চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ফের সরকার গঠনের পথে মোদির বিজেপি ?

নিজস্ব প্রতিবেদক , ঢাকা অফিস

২০ মে, ২০১৯ | ২:৪১ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের জাতীয় নির্বাচন শেষ হল। গতকাল রবিবার নির্বাচন শেষে বুথ ফেরত জরিপের তথ্য হচ্ছে, আবারও জয়ী হতে চলেছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপি। এই জরিপ সঠিক হলে দ্বিতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। ভোটাররা ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে তাদের মতামত নিয়ে এসব জরিপ করা হয়ে থাকে। বিবিসি জানায়, গতকাল ভোট গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সপ্তম ধাপের নির্বাচন। ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে আগামী ২৩ মে। মোদির দলের জয় নিয়ে পূর্বাভাস দেওয়া হলেও বিশ্লেষকরা মনে করেন, অতীতেও অনেক জরিপ ভুল প্রমাণিত হওয়ার নজির রয়েছে। গত ১১ এপ্রিল শুরু হয় ৯০ কোটি ভোটারের দেশের নির্বাচন। মোট সাত ধাপ অনুষ্ঠিত হল এই ভোট। ভোটারদের নিয়ে করা চারটি জরিপে দেখা গেছে, বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক আল্যায়েন্স বড় জয় পেতে যাচ্ছে। ভবিষ্যদ্বাণী করা হচ্ছে যে কোনোভাবে বিজেপি ২৮০ থেকে ৩১৫টি আসন পাবে। যেখানে সরকার গঠনের জন্য দরকার ২৭২ আসন। টাইম নাও-ভিএমআর জরিপের বরাতে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন জোট-এনডিএ পেতে যাচ্ছে ৩০৬টি আসন। জরিপ আরও বলছে, ইউনাইটেড

প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স-ইউপিএ পাবে ১৩২টি আসন। তবে এসব জরিপের বিষয়ে নেতারা কোন মন্তব্য করেননি। বিরোধী নেতারা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন, তাদের মধ্যে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা।
আন্তর্জাতিক জরিপকারী সংস্থা আইপিএসওএস ও দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ১৮ এর বুথ ফেরত জরিপে দেখা গেছে প্রথম ছয় দফার ৪৮৩ আসনের মধ্যে ২৯২ থেকে ৩১২ টি আসনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট জয়ী হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, দেশটির অপর প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি মনে করছে, জরিপ সংস্থা রিপাবলিক সি-ভোটার তাদের বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল বিজেপি আবারও ক্ষমতায় আসছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। তাদের জরিপের ফলাফলে বলা হয়েছে, ৫৪৩ আসনের লোকসভায় ৩ শতাধিক আসনে জয়ী হতে পারে বিজেপি। পাশাপাশি রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এবং মিত্ররা ১২৮ আসনে জয় পেতে পারে। ভারতের এবারের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ৯০ কোটি ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। সাত দফার এ নির্বাচনে প্রায় ১০ লাখ ভোটকেন্দ্র তৈরি করা হয়।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ম্যারাথন ভোটযজ্ঞ শুরু হয়েছিল গত ১১ এপ্রিল। প্রথম দফার ভোটে ভোটদানের হার ছিল ৬৯.৪৩ শতাংশ। ১৮ এপ্রিল দ্বিতীয় এবং ২৩ এপ্রিল তৃতীয় দফায় ৬৬ শতাংশ ভোট পড়ে। ২৯ এপ্রিল চতুর্থ দফায় ভোটদানের হার ছিল ৬৪ শতাংশ। ৫৭.৩৩ শতাংশ ভোট পড়ে পঞ্চম দফায়। ৬৩.৩ শতাংশ ভোট পড়েছে ষষ্ঠ দফার ভোটে।
অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রবক্তা এনডিএ-র। ১৯৯৬ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর আহ্বানে গড়ে উঠেছিল এই জোট। ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বাজপেয়ীর প্রধানমন্ত্রিত্বে এই জোটের সরকার ছিল। তার পর ২০১৪ সালে অর্থাৎ গত লোকসভা ভোটে ফের সরকার গঠন করে এই জোট। তবে গত পাঁচ বছরে অন্যতম বড় শরিক অন্ধ্রপ্রদেশে তেলুগু দেশম পার্টি জোট ছেড়েছে। বর্তমানে এই জোটের শরিক মহারাষ্ট্রের শিবসেনা, তামিলনাড়–র এডিএমকে, বিহার-ঝাড়খ-ে নীতীশ কুমারের জেডিইউ এবং রামবিলাস পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টির পাশাপাশি পঞ্জাবের শিরোমণি অকালি দলও রয়েছে।
অন্যদিকে ইউপিএ জোট শুরু হয় ২০০৪ সালে। তৎকালীন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বে ওই বছর লোকসভা ভোটের আগেই অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে গড়ে ওঠে এই জোট। সেই জোটের নেতৃত্বেই পর পর দু’বার ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রে সরকার গঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী হন মনমোহন সিংহ। বর্তমানে এই জোটে রয়েছে মহারাষ্ট্রে শরদ পাওয়ারের নেতৃত্বে ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি, তামিলনাড়–তে ডিএমকে, বিহার-ঝাড়খ-ে লালুপ্রসাদ যাদবের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরজেডি), কর্নাটকের জনতা দল সেকুলার এবং জম্মু কাশ্মীরে ফারুক আবদুল্লার নেতৃত্বে ন্যাশনাল কনফারেন্স। কর্নাটকে এই জোটের সরকার রয়েছে। পাশাপাশি কয়েক মাস আগেই মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে কংগ্রেসকে সমর্থন করেছে বহুজন সমাজ পার্টি এবং সমাজবাদী পার্টি। ফলে ভোটের ফল ঘোষণার পর আরও কয়েকটি দল তাঁদের জোটে শামিল হবেন বলে আশা এই জোটের নেতৃত্বের।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট