মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা শুরু হয়েছে। রোহিঙ্গা গণহত্যা নিয়ে গাম্বিয়ার করা মামলায় আদালতের এখতিয়ার নেই বলে যে দাবি করেছে মিয়ানমার আন্তর্জাতিক বিচার আদালত তা প্রত্যাখ্যান করেছে। আর গাম্বিয়া মিয়ানমারকে যে নোট ভারবাল দিয়েছিল তা বিরোধের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণযোগ্য বলেও মন্তব্য করেছেন আদালত।
এদিকে রায় পড়ার সময় আদালত জানিয়েছেন, গাম্বিয়া নিজেদের নামে আবেদন করেছে। তারা চাইলে ওআইসি বা যেকোনো সংস্থা অথবা যেকোনো দেশের সহযোগিতা চাইতে পারে। গাম্বিয়া চাইলে তাদের মামলা চালিয়েও যেতে পারে।
মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চলছে এমন অভিযোগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা করে গাম্বিয়া। মামলায় বলা হয়, মিয়ানমার ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে।
গত বছরের নভেম্বরে আইসিজেতে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে মামলাটি দায়ের করেছিলো পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। গাম্বিয়া মুসলিম দেশগুলোর জোট অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের (ওআইসি) পক্ষে এই আইনি প্রক্রিয়ার উদ্যোগ নেয়। মামলায় সমর্থন দিতে ওআইসি তার ৫৭ সদস্য দেশকে উৎসাহিত করেছিলো।
পরবর্তীতে গত বছরের ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর আইসিজেতে এই মামলার শুনানি হয়। এতে গাম্বিয়া ও মিয়ানমারের আইনজীবীরা অংশ নিয়েছিলেন। শুনানি চলাকালে গাম্বিয়ার নেতৃত্ব ছিলেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু। মিয়ানমারের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। সে সময় তিনি রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। ২০১৭ সালে রাখাইনে সেনা অভিযানকালে কিছু সেনা আইন লঙ্ঘন করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন সু চি। অপরদিকে গাম্বিয়া রোহিঙ্গা গণহত্যা ও সহিংসতা বন্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে অন্তর্বর্তী নির্দেশের দেওয়ার অনুরোধ করে।
গত ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর ৩ দিনব্যাপী নেদারল্যান্ডসের হেগে ওই মামলার শুনানি হয়। এতে মিয়ানমারের পক্ষে স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি অংশ নেন। অন্যদিকে গাম্বিয়া মিয়ানমারের প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখা যায় না বলে জানায়। তারা রোহিঙ্গা গণহত্যা ও সহিংসতা বন্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে অন্তর্বর্তী নির্দেশের দেওয়ার অনুরোধ করে।
পূর্বকোণ/পিআর