চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ রোজাদারকে নিয়ে যায় মাগফিরাতের মনজিলে

রায়হান আজাদ 

১৯ এপ্রিল, ২০২১ | ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ

রমজান মাসের প্রতিটি দিবস যেমনি ধর্মীয় উপলক্ষ তেমনিভাবে রাত্রি বেলাও রোজাদারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দিনের বেলায় সিয়াম সাধনা আর রাত্রিকালীন নফল নামাজের মাধ্যমে রোজাদার আল্লাহ তা’য়ালার সান্নিধ্য লাভে সক্ষম হয়। হাদীস শরীফে এসেছে, ‘মান ক্বামা রমজানান ঈমানান ওয়া ইহতিছাবান গুফিরা লাহু মা তাকাদ্দামা মিন জনবিহি’ অর্থাৎ যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে রমজানে নামাজ আদায় করবে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। – (মেশকাত শরীফ) তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ নামাজ যদিও ফরজ নয়, তবু এ নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সীমাহীন। বান্দা আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য তাহাজ্জুদের বিকল্প নেই। মাহে রমজানে যেহেতু প্রতিটি নফলের জন্য ফরজের সাওয়াব দেয়া হয়, সেহেতু এই সময়ে তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ অত্যন্ত ফজিলত সমৃদ্ধ ইবাদত। তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ রোজাদারকে মাগফিরাতের মনজিলে নিয়ে যায়।

তারাবীহ নামাজ হানাফী মাযহাবের মতে, বিশ রাকাআত পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। প্রসিদ্ধ হাদীস সংকলন ছহি মুসলিম শরীফ থেকে জানা যায়, রাসুল সা. রমজান মাসে তারাবীহ নামাজ আদায়ে সাহাবীদেরকে বিশেষভাবে ঊৎসাহ দিয়েছেন। তবে এটি ফরজ হিসেবে নয়। তারাবীহ নামাজ পুরুষেরা মসজিদে জামায়াত সহকারে পড়তে পারে। চাইলে বিশেষ ব্যবস্থায় মহিলারাও মসজিদের জামায়াতে হাজির হতে পারে। তবে মহিলাদের বিনা জামায়াতে ঘরে পড়াই উত্তম।

অবশ্য এবছর জুমআ’সহ অন্যান্য নামাজের মতো তারাবীহ নামাজও নিজের অবস্থানস্থলে পড়তে হবে। দেশে মহামারী করোনা সংক্রমণ দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় জনস্বার্থে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই এ সিদ্ধান্ত মেনেই সবাই বাসা-বাড়িতে এ সুন্নাত নামাজ ব্যক্তিগতভাবে কিংবা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে জামায়াতে পড়া যাবে। এশার ফরজ ও সুন্নাতের পর থেকে সোবহি সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত তারাবীহ নামাজ পড়ার সময়। আমাদের দেশে দেখা যায়, পানাজাগানা ফরজ নামাজের চেয়ে তারাবীহর জামায়াতের গুরুত্ব অনেক বেশি দেয়া হয়-এটি ঠিক নয়। আমাদেরকে ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত-এ ধারাবাহিকতা অনুসারে যথাযথ তাকিদের সাথে শরীয়তের হুকমসমূহ পালন করতে হবে।

রমজান মাসে পুরুষদেরকে বিতরের নামাজ তারাবীহর সাথে জামায়াতে পড়তে হয়। পুরো রমজানে তারাবীহর মধ্যে কুরআন মজিদ খতম করা সুন্নাত। তবে অবশ্যই এটি হতে হবে ধীরে-সুস্থে, অর্থ ও ভাব বুঝার আগ্রহ নিয়ে। তাড়াহুড়া করে যেনতেনভাবে খতমে তারাবীহ পড়ার শরঈ কোন মূল্য নেই। কোন না কোন মসজিদে তারাবী’র ক্বিরাত এতই দ্রুত পড়া হয় যে মুকতাদিরা কোন কিছুই বুঝে উঠতে পারে না-এতে ইখলাছ নেই। সর্বাবস্থায় আল কুরআন তারতীলের সাথে ধীরে-সুস্থে পড়তে হবে। পবিত্র রমজান মাসে কুরআন তিলাওয়াতসহ অতিরিক্ত তাসবীহ, হামদ, পাঁচ কালেমা ইত্যাদি যত দু’আ ও যিকর জানা আছে তা উঠতে বসতে চলতে ফিরতে উচ্চারণ করা অতীব সাওয়াবের কাজ। গভীর রাতে নিবিড় মনে নামাজ আদায়ের পর দু’আ-দরুদ শেষে কান্নাকাটি করে বিনয়-নম্রতার সাথে মুনাজাত করলে আল্লাহ পাক তা কবুল করেন।

আসুন, আমরা রমজান মাসে ফরজ আদায়ের পাশাপাশি বেশি বেশি নফল নামাজ ও যিকর-আযকারের মাধ্যমে  ফয়জ-বরকত হাছিল করি। হে আল্লাহ! আমাদেরকে তৌফিক দান করুন। আমিন ॥

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট