চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

আমরা অসুস্থ ও পচনশীল এ ছাত্র রাজনীতির বিপক্ষে

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ অক্টোবর, ২০১৯ | ২:৫২ পূর্বাহ্ণ

জাতীয়পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘দেশের শিক্ষাঙ্গণে যে ছাত্র রাজনীতির ধারা চলে আসছে সেটিকে কোন অবস্থাতেই আমরা সুষ্ঠু রাজনীতি বলতে পারি না। ছাত্র রাজনীতির এক সময় গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ছিল। ১৯৫২, ১৯৬২, ১৯৬৯ ও ১৯৭১ সালে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রচনা করেছিল ছাত্ররাই। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অকাতরে প্রাণ দিয়েছিলেন ছাত্ররাই। কিন্তু আমরা সেই ছাত্র রাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে হারিয়েছি। দেশের শিক্ষাঙ্গণে চলছে ছাত্র রাজনীতির নামে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি, হত্যাসহ নানা অপকর্ম। এই অসুস্থ তথাকথিত ছাত্র রাজনীতির কারণে প্রাণ দিতে হয়েছে বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে।

আমরা ছাত্র রাজনীতির বিপক্ষে নই। অসুস্থ ও পচনশীল তথাকথিত ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে। আমরা চাই ১৯৫২, ১৯৬২, ১৯৬৯ ও ১৯৭১ সালের সেই গৌরবোজ্জ্বল ছাত্র রাজনীতি আবার ফিরে আসুক। এজন্য দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে এক কাতারে আসতে হবে। তা না হলে আগামী প্রজন্মকে নৈতিক স্খলন থেকে বাঁচাতে পারবো না। এর দায়দায়িত্ব আমরা যারা রাজনীতি করি তাদের সবাইকে নিতে হবে। একই সাথে সমাজের সচেতন ব্যক্তিবর্গকে নিতে হবে। আসুন এখনো সময় আছে, আমাদের আগামী প্রজন্মকে এই কঠিন সংকট থেকে উদ্ধার করি।

আগে যারা ছাত্র রাজনীতি করতো তাদের মানুষ সম্মান করতো। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার বুকে তাজা রক্ত দিয়ে মায়ের ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাই তারা আজো বেঁচে আছেন এদেশের কোটি কোটি মানুষের মাঝে। ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী আইয়ুব খানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়সহ বাংলাদেশের ছাত্র সমাজ উৎখাত করেছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে পাকিস্তানী কারাগার থেকে মুক্ত করেছিলেন। তাঁর মুক্তির পর তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের ছাত্ররা। ১৯৭১ সালে ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাই প্রথম স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে অগণিত ছাত্র প্রাণ দিয়েছিলেন। এসব হচ্ছে ছাত্র রাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল অতীত। আমরা সেই ঐতিহ্য মন্ডিত গৌরবোজ্জ্বল ছাত্র রাজনীতি ফিরে পেতে চাই। যেখানে ব্যক্তি স্বার্থ নয়, জাতীয় স্বার্থ প্রাধান্য পাবে।

বিচ্ছিন্ন, বিক্ষিপ্তিভাবে যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করলে পরিস্থিতি সমাধান হবে না। আমাদেরকে সুষ্ঠু ছাত্র রাজনীতির ধারা প্রবর্তন করতে হবে। তাহলে কেবল এই অবক্ষয়ের হাত থেকে আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে পারবো।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট