চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

একুশের গান সৃষ্টির ইতিহাস

আহমেদ মনসুর

২৯ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:১৫ পূর্বাহ্ণ

একটা গান তোমরা সবাই শুনে থাকবে। গানটি ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ নামে পরিচিত। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে বাংলা ভাষার দাবিতে যখন এদেশের ছাত্র-জনতার উপর পুলিশের গুলি চালানোকে নিয়েই এ গানটি। এ গানে ফুটে উঠছে ৫২’র ভাষা আন্দোলনে শহীদদের মহান আত্মত্যাগের কথা। গানটি কে লিখেছিলেন, জানো? এ গানটি লিখেছিলেন আবদুল গফফার চৌধুরী। সেসময় তিনি ছিলেন ঢাকা কলেজের ছাত্র। পুলিশের গুলিতে সালাম বরকত, রফিক, জব্বারসহ আরও অনেকে হতাহত হলে, তাদের দেখতে ঢাকা মেডিকেলে যান আবদুল গফফার। ঢাকা মেডিকেলের গেটের সামনে তিনি একটি রক্তমাখা লাশ দেখতে পান। লাশটির মাথার খুলি বুলেটের আঘাতে উড়ে গিয়েছিল।

এ লাশটি ছিল ভাষাশহীদ রফিকের লাশ। লাশটি দেখে তার কাছে মনে হয়, এটা যেন তার নিজেরই ভাইয়ের রক্তমাখা লাশ। সঙ্গেসঙ্গে তার মনে গানের প্রথম দুইটি লাইন জেগে উঠে। পরে কদিনের মধ্যে ধীরে ধীরে তিনি গানটি লিখেন। গানটি প্রথম প্রকাশিত হয় একটি লিফলেটে। সেখানে ‘একুশের গান’ শিরোনামে কবিতা আকারে ছাপা হয়েছিল গানটি। ১৯৫৩ সালে ‘একুশে সংকলনে’ এটি স্থান পায়।

প্রথমে আবদুল লতিফ গানটিতে সুর করেন। তবে পরে আলতাফ মাহমুদের করা সুরটিই বেশি জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৫৪ সালের প্রভাত ফেরীতে প্রথম গাওয়া হয় আলতাফ মাহমুদের সুরে গানটি। এ সুরটিই এখন তোমরা সবখানে শুনে থাকবে।
এ গানটি এখন শুধু বাংলা ভাষার মানুষই না, সারা বিশ্বের মানুষও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। কারণ, একুশে ফেব্রুয়ারি এখন সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আর এই গানটি বর্তমানে হিন্দি, মালয়, ইংরেজি, ফরাসি, সুইডিশ, জাপানিসহ ১২টি ভাষায় গাওয়া হয়।

গানটির কয়েকটি লাইন ইচ্ছেঘুড়ির খুদে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী/আমি কি ভুলিতে পারি।/ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু গড়ায়ে ফেব্রুয়ারী/আমি কি ভুলিতে পারি।/আমার সোনার দেশের রক্তে জাগালো ফেব্রুয়ারী/আমি কি ভুলিতে পারি।/আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী/আমি কি ভুলিতে পারি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট