চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আশাতীত সফলতা পায় প্রথম হরতাল ও প্রতিবাদ কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ

১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদের অধিবেশনে ভাষা হিসেবে উর্দু ও ইংরেজিকে প্রস্তাব করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র জনতা। আন্দোলন প্রবল রূপ ধারণে করার প্রেক্ষাপটে তমদ্দুন মজলিস রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে।

 

১৯৪৮ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ পুনর্গঠন করে দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। এতে তমদ্দুন মজলিস ছাড়াও বাইরে থেকে প্রতিনিধি সংগ্রহ করা হয়।

 

গণ আজাদী লীগ, গণতান্ত্রিক যুবলীগ, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হল থেকে দুইজন করে প্রতিনিধি সংগ্রাম পরিষদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

 

দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন মোহাম্মদ শামসুল আলম, প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম, এ এস এম নূরুল হক ভূঁইয়া, ফরিদ আহমদ, অলি আহাদ, মোহাম্মদ তোয়াহা, নঈম উদ্দিন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, আজিজ আহমেদ, আখলাকুর রহমান, আব্দুল মতিন খান, আবুল খায়ের আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী প্রমুখ।

 

১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ হরতাল ও প্রতিবাদ কর্মসূচি আশাতীত সফলতা লাভ করে। চট্টগ্রামেও কড়া হরতাল পালিত হয়। হরতালের দিন ঢাকা হাইকোর্ট গেট, রমনা ডাকঘরের সামনে এবং সচিবালয়ের এক ও দুই নম্বর গেটে ছাত্ররা পিকেটিং শুরু করেন সকাল থেকে। সচিবালয়ে প্রবেশ ঠেকাতে পুলিশ কাঁটাতারের বেড়া দেয়। কিন্তু পিকেটিংয়ের একপর্যায়ে ছাত্ররা কাঁটাতারের বেড়া ভেদ করে সচিবালয়ে প্রবেশ করেন। এ সময় পুলিশ সচিবালয় থেকে ছাত্রদের বের করে দেয়ার জন্য ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। বন্দুকের ফাঁকা আওয়াজও করে।

 

পূর্ব পাকিস্তান সচিবালয় শেষ পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। পুলিশের সাথে সংঘর্ষে কয়েকশ’ ছাত্র-জনতা আহত হন হরতালে। ৬৯ জনকে জেলে নেয়া হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের অনেককে সাভার ও জয়দেবপুর নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

 

হরতালের সময় গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ছিলেন অলি আহাদ, শামসুল হক, শেখ মুজিবুর রহমান, গোলাম আযম, কাজী গোলাম মাহবুব, শওকাত আলী, আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী, রনেশ দাস গুপ্ত প্রমুখ। পুলিশের লাঠিপেটায় প্রিন্সিপাল আবুল কাসেম মোহাম্মদ তোয়াহাসহ আরো অনেকে আহত হন। ১১ মার্চ হরতালে গ্রেপ্তার ও পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে ১২ ও ১৩ মার্চ ঢাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালন করা হয়।

 

 

পূর্বকোণ/জেইউ

শেয়ার করুন