চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ইতিকাফের গুরুত্ব ও সুন্নাত আমলসমূহ

রায়হান আজাদ 

৩ মে, ২০২১ | ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ

ইসলাম সর্বোত্তম ভারসাম্যপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। এখানে যেমন বৈরাগ্যবাদের স্থান নেই তেমনি আধ্যাত্মিক মনোনিবেশ ছাড়া আল্লাহর নৈকট্য লাভেরও সুযোগ নেই। আর স্রষ্টার সাথে গভীর সম্পর্ক সৃষ্টির সর্বোত্তম পদ্ধতি ইতিকাফ। ইতিকাফ আরবি শব্দ যার অর্থ অবস্থান করা।

সাধারণত মাহে রমজানের শেষ দশ দিন তথা নাজাত দশকে মুমিন বান্দা দৈনন্দিন কাজকর্ম ত্যাগ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য মসজিদে নিয়ত সহকারে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে। ইতিকাফ বিশ দিন কিংবা পুরো রমজান ব্যাপীও হতে পারে। নিয়ত সহকারে তিন দিন কিংবা একদিন মসজিদে অবস্থান করলেও ইতিকাফ হিসেবে ধর্তব্য হবে।

উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘ইন্তেকালের পূর্ব পর্যন্ত রমজানের শেষ দশকে নবী করীম (সা.) বরাবরই ইতিকাফ করেছেন। তার ওফাতের পর তার স্ত্রীগণ ইতিকাফ করতেন’।

মহল্লা বা সমাজের মসজিদে প্রতিনিধিত্বমূলকভাবে কয়েকজন ব্যক্তি ইতিকাফ পালন করলে সবার পক্ষ হতে এ সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে। মহিলারাও নিজেদের ঘরে নির্জন কক্ষে ইতিকাফ পালন করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, ধ্যান-জ্ঞান, ইবাদত- বন্দেগী  ও তাসবীহ-তাহলীলে যেন কোন ধরনের বিঘ্ন না ঘটে।

রাসুল (সা.) ইতিকাফ করে উম্মতের জন্য অনুপম দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। হযরত আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর নবী করীম (সা.) এর কাছে একবার সম্পূর্ণ কুরআন আবৃত্তি করা হতো। কিন্তু যে বছর তার ওফাত হয়, সে বছর দু’বার আবৃত্তি করা হলো। তিনি প্রতি বছর দশ দিন ই’তিকাফ করতেন। কিন্তু যে বছর তার ওফাত হয়, সে বছর বিশদিন ই’তিকাফ করলেন’। (বুখারী শরীফ)

হযরত আয়িশা (রা.) বর্ণিত একটি হাদীসে ইতিকাফের কতিপয় সুন্নাত আলোচিত হয়েছে। তা হচ্ছে- ‘১. ইতিকাফকারী পীড়িতের সেবা করবে না। ২. জানাজার নামাজে হাজির হবে না। ৩. স্ত্রীকে স্পর্শ কিংবা সহবাস করবে না। ৪. প্রাকৃতিক প্রয়োজন ছাড়া মসজিদের বাইরে যাবে না। ৫. রোজাদার ব্যতিত কেউ ইতিকাফ করবে না। ৬. জামে মসজিদ ছাড়া ইতিকাফ হয় না’।

তাই আসুন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতির লকডাউনে সম্ভব হলে মহল্লার জামে মসজিদে নতুবা বাসার একটি রুমে ইতিকাফের মতো আল্লাহর ইবাদতে নিজেদেরকে একনিষ্ঠভাবে নিয়োজিত করি।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট