জাল ভিসা তৈরি সিন্ডিকেটের সাথে যুক্ত ১৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মালয়েশিয়ার পুলিশ। মালয়েশিয়ার সেলাংগর প্রদেশের ক্লাং ও শাহ আলমের ১১টি স্থানে গত মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ভুয়া ওয়ার্ক পারমিট সরবরাহকারী সিন্ডিকেটের এসব সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সেলাঙ্গরের অপরাধ তদন্ত বিভাগের প্রধান এসিপি ফজলসিয়াম আবদুল মজিদ জানান, গ্রেপ্তারকৃত ১৭ জনের মধ্যে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত স্থানীয় এক ব্যক্তি ও স্থানীয় একজন নারী, সাত পাকিস্তানি এবং বাংলাদেশি রয়েছে আটজন। এদের বয়স ১৯ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।

বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে ফজলসিয়াম বলছিলেন, সিন্ডিকেটটি গত এক বছর ধরে সক্রিয় ছিল এবং দুজন মাস্টারমাইন্ডের নেতৃত্বে স্থানীয় একজন পুরুষ এবং একজন পাকিস্তানি নাগরিক, যাদের নিজেরই কোন পাসপোর্ট ছিল না। স্থানীয় একজন নারী এবং আটজন পুরুষ সাপ্লাইয়ার হিসেবে সক্রিয়ভাবে কাজ করছিল এ সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটটি ক্লাংভিত্তিক অবৈধভাবে বিদেশি শ্রমিকদের মাঝে জাল ভিসা সরবরাহের ব্যবসা করে আসছিল।

সিন্ডিকেটটি প্রথমে ভারত, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে মালায়েশিয়ায় আসা অবৈধ বিদেশি কর্মীদের খুঁজে বের করতো। পরে তাদের নকল ওয়ার্ক পারমিটের অফার দেয়া হতো। এরপর তাদের কর্মী হিসেবে সেলাঙ্গরে নিয়োগকারীদের নিকট নিয়োগ দেয়া হতো।

ফজলসিয়াম আরো বলেন, প্রায় ৩০ জন বিদেশি জাল ওয়ার্ক পারমিটসহ ইতোমধ্যে নিয়োগকর্তাদের কাছে সরবরাহ করা হয়েছিল বলে তদন্তে দেখা গেছে । তবে পুলিশের দাবি করে তাদের সংখ্যা আরো বেশি ছিল।  সিন্ডিকেট প্রতিটি জাল পারমিটের জন্য ৪০০ রিংগিত করে নিতো এবং মনে করা হচ্ছে মাসিক তাদের ৫,০০০ রিংগিত সমপরিমাণের মুনাফা আসতো। অভিযানে দুটি ল্যাপটপ, একটি প্রিন্টিং মেশিন ও দুটি জাল পারমিট জব্দ করা হয়। এর পাশাপাশি ছয়টি আই-কার্ড (বিদেশিদের দেয়া ব্যক্তিগত পরিচয় দলিল) জাল বলেও সন্দেহ করা হয়।

ফজলসিয়াম সাংবাদিকদের জানান, গত ৯ অক্টোবর অবৈধ কর্মকাণ্ডের ব্যবসা ও তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুচংয়ের একটি দ্বিতল ভবনের বাড়ি থেকে ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী গ্রেপ্তার করা হয় ৮ জন বাংলাদেশিকে ।

প্রসঙ্গত, জাল ভিসা তৈরি ও সরবরাহের অপরাধে গত এক বছরে প্রায় ২০ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে জেল জরিমানা করা হয়েছে।

পূর্বকোণ/রাশেদ