চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

অযোধ্যার বির্তকিত জমিতে মন্দির, মসজিদ নির্মাণে আলাদা জায়গা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

৯ নভেম্বর, ২০১৯ | ১:০৫ অপরাহ্ণ

ভারতের অযোধ্যার বিতর্কিত জমি মন্দির নির্মাণের জন্য তুলে দিতে হবে সরকারি ট্রাস্টের হাতে, এবং শহরের “উপযুক্ত” ৫ একর জমি দিতে হবে মুসলিমদের, অযোধ্যা মামলার রায়ে জানাল সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়দানের মধ্যে দিয়েই শেষ হল দীর্ঘদিনের ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুটি। সর্বসম্মত রায়দান করল সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক সাংবিধানিক বেঞ্চ। দেশজুড়ে নিরাপত্তার কড়াকড়ি করা হয়েছে এবং শান্তিরক্ষার আবেদন জানানো হয়েছে। অযোধ্যার জমির অংশ নিয়ে দীর্ঘদিনের আইনি লড়াই, যেখানে ১৬ শতকের বাবরি মসজিদ ছিল, যেটি হিন্দু সংগঠনের কর্মীরা ভেঙে দেন, তাঁদের বিশ্বাস সেই জায়গাটি ভগবান রামচন্দ্রের জন্মভূমি । 

৪০ দিনের দৈনিক শুনানি করে প্রধানবিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ। বেঞ্চের অন্যান্য সদস্যরা হলেন, বিচারপতি এসএ বোবদে, বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি এস আব্দুল নাজির। শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা  পরিস্থিতি নিয়ে সেরাজ্যের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানবিচারপতি রঞ্জন গগৈ। উত্তরপ্রদেশে মোতায়েন করা হয়েছে অন্তত ১২,০০০ নিরাপত্তাকর্মী। অযোধ্যা মামলা রায়দানকে কেন্দ্র করে বহু রাজ্যে স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখা হয়, উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি ও রাজস্থানের স্কুল কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে।

শুক্রবার একাধিক টুইটে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বার্তা দেন, “অযোধ্যার রায় কারও জয় বা পরাজয় নয়”, পাশাপাশি তিনি বলেন, সম্প্রীতিরক্ষা করা দেশের নাগরিকদের প্রধান কর্তব্য। অন্য একটি ট্যুইটে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, “ আমি দেশবাসীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি, অযোধ্যা মামলার রায়ের পর আমাদের শান্তি ও সম্প্রীতির ঐতিহ্য যেন বজায় থাকে। অযোধ্যা রায় উপলক্ষ্যে, বহু মানুষের চেষ্টা রয়েছে, এবং অনেক সংগঠনের তরফে সম্প্রীতি রক্ষার আহ্বান ও চেষ্টা চালানো হয়েছে। অযোধ্যা মামলার পরেও আমাদের সৌর্হাদ্য রক্ষা করতে হবে”।

অযোধ্যা মামলার রায়দানকে কেন্দ্র করে পাঁচ বিচারপতির নিরাপত্তা বাড়িয়েছে সরকার। যে কোনওরকম জরুরি অবস্থা সামালা দিতে, অযোধ্যা এবং লখনউ তে দুটি হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দিল্লিতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

অযোধ্যায় ২.৭৭ একর বিতর্কিত জমির দাবি করে হিন্দু ও মুসলিম, দুই পক্ষই। ১৯৮০ থেকে এই মামলাটি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্ব পেয়েছে। ওই জায়গায় রামমন্দির তৈরি করতে চায় হিন্দু সংগঠন, মুসলিমদের তরফে বলা হয়েছে, সেই জায়গায় মন্দির থাকার কোনও প্রমাণ নেই। ১৯৯২-এ বাবরি মসজিদ ভেঙে দেয় দক্ষিণপন্থী আন্দোলনকারীরা, তাদের বিশ্বাস পুরানো মন্দির ভেঙে দিয়ে সেই জায়গায় মসজিদ গড়ে তোলা হয়েছে, যে জায়গাটি ছিল ভগবান রামচন্দ্রের জন্মভূমি।

২০১০ এর সেপ্টেম্বরে এলাহাবাদ হাইকোর্ট বিতর্কিত জমিটিকে তিনভাগে ভাগ করে দেয় সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহি আখরা এবং রাম লালার মধ্যে। তবে এই রায়ে অসন্তুষ্ট হয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় তিনপক্ষই।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন