জাপানে ৬০ বছরের মধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় সুপার টাইফুন হাগিবিসের আঘাতে  মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৩ জনে দাঁড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে।

টাইফুনের তাণ্ডবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে নিখোঁজদের সন্ধান বুধবারও অব্যাহত আছে বলে জানায় জাপানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এনএইচকে। খবর জাপান টাইমসের।

টাইফুনের সময় প্রবল বৃষ্টিপাতে নদ-নদীর পানি বেড়ে সৃষ্ট বন্যার পানিতে ডুবে অনেকের মৃত্যু হয় বলে এনএইচকে জানিয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় টাইফুন হাগিবিসে জাপানের প্রধান দ্বীপ হনশুর পূর্ব উপকূল দিয়ে স্থলে উঠে এসে দেশটির মধ্য ও পূর্বাঞ্চলজুড়ে তাণ্ডব চালায়।

ঝড়ের তিন দিন পর এখনও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি। জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

৬০ বছরের মধ্যে জাপানে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী এ টাইফুনটির কেন্দ্র সরাসরি রাজধানী টোকিওর ওপর দিয়ে এগিয়ে যায়।

টাইফুন হাগিবিসে ২২০ জন আহত হওয়ার পাশাপাশি এটি আঘাত হানার প্রায় চার দিন পর এখনও ১২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। হনশু দ্বীপের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ৫২টি নদীর পানি বেড়ে বন্যা হয়েছে।

টোকিওর উত্তরে ফুকুশিমা অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি হতাহত ও ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। অঞ্চলটির বাসিন্দারা বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত আসবাবপত্র ও আবর্জনা রাস্তায় এনে জড়ো করতে শুরু করেছেন। নিজেদের বাড়ি পরিষ্কার করতে অক্ষম অনেক বৃদ্ধ এখনও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে রয়ে গেছেন।

হিরাইয়ামা নামে এক ভুক্তভোগী জানান, তার বাড়ি সাড়ে ছয় ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়, তাকে ও তার ছেলেকে নৌকাযোগে উদ্ধার করে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।

টাইফুনের পুরো সময়টি তার স্ত্রী ও নাতি আত্মীয়দের আশ্রয়ে ছিলেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

বন্যার তোড়ে তার সব সবজি বাগান ধ্বংস হয়ে গেছে এবং তার সব কৃষি সরঞ্জাম ভেসে গেছে জানিয়েছেন এ ৭০ বছর বয়সী ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে আক্রান্তদের সহায়তায় হাজার হাজার পুলিশ, দমকলকর্মী, কোস্টগার্ড ও সেনাসদস্য কাজ করছে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, উদ্ধারকর্মীরা বন্যায় গৃহহীনদের বেশি গুরুত্ব দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করবে।দুর্যোগের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকার ৬৫ লাখ ডলার ব্যয় করবে বলে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে জানিয়েছেন।

পূর্বকোণ/পিআর