চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

নিজ গ্রামে যেতে পারছেন না মিয়ানমারে ফেরা রোহিঙ্গারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৪ অক্টোবর, ২০১৯ | ৫:৪৩ অপরাহ্ণ

স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া ৩০০ রোহিঙ্গা এখনও নিজেদের গ্রামে যেতে পারছেন না। তারা বিভিন্ন সময় দেশটির রাখাইন রাজ্যে ফিরে গেছেন। তবে এখনও সেখানে বসবাসের পরিবেশ তৈরি হয়নি। অন্যদিকে নিজের গ্রামে বসতভিটায় যাওয়ার সুযোগও তাদের দিচ্ছে না মিয়ানমার সরকার। গত শুক্রবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রেডিও ফ্রি এশিয়ার বিশেষ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। তবে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার। ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে জাতিগত নিধনযজ্ঞ শুরু করে। প্রাণভয়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। ইনু নামের এক রোহিঙ্গা জানান, তিনি ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বালুখালী ক্যাম্প ত্যাগ করে মিয়ানমার যান। কিন্তু রাখাইনে গেলেও নিজ গ্রামে যেতে পারছেন না তিনি। বহু কষ্টে পাঁচ সদস্যের পরিবারের জন্য খাবার সংগ্রহ করে যাচ্ছেন। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নিতে এখনও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি মিয়ানমার সরকার। বরং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার কোনো অগ্রগতি না হওয়ার দায় বাংলাদেশের ওপর চাপিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে গত আগস্টে মিয়ানমার সরকার বলেছিল, তারা তিন হাজার ৪৫০ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে সম্মত। কিন্তু মিয়ানমারে নিরাপত্তা ও অনুকূল পরিবেশ নেই বলে ওই সময় রোহিঙ্গাদের কেউ ফিরতে রাজি হয়নি। তবে সম্প্রতি ফিরে গেছেন ২৬ রোহিঙ্গা। তারা কেউ প্রত্যাবাসন চুক্তি অনুযায়ী সেখানে যায়নি। ইনু বলেন, নিজে ব্যবস্থা করে মিয়ানমারে ফিরেছেন তিনি। তিনি ও তার পরিবার অস্থায়ী শিবিরে ছিলেন না। ফেরার দিনই তাদের মংডুতে নিয়ে গেছে রাখাইন সরকার। কিন্তু তারা নিজ গ্রাম কিচংয়ে ফিরে যেতে চান। কিন্তু তা সম্ভব নয়। কারণ সরকার বলছে, সেখানে এখন কোনো রোহিঙ্গা থাকে না।

মাহমুদ শারি নামে আরেক রোহিঙ্গা গত বছর মিয়ানমারে ফিরে যান। তিনি জানান, ‘বাংলাদেশে ২৬, ২৭ ও ২৮ নম্বর ক্যাম্পের শরণার্থীরাই শুধু প্রত্যাবাসন চুক্তির ব্যাপারে জানে। তবে যারা সেখান থেকে রাখাইনে নিজ গ্রামে ফিরতে চাচ্ছে, তাদের ফিরতে দিচ্ছে না মিয়ানমার।’মংডুর পান্তাপিন গ্রামের প্রশাসক আনোয়ার অবশ্য দাবি করেন, রাখাইনে তার গ্রামে কয়েকজন রোহিঙ্গা ফিরে এসেছেন এবং বাসা ভাড়া করে থাকছেন। তিনি বলেন, ‘গত দুই মাসে কয়েকজন রোহিঙ্গা ফিরে এসেছে। সরকার ১১ জনকে খাবার দিয়েছে।’

তিনি বলেন, কয়েকজন থাংকি গ্রামের। কিন্তু ওই গ্রামে তাদের আত্মীয়-স্বজন নেই। পান্তাপিনে কয়েকজন আত্মীয় থাকায় এখানেই বসবাস করতে চাইছে তারা।

পূর্বকোণ/টিএফ

শেয়ার করুন