চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

৬ মাসে ব্যাংক জালিয়াতির পরিমাণ ৬ হাজার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২০ নভেম্বর, ২০১৯ | ৬:৫৫ অপরাহ্ণ

ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে ৯৫ হাজার ৭শ’ কোটি রুপিরও বেশি প্রতারণা হয়েছে। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৫ হাজার ৭৪৩টি প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাজ্যসভায় এ কথা জানিয়েছেন। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে রাজ্যসভায় অর্থমন্ত্রী জানান, সরকার ব্যাংকগুলোতে প্রতারণা ঠেকাতে  ইতিমধ্যেই সার্বিকভাবে কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। বিভিন্ন নিষ্ক্রিয় সংস্থার ৩ লাখ ৩৮ হাজার হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে বিগত দুই অর্থবছরে। এর পাশাপাশি বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত ব্যক্তিদের সম্পত্তিও।

ভারতে বেশ কিছুদিন ধরেই একের পর এক প্রতারণার ঘটনা উদ্‌ঘাটিত হচ্ছে। এতে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে ব্যাংকের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা- সিবিআই সম্প্রতি ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনায় নতুন করে মামলা করেছে ৪২টি। প্রতারণার অঙ্কটা বেশ বড়সড় যার মোট পরিমাণ ৭ হাজার ২শ’ কোটি রুপি। আর ওই অর্থের তদন্তের স্বার্থে দেশের ১শ ৮৭টি জায়গায় তল্লাশিও চালিয়েছে তারা।

মোট ১৫টি ব্যাংক জালিয়াতির শিকার হয়েছে। তালিকায় থাকা ব্যাংকগুলো হলো- স্টেট ব্যাংক, পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক (পিএনবি), দেনা ব্যাংক, কানাড়া ব্যাংক, ব্যাংক অব বারোদা, ব্যাংক অব মহারাষ্ট্র, এলাহাবাদ ব্যাংক, সেন্ট্রাল ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, আইডিবিআই ব্যাংকসহ প্রায় সব ব্যাংক। এদের মধ্যে অন্যতম শুধু পিএনবি’রই রয়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকার জালিয়াতি। পিএনবি-তে জালিয়াতির ঘটনাটিই ভারতের ব্যাংক পরিচালনার অনেক ত্রুটি সামনে নিয়ে এসেছে।

ব্যাংকগুলো এখন ঋণ দিতেও সাহস পাচ্ছে না। একইসাথে যত জালিয়াতি ধরা পড়েছে, তত উদ্বেগও বেড়েছে ব্যাংকিং মহলে।  সাধারণ মানুষও হয়ে পড়েছে উদ্বিগ্ন। এর মধ্যে অনুৎপাদনশীল সম্পদের জেরে বহু ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য খারাপ।

বিভিন্ন ব্যাংকঋণ ঝুঁকিমুক্ত করাসহ এসব কারণে নেয়া হয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে ৬ মাসের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার প্রতারণার ঘটনা—ব্যাংকিং ব্যবস্থার দক্ষতা নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। আমজনতার সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধে প্রশ্নবিদ্ধ হলো ব্যাংকগুলোর পদক্ষেপের কার্যকারিতাও।

ব্যাংকে এই পরিস্থিতিতে  গ্রাহকের আমানতের ওপর বিমার সুরক্ষাকবচ আরও সংহত করার দাবি তুলেছে রিজার্ভ ব্যাংকের কর্মী ইউনিয়ন। অভিযোগ রয়েছে, এ ব্যাপারে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো থেকে পিছিয়ে আছে ভারত। তাই ইউনিয়নের নেতারা গ্রাহকের স্বার্থরক্ষার প্রশ্নে ন্যূনতম ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক জমাকে বিমার আওতায় আনার দাবি তুলেছেন। পাশাপাশি দাবি তোলা হয়েছে সব শহুরে সমবায় ব্যাংককে (আরবান কোঅপারেটিভ ব্যাংক) পুরোপুরি রিজার্ভ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে আনার।

ব্যাংকগুলোকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত রাখতেই তাদের প্রতিটি বিষয়ে শীর্ষ ব্যাংকের কর্তৃত্ব জরুরি বলে ব্যাংকিং মহলের একাংশের যুক্তি রয়েছে।

পূর্বকোণ/রাশেদ

শেয়ার করুন