চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কৃতজ্ঞ পেঙ্গুইন

মীম নোশিন নাওয়াল খান

৫ নভেম্বর, ২০১৯ | ১:৩৪ পূর্বাহ্ণ

একটা ছোট্ট পেঙ্গুইন পড়ে ছিলো সমুদ্রের ধারে পাথরের উপর। তার শরীর ছিলো তেলে মাখা, আর সে ছিলো খুব ক্ষুধার্ত ও মৃতপ্রায়। এমন অবস্থায় পেঙ্গুইনটিকে দেখে তাকে উদ্ধার করেন জোয়াও পেরেইরা ডি সুজা নামের এক ব্যক্তি।
ঘটনাটি ২০১১ সালের। ব্রাজিলের আইলহা গ্র্যান্ড আইল্যান্ডের প্রোভেটা গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। ৭১ বছর বয়সী ডি সুজা পেঙ্গুইনটিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। এক সপ্তাহ ধরে তার পালকে লেগে থাকা নোংরা পরিষ্কার করেন। তাকে যত্ন করে সুস্থ করে তোলেন। পেঙ্গুইনটার নাম দেন ‘ডিনডিম’। ডিনডিমকে তিনি সযতেœ ছেড়ে দিয়ে আসেন সমুদ্রে।
মজার ব্যাপার হলো, ডিনডিম কিন্তু চলে যায়নি। সে রয়ে যায় ডি সুজার সঙ্গে। ১১ মাস তার সঙ্গে কাটিয়ে সে ফিরে যায় নিজের আবাসস্থলের উদ্দেশ্যে।
ঘটনাটা এখানেই শেষ হওয়ার কথা। ডি সুজাও তাই ভেবেছিলেন। তিনি কখনো ভাবেননি পেঙ্গুইনটার সঙ্গে আবার তার দেখা হবে।
কিন্তু ব্যাপারটা পুরোপুরি উল্টো হয়ে গেলো। কী হলো জানো?
তাকে অবাক করে দিয়ে কয়েক মাস পর সেই দ্বীপে ফিরে এলো ডিনডিম। শুধু তাই নয়, উদ্ধারকারীর সঙ্গে থেকেও যায় সে।
ডি সুজা পেশায় জেলে। তাই সমুদ্রপাড়ে তাকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়নি ডিনডিমের জন্য। তাকে খুঁজে বের করে তার সাথেই বাড়ি ফিরে আসে ডিনডিম।
ডিনডিমের গতিবিধি লক্ষ্য করে জানা যায়, সে আর্জেন্টিনা ও চিলির উপকূলীয় অঞ্চলে যায় প্রজননের জন্য। প্রতি বছর ডি সুজার সঙ্গে দেখা করার জন্য পাঁচ হাজার মাইল পাড়ি দেয় সে।
এখন সে বছরে ৮ মাস থাকে ডি সুজার সঙ্গে আর বাকি সময়টা কাটায় আর্জেন্টিনা ও চিলির উপকূলীয় অঞ্চলে। প্রতি বছর জুন মাসে সে ব্রাজিলে আসে। ফিরে যায় ফেব্রুয়ারি মাসে। ডি সুজার মতে, পেঙ্গুইনটা তার সন্তানের মতোই।বন্ধুত্ব তো এমনই হয়।
সত্যিকারের বন্ধু কখনোই চলে যেতে পারে না। আর বন্ধুত্ব শুধু মানুষের সঙ্গেই হয় না। পশু-পাখিরও আমাদের মতোই মায়া-মমতা, ভালোবাসা আছে। সেটাই আরো একবার প্রমাণ করে দিয়েছে ডিনডিম।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট