সাবেক গৃহযুদ্ধকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী গোটাবায়া রাজাপাকসে (৭০) শ্রীলঙ্কার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে রয়েছেন।
রাজাপাকসে নির্বাচনের জয় দাবি করেছেন এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাজিথ প্রেমাদাসা পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন, কিন্তু সরকারিভাবে ফলাফল নিশ্চিত করা হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।
শ্রীলঙ্কার নির্বাচনী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচনে ৮০ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছে।
দেশটির ভোটের কমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এক চতুর্থাংশ ভোট গণনার পর রাজাপাকসে ৪৮ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন এবং প্রেমাদাসা ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়ে তাকে অনুসরণ করছিলেন।
চূড়ান্ত গণনা শেষে রাজাপাকসে ৫৩ থেকে ৫৪ শতাংশ ভোট পাওয়ার আশা করছেন বলে তার মুখপাত্র জানিয়েছেন। তার এ মন্তব্যের কিছুক্ষণ পরই প্রকাশ্যে পরাজয় মেনে নেন সাজিথ প্রেমাদাসা।
“জনগণের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে শ্রীলঙ্কার সপ্তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় গোটাবায়া রাজাপাকসেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি,” প্রেমাদাসা এমনটি বলেছেন বলে তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে একটি আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা।
রবিবার স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় সরকারিভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার ‘আশা’ করছেন বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান।
এপ্রিলে ইস্টার সানডে পরবের দিন কয়েকটি গির্জা ও হোটেলে একযোগে চালানো আত্মঘাতী হামলায় ২৫০ জন নিহত হওয়ার কয়েক মাস পর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। ওই হামলার জেরে দেশটির পর্যটন শিল্প ও বিনিয়োগে স্থবিরতা নেমে এসেছে। এতে ১৫ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে পড়েছে শ্রীলঙ্কা।
এই পরিস্থিতিতে শনিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লাখ লাখ শ্রীলঙ্কান তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। নতুন প্রেসিডেন্ট এই সংকট থেকে দেশকে বের করে নিয়ে আসবেন বলে আশা তাদের।
ইস্টার সানডের হামলার পর সমালোচনার মুখে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। বিডিনিউজ
১০ বছর আগে গোটবায়া রাজাপাকসের ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ওই সময় শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোটাবায়া। তাদের সময়েই তামিল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সামরিক পরাজয় ঘটার মধ্যে দিয়ে বহু বছর ধরে চলা রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধের অবসান হয়।
তামিল বিদ্রোহীদের পরাজিত করায় সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন গোটাবায়া রাজাপাকসে। মহিন্দা রাজাপাকসে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গোটাবায়া তাদের দল ফ্রিডম পার্টির প্রধান হিসেবে আছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি শক্তিশালী নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট ৩৫ জন প্রার্থী ছিলেন। ২০০৯ সালে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এটি শ্রীলঙ্কার তৃতীয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
পূর্বকোণ/পিআর