চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

ছাত্রজনতা শাসক গোষ্ঠীর সব ষড়যন্ত্রের জবাব দেয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর থেকে বাংলা ভাষা নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠির চক্রান্ত শুরু হয়। বাংলা নয়, উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। শুরুতে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা থেকে বাংলাকে বাদ দেয়া হয়। ১৯৪৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতা অধ্যাপক আবুল কাসেমের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল দেখা করে সিএসপি পরীক্ষা থেকে বাংলা ভাষাকে কেন বাদ দেয়া হলো তখনকার কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ফজলুর রহমানের কাছে জানতে চায়। মন্ত্রী প্রতিনিধিদলকে বলেন, এটা নিতান্তই ভুলবশত হয়েছে।

 

একই সালে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর পরীক্ষা থেকেও বাংলা ভাষাকে বাদ দেয়ার চক্রান্ত শুরু হয়। ওই পরীক্ষা উর্দু ও ইংরেজি ভাষায় নেয়ার সিদ্ধান্ত হলে কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ইত্তেহাদ পত্রিকায় নৌবাহিনীর পরীক্ষায় বাংলা মাধ্যম বাদ দেয়ার বিষয়ে ভুলের পুনরাবৃত্তি শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করা হয়। পরে এ সম্পাদকীয় ১৯৪৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সিলেট থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক নওবেলাল’ পত্রিকায় পুনঃমুদ্রিত হয়। এরপর তমদ্দুন মজলিশের অধ্যাপক আবুল কাসেম পূর্বপাকিস্তানের মন্ত্রী হাবিবুল্লাহ বাহার ও নূরুল আমিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। পাকিস্তানের এসব ষড়যন্ত্রের বিপক্ষে বাঙালির ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে ১৯৫২ সালে।

 

পাকিস্তান সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা এক মাস ঢাকা শহরে সভা-মিছিল-সমাবেশের ওপর ১৪৪ ধারা জারি করে। মজলিশের রাজনৈতিক ফ্রন্টের আহ্বায়ক আবুল হাশিমের সভাপতিত্বে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সভায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু ছাত্রজনতা ১৪৪ ধারা অমান্য করার পাশাপাশি শোক পালন করতে থাকে। বেলা ১১টার দিকে ৩০ হাজার লোকের একটি মিছিল কার্জন হলের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। প্রথমে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে এবং একপর্যায়ে তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। ওই ঘটনায় সরকারি হিসাবে ৪ জনের মৃত্যু হয়।

 

 

পূর্বকোণ/জেইউ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট