চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘জুয়াড়ি ও মাদক ব্যবসায়ীদের দয়া সহানুভূতি দেখানোর সুযোগ নেই’

ক্লাব চালানোর জন্য জুয়ার প্রয়োজন নেই

একান্ত সাক্ষাতকারে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন

ইফতেখারুল ইসলাম

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১:২৭ পূর্বাহ্ণ

একসময় ক্লাবসমূহে তারকা খেলোয়াড় ছিল। তাদের টানেই দর্শকরা মাঠে খেলা দেখতে যেত। কিন্তু স্বনামধন্য ক্লাবসমূহ তাদের তারকা খেলোয়াড়দের ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ তারা খেলোয়াড়দের দিকে মনযোগ না দিয়ে জুয়াকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। কিন্তু জুয়া থেকে যে বিপুল পরিমাণ টাকা আয় হয়েছে তার কোন হিসাব নেই। সেই টাকা খেলোয়াড়দের পেছনে ব্যয় না করে নিজেদের পকেটে পুড়েছে। তাই এখন তারা জুয়ার পক্ষে সাফাই গায়।

স্পোর্টস ক্লাবসমূহের উপর জুয়াসহ নানা অনৈতক কর্মকা- ভর করার কারণ বলতে গিয়ে পূর্বকোণকে একান্ত সাক্ষাতকারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সহসভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন একথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেউ কেউ বলছেন, খেলোয়াড়দের ব্যয় নির্বাহ করার জন্য জুয়ার প্রয়োজন। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। ক্লাব চালানোর জন্য জুয়ার আসর প্রয়োজন নেই।
ক্লাবসমূহের লক্ষ্য উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ক্লাব করি নির্মল বিনোদনের জন্য। এর জন্য শক্তিশালী মাধ্যম ক্রীড়াঙ্গন। এটি পবিত্র অঙ্গন। এটিকে অপবিত্র করার অধিকার কারও নেই।

ক্লাবসমূহে ব্যয় নির্বাহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিজের সামর্থ্য ও শুভাকাক্সক্ষীদের থেকে নিয়ে ক্লাব পরিচালনা করবো। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত ক্রীড়াবান্ধব ব্যক্তিত্ব। দেশের ক্রিড়া জগতের উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে তিনি নানা প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছেন।

মেয়র বলেন, জুয়া এবং মদের আসর বসিয়ে, ক্যাসিনো বসিয়ে ক্লাব পরিচালনার কথা কোথাও নেই। সংবিধান ও ইসলাম ধর্মে জুয়া নিষিদ্ধ। এটা জায়েজ করার সুযোগ নেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রিয় ভাই শেখ কামাল যিনি অনেক বড় ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন, তাঁর নাম ব্যবহার করে জুয়ার আসর বসিয়ে ক্লাব চালাবে এটা কল্পনারও অতীত। কেউ কেউ সেই দুঃসাহস দেখিয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, এখানে বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ নেই। যারা জুয়ার বোর্ড বসাবেন তাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছেন। কেউ পার পাবে না।

ক্লাব চালাতে মদ-জুয়ার কোন প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে আ জ ম নাছির বলেন, তিনি পান-সিগারেট খান না। সেই ১৯৮৫ সাল থেকে ক্লাব চালাচ্ছেন কোন অসুবিধাতো হচ্ছে না। তিনি চট্টগ্রাম ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এবং এখন দীর্ঘদিন যাবৎ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এ ক্লাব অনেকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কোন জুয়ার প্রয়োজন হয়নি।
কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নগরীর ৪১ ওয়ার্ডে মাদক ব্যবসার মতো ঘৃণ্য পেশার সঙ্গে জড়িতদের তালিকা তৈরি করে প্রকাশ করা হবে। সামাজিকভাবে তাদের বয়কট করবো। তারা এ চট্টগ্রাম শহরে থাকতে পারবে না। কারণ তারা নিজেদের আর্থিক লাভের জন্য প্রজন্ম ও সমাজ ধ্বংস করছেন। তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের মাধ্যমে উন্নত, সমৃদ্ধ, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তারা যদি মেধাশূন্য হয়, বিপথগামী হয় তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে। জুয়াড়ি এবং মাদক ব্যবসায়ীদের দয়া, করুণা, সহানুভূতি দেখানোর সুযোগ নেই।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট