চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

বান্দাকে সম্মানিত করতেই লাইলাতুল কদর সমাগত

রায়হান আজাদ

৭ মে, ২০২১ | ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ

লাইলাতুল কদর বা কদরের রাত্রি হচ্ছে মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় নিয়ামত। ইসলামে এ রাত্রির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। পবিত্র কুরআনুল কারীমে এ রাত্রির গুরুত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা দিতে গিয়ে আল্লাহ পাক একটি  ছোট্ট সূরা নাযিল করেন। লাইলাতুল কদর রমজান মাসে হওয়ায় পুরো মাসের মর্তাবাও অনেকখানি বেড়েছে।

আল কুরআনের ৯৭নং সূরা সুরাতুল কদরে আল্লাহ  ইরশাদ করেন, ‘১. আমি একে (আল কুরআনকে) নাযিল করেছি লাইলাতুল কদরে। ২. হে নবী, আপনি কি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানেন? ৩. লাইলাতুল কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ রাত। ৪. এতে প্রত্যেক কাজের জন্য ফেরেশতাগণ এবং রূহ (জিব্রাইল আমীন) অবতীর্ণ হন তাঁর পালনকর্তার নির্দেশক্রমে। ৫. এ রাতের প্রত্যেকটি বিষয়ে রয়েছে শান্তি ; ভোরের উদয় পর্যন্ত এ রজনী বিদ্যমান থাকে।

এ সূরাটি নাযিলের একটি প্রেক্ষাপট রয়েছে। একদা হযরত নবী করীম (সা.) সাহাবীদের কাছে বনী ইসরাঈলের জনৈক মুজাহিদ সম্পর্কে আলোচনা করলেন, তিনি এক হাজার মাস পর্যন্ত আল্লাহর পথে জিহাদে মশগুল থাকেন। কখনো অলসতা পোষণ করেননি।

মুসলমানগণ এ কথা শুনে বিস্মিত হলে সুরা কদর নাযিল হয়। অন্য একটি বর্ণনা মতে, বনী ইসরাইলের চারজন ইবাদতগুজার ব্যক্তি প্রত্যেকে ৮০ বছর ধরে সর্বক্ষণ আল্লাহর ধ্যানে কাটান। এ কথা শুনে সাহাবাগণ বিস্ময় ও হতাশা ব্যক্ত করেন। তখন আল্লাহ কুরআন নাযিলের এ রাতকে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম ঘোষণা দিয়ে আলোচ্য সুরাটি নাযিল করেন।

লাইলাতুল কদর তথা ভাগ্য রজনীর শব্দগত তাৎপর্য নিয়ে দুটি মত রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, এখানে কদর অর্থ তাকদীর এবং আদেশ আর কেউ বলেছেন, কদর মানে মহাত্মা ও সম্মান। দুটি অর্থই বিশ্লেষণ করে বলা যেতে পারে যে, যে ব্যক্তি ইতিপূর্বে ইবাদত বন্দেগী করে কদর বা সম্মানের অধিকারী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে সে ব্যক্তি এ রাতে তাওবা-ইস্তিগফার এবং গভীর মনযোগ সহকারে ইবাদত করলে কদর বা সম্মানের অধিকারী হতে পারবে। এ রাতে পৃথিবীতে এত অসংখ্য ফেরেশতা আসেন যে পৃথিবীর ধারণ ক্ষমতা যেন সংকীর্ণ হয়ে পড়ে, এজন্য এ রাত্রকে ক্বদরের রাত্রি বলা হয়। এ রাত্রি নিয়ে আমাদের আরো অধ্যয়ন করতে হবে এবং সেটি তালাশের জন্য উঠে পড়ে লেগে যেতে হবে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট