়াল ভাঙ্গা গানের কথা। এছাড়াও নজরুল খেয়ালাঙ্গের বন্দিশ আকারের একক রাগ ব্যবহার করেছেন তার সংখ্যাও কম নয়। এক অন্তরা বিশিষ্ট এসব খেয়ালকে বাংলা বন্দিশ আকারেই গীতি হওয়ার যোগ্য। যেমন-
রাগ দেশীতে রচিত :
এসো প্রিয় আরো কাছে
পাইতে হৃদয়ে এ বিরহী মম যাচে (॥)
রাগ জৈনপুরীতে :
মম মধুর মিনতী শোন ঘন শ্যামাগিরীধারী
কৃষ্ণমুরারী আনন্দ ব্রজে তব সাথে মুরারী (॥)
রাগ মেঘ এ রচিত গান :
গগণে সঘন চমকিছে দামিনী
মেঘ ঘন রস রিমিঝিমি বরসে
একেলা ভুবনে বসি বাতায়নে
পথ চাহী বিরহিণী কামিনী (॥)
এগুলো হলো বাংলা বন্দিশে খেয়াল আকারে পরিবেশ করার গান।
তাছাড়া খেয়ালাদের বহু গীতিকবিতার ছড়াছড়ি তাঁর গীত সম্ভারে। যা কাঠামোগতভাবে পরিপূর্ণ বাংলা গান, যেমন মেঘরাগের গান : শ্যামাতন্বী আমি মেঘ বরনা। আড়ানা রাগে : এসো হে সজল শ্যামঘন দেয়া অথবা দুর্গা রাগে : নহে নহে প্রিয় এ নয় আঁখি জল এ ধরনের অসংখ্য গান পাওয়া যায়।
টপ্পা : উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের আরেকটি অন্যতম ধারা। বাংলা গানে টপ্পার ব্যবহার রবীন্দ্রনাথ অধিকতর ব্যবহার করেছেন। নজরুলের গানে টপ্পার ব্যবহার অপেক্ষাকৃত কম। টপ্পা গায়নের পদ্ধতিটি সহজলভ্য নয়। এর জন্যে কণ্ঠচর্চার বিশেষ একটি শৈলী অনুসরণ করতে হয় যা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। টপ্পার অলংকারের প্রয়োগটি একেবারেই আলাদা। কাজী নজরুলের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য টপ্পা যেমন :
দিও বর হে মোর স্বামী।
যাহা কিছু মম আছে প্রিয়তম, সকলি নিও হে স্বামী, গানগুলি মোর আহত পাখির সম ইত্যাদি।
এবারে আসা যাক ঠুমরী প্রসঙ্গে। ঠুমরী ব্যবহার কাজী নজরুলের গানে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়েছে। এক কথায় বলা যায়। নজরুল তার গানে ঠুমরীর ব্যবহারের মধ্যে সে বাংলা গানকে এক নতুন দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন, খুলে গেছেন এক নতুন দিগন্ত।
ঠুমরীর গীত শৈলী কিন্তু সহজলভ্য নয়, ঠুমরীক আয়ত্তের জন্যে প্রয়োজন উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত চর্চা। যদিও একে লাইট ক্লাসিক্যাল বলা হয় তবে যারা ঠুমরী পরিবেশন করেন তারা কিন্তু উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের উৎকর্ষ সাধন করে তবেই ঠুমরী গাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। কারণ ঠুমরীতে বহুল রাগের মিশ্রণ দেখানো হয়ে থাকে, কোন রাগের সঙ্গে কোন রাগ মিশ্রণ ঘটালে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে এ সকল বিচার বিশ্লেষণ করে সঙ্গীত পরিবেশন উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে সম্যক জ্ঞান না থাকলে তা ঘটানো সম্ভবপর নয়। ঠুমরী নানা রসভাবাবেশের হয়ে থাকে অপেক্ষাকৃত হালকা তালের হয়ে থাকে বিধায় নজরুলের গানে আমরা নানা রঙ্গের ব্যবহারে পেয়েছি। হালকা তাল বলতে যেমন যা ত্রিতাল, আদ্ধা, কাহারবা তাল সম্মলিত। দাদরা তালের ঠুমরীকে দাদরা বলা হয়ে থাকে। এই সকল তাল বাংলা কাব্যরসসম্পন্ন গীত কবিতাকে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। ঠুমরী হিন্দী : ‘মৈথিলী, উর্দু, ব্রজবুলী ইত্যাদি ভাষায় গীত হতো। কাজী নজরুল বাংলা ঠুমরী সৃষ্টির ক্ষেত্রে সার্থক ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর পূর্বে অতুলপ্রসাদ সেন বাংলা ঠুমরী রচনা করে গেছেন তাতে তা বহুল প্রচারে ফলপ্রসূ লাভ করতে পারেনি।
ধ্রুপদী/ধামার ও খেয়ালের ন্যায় ঠুমরীরও চারটি ঘরানা রয়েছে যেমন : ১. লক্ষ্মৌ ঘরানা ২. বোমারস ঘরানা ৩. পাঞ্জাব ঘরানা ৪. বাংলা ঘরানা
১. লক্ষ্মৌ ঘরানার প্রবর্তক ওয়াজেদ আলী শাহ্ ও কদর পিয়া (মীর্জা অলি কদর)
২. বেনারস ঘরানার প্রবর্তক মৈজুদ্দীনের প্রভাবে এই ঘরানা পরবর্তীতে খ্যাতনামা বাইজীদের সহায়তায় গড়ে উঠে।
৩. বাংলা ঘরানার প্রবর্তক গণপতি রাও, ওয়াজেদ আলী শাহ্।
৪. পাঞ্জাব ঘরানার প্রবর্তক ওস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁ।
ঘরানা নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে যার দ্বারা প্রতিটি ঘরানাকে আলাদাভাবে চেনা যায় বা সনাক্ত করা যায়। নজরুল তাঁর গানে সকল ঘরানার বৈশিষ্ট্যের মিশ্রণ ঘটিয়েছেন। বাংলা গানের বাণীকে প্রাধান্য দিয়ে ঠুমরীর চলনকে অব্যাহত রেখে সে সঙ্গে সুনির্বাচিত তাল, লয়, ছন্দকে নির্বাচন করে তিনি অজ¯্র ঠুমরী অঙ্গের গান রচনা করে গেছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য ঠুমরী :
১. এ কোন মায়ায় ফেলিলে আমায়
চিরজনমরে স্বামী,
-রাগ মিশ্র-শিব রঞ্জনী
২. বঁধু তোমার আমার এই যে বিরহ
এক জনমের নহে !!
– রাগ-পিলু/ভৈরবী
৩. পেয়ে যেন নাহি পাই হৃদয়ে মম
-রাগ: মিশ্র খম্বাজ
৪. সুরে ও বাণীর মালা দিয়ে তুমি
আমারে ছুঁইয়া ছিলে
-রাগ-পিলু
৫. পিয়া গেছে কার পরদেশ
-রাগ : রাগ-পাহাড়ী
কাজী নজরুলের গানে হিন্দুস্থানী রাগ, দক্ষিণ ভারতীয় রাগ এবং নানা তাল ছন্দের ব্যবহার ফলপ্রসূরূপে পাই। তাঁর নিজস্ব ১৭টি রাগ সৃষ্টি এসবই বাংলা গানকে দিয়েছে এক সমৃদ্ধশালী সংযোজন যা তাঁর গানকে ধাপে ধাপে সুউচ্চে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এসকল বিচার বিশ্লেষণ শুধু গবেষকদের মধ্যেই সীমিত না থেকে যদি সকলের উপলব্ধিতে পৌঁছে দিতে পারা সম্ভব হয় তবেই আমরা তাঁকে যথার্থ মূল্যায়ন করতে পেরেছি বলে মনে করতে পারব। মাত্র ২৩ বছর সময় সীমানায় একজন কবি কত বিশাল সঙ্গীতসমুদ্র সৃষ্টি করে রেখে গেছেন আমরা সেই সমুদ্রের তীরে বসে এক ঘড়া জল নিয়ে খেলছি মাত্র।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট