চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

ফ্রান্সের তিনগুণ আয়তনের সমুদ্রনাশী প্লাস্টিকের স্তূপ

পূর্বকোণ ডেস্ক

১৬ মে, ২০১৯ | ১২:৫৪ অপরাহ্ণ

প্রতি বছর সবচেয়ে বেশি প্লাস্টিক জমা হয় বিশ্বের বিভিন্ন সমুদ্রে। আর সেটা এতটাই মাত্রা ছাড়া যে সম্প্রতি হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ এবং ক্যালিফোর্নিয়ার মাঝের বিস্তৃত অংশে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন ‘গ্রেট প্যাসিফিক গারবেজ প্যাচ’। যা আয়তনে টেক্সাসের দ্বিগুণ এবং ফ্রান্সের তুলনায় তিনগুণ বড়।

দ্য ওয়াল ব্যুরো-

মানবজাতির মধ্যে সচেতনতা বাড়ার বদলে বরং দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে প্লাস্টিকের ব্যবহার। হাজার চেষ্টা করেও বন্ধ করা যাচ্ছে না এই মারণ জিনিসের ব্যবহার। একটি রিপোর্টে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, প্যাসিফিক গারবেজ প্যাচের উপর যত প্লাস্টিক ভেসে থাকে তার ওজন প্রায় ৫০০টি জাম্বো জেটের সমান। ওজনে এই বর্জ্য প্রায় ৮০ হাজার টন। পরিমাণ প্রায় ১.৮ ট্রিলিয়ন।

গবেষণা বলছে, প্রতি বছর নদীর জলের সঙ্গে ভেসে এসে ১.১৫ থেকে ২.৪১ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক জমা হয় বিশ্বের বিভিন্ন সমুদ্রে। আর সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি প্লাস্টিক জমা হয়েছে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ এবং ক্যালিফোর্নিয়ার মাঝের বিস্তৃত অংশে। এই প্লাস্টিকের স্তূপের নামই বিজ্ঞানীরা দিয়েছেন ‘গ্রেট প্যাসিফিক গারবেজ প্যাচ’। ফ্রান্সের তুলনায় এই গারবেজ প্যাচের আয়তন তিনগুণ বড়। এমনকি আয়তনে এটি টেক্সাসেরও দ্বিগুণ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আমেরিকার তিনটি বৃহত্তম শহরের মধ্যে অন্যতম হলো টেক্সাস। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই আঁতকে উঠছেন বিশ্ববাসী।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, দিনদিন এই নন-ডিগ্রেডেবল প্লাস্টিকের পরিমাণ প্যাসিফিক গারবেজ প্যাচে বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক পরিমাণ প্লাস্টিকের ঘনত্ব জলের তুলনায় বেশি। ফলে সমুদ্রের বুকে জমা হলেও যেহেতু এ জাতীয় প্লাস্টিক জলে ডুবে বা মিশে যায় না, ফলে খোলা জায়গায় সূর্যের তাপে নানা বিক্রিয়ার মাধ্যমে এরা মাইক্রোপ্লাস্টিক জাতীয় জিনিসে ভেঙে যায়। আর প্লাস্টিকে থাকা অণু-পরমাণু একবার ভাঙতে শুরু করলে পরিবেশের জন্য তা হয়ে দাঁড়ায় আরও ক্ষতিকর। সমগ্র সামুদ্রিক ইকোসিস্টেমের জন্য ত্রাস হয়ে যায় এই মাইক্রোপ্লাস্টিক। সমুদ্রের মর্মান্তিক পরিণতি ঘটাবে এই ‘গ্রেট প্যাসিফিক গারবেজ প্যাচ’।

বহু বছর ধরে চলা অসংখ্য গবেষণার ফলে দেখা গিয়েছে, প্রায় ৭০০ ধরণের সামুদ্রিক প্রজাতি প্রতিনিয়ত (সামুদ্রিক ধ্বংসাবশেষ)-এর সংস্পর্শে আসে যার মধ্যে ৯২ শতাংশ প্রাণীই এই ক্ষতিকর প্লাস্টিকের সংস্পর্শেই থাকে।বিভিন্ন জলজ প্রাণী এবং মাছেরা এইসব প্লাস্টিককে নিজেদের খাবার ভেবে ভুল করে। আর দিনের পর দিন খাবার ভেবে প্লাস্টিক খাওয়ার ফলে বেঘোরে মারা যায় বহু মাছ এবং সামুদ্রিক প্রাণী। কারণ জমা জঞ্জালের মধ্যে প্রায় ৮৪ শতাংশ আবর্জনাই থাকে মারাত্মক বিষাক্ত। আর এই বিষ শরীরে প্রবেশ করলে মৃত্যু অবধারিত। এমনকী এই প্লাস্টিকের কারণে বিলুপ্তির পথেও পৌঁছে যায় সামুদ্রিক ইকোসিস্টেমের বেশ কিছু প্রাণী।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট