চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মাতৃভাষার আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ২:২২ অপরাহ্ণ

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদদের বুকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। ছাত্র-তরুণদের এমন নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছিল পুরো দেশ। অথচ সে সময়ে ঢাকার এ সংবাদ পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়া সহজ ছিল না। সরকার নিয়ন্ত্রিত রেডিওতে সে সংবাদ প্রচার হয়নি।

ঢাকায় যে পত্রিকাগুলো প্রকাশিত হত তা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছাত প্রায় একদিন পর। সরকারি পত্রিকার বাইরে মাত্র একটি দুটি দৈনিক এবং সাপ্তাহিক ছিল স্বাধীন সংবাদ পরিবেশনে নিয়োজিত। তারপরও সংবাদপত্রগুলো সে সময়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। চায়ের স্টলে, দোকানে, রেলওয়েস্টেশনে সবাই মিলে পুরোনো সে পত্রিকা পড়া ও আলোচনা ছিল সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম উপায়। ভাষা আন্দোলনের পক্ষে সে সময় দেশজুড়ে দ্রুত গণজাগরণ সৃষ্টি করতে তাই বেশি সময় লাগেনি।

সংবাদ মাধ্যমের বাইরে একুশের ফেব্রুয়ারি ঢাকার রাজপথে ভাষার জন্য ছাত্রদের সে আত্মত্যাগ দেশে ছড়িয়ে পড়ার পেছনে বড় ভূমিকা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদেরও। নিজের অজ্ঞাতে তাদের সহযোগিতা করেছে সরকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়ন করত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ছাত্ররা।

নিজ এলাকায় তাদেরকে মর্যাদার চোখে দেখতোনা স্থানীয়রা। গুলিবর্ষণের পর পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে ছাত্রদের হল ত্যাগের জরুরি নির্দেশ দেয়। তল্পিতল্পা গুটিয়ে ছাত্রদের ফিরে যেত হয় নিজ নিজ এলাকায়, শহর কিংবা গ্রামে। ফিরে গিয়ে ভাষার জন্য আন্দোলনের সে রক্তক্ষয়ী ঘটনায় সরকারের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টি করেছেন এ ছাত্ররা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে দেশজুড়ে আন্দোলন ছড়িয়ে দিয়ে তাদের ভূমিকা ছিল অনেক বেশি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র খোরশেদ আলম তাঁর আত্মকথা গ্রন্থে লিখেছেন কিভাবে তিনি দৌলতকান্দি স্টেশনে পৌঁছে নিজ এলাকায় ভাষার জন্য আত্মত্যাগের সে সংবাদ সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। বিভিন্ন প্রাইমারি ও মিডল ইংলিশ স্কুলসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দিয়েছেন একুশের বার্তা। ভাষার জন্য ছাত্র-যুবকদের এ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা পেয়েছিলাম মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার অধিকার।

পূর্বকোণ/জেইউ

শেয়ার করুন