চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা কেরালার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৪ জানুয়ারি, ২০২০ | ২:০০ অপরাহ্ণ

ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনকে (সিইএ) অসাংবিধানিক ঘোষণা দিয়ে সুপ্রিমকোর্টে মামলা করেছেন কেরালা রাজ্য সরকার।

ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে, এই যুক্তিতে আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কেরালা সরকার। খবর এনডিটিভির।

দেশের প্রথম রাজ্য হিসাবে এই বিতর্কিত আইনকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হল সে রাজ্যের সরকার। সুপ্রিম কোর্টে ইতিমধ্যেই এই আইনটির বিরুদ্ধে ৬০টিরও বেশি আবেদন জমা পড়েছে। কেরালার বাম নেতৃত্বাধীন সরকার নিজেদের আবেদনে জানিয়েছে যে, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সাম্যের অধিকার সহ সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। পাশাপাশি তাঁরা আরও বলেছে যে এই আইনটি সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতির পরিপন্থী।

কেরালার রাজ্য সরকার পাসপোর্টের (ভারতে প্রবেশের অনুমতিপত্র) সংশোধনী ২০১৫ অনুযায়ী নিয়মগুলি এবং বৈদেশিক (সংশোধন) আদেশ ২০১৫-এর বৈধতাকেও চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। ওই নিয়ম অনুযায়ী, ২০১৫ এর আগে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে যে অমুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা ভারতে প্রবেশ করেছে তাদের ভারতে থাকার বিষয়েও অনুমতি দেয়।

এর আগে বিভিন্ন রাজ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়েছে। এ রাজ্যেও এই বিতর্কিত আইনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এই প্রথম কোনও রাজ্য সরকার এই আইনের বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হল, এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম উদাহরণ তৈরি করল কেরালার বিজয়ন সরকার।

কেরালা সরকার দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আর্জি জানিয়েছে যে সিএএ সংবিধানের ১৪, ২১ এবং ২৫ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতার একটি নিদর্শন এই রাজ্য। স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই– আমাদের রাজ্যে কোনো ডিটেনশন ক্যাম্প করতে দেব না।

এ রাজ্যে গ্রিক, রোমান, আরবি, খ্রিস্টান, মুসলিম– সব সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রে বাস করছেন। এটি আমাদের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যকে কখনই নষ্ট হতে দেব না।

যদিও সংবিধানের ১৪ অনুচ্ছেদে সাম্যের অধিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে। সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে “আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত পদ্ধতি ছাড়া কোনও ব্যক্তি জীবন বা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হবে না”। এদিকে ২৫ নং অনুচ্ছেদের অধীনে বলা হয়েছে “সমস্ত ব্যক্তি বিবেকের স্বাধীনতার জন্য সমানভাবে অধিকারী।”

বেশ কয়েকটি অ-বিজেপি সরকার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োগে বাধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। আর সেই লক্ষ্যেই ওই রাজ্যগুলিতে এনআরসি কার্যকর করতেও অস্বীকার করেছে তারা।

এদিকে গতকাল (সোমবার) সিএএ এবং এনপিআর সহ এনআরসিরও বিরোধিতায় এক বৈঠক করে দেশের বিভিন্ন বিরোধী দলগুলি। ওই বিরোধী বৈঠকে যে ২০ টি দল অংশ নিয়েছে তারা সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সমস্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাদের রাজ্যে জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ বাস্তবায়ন করতে দিতে অস্বীকার। তাদের অবশ্যই নিজেদের রাজ্যে জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধন প্রক্রিয়াও স্থগিত করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বৈঠকে।

 

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন