চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সৌদিতে বাড়ছে ওমরাহর খরচ

সৌদি আরব প্রতিনিধি

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ৫:২৪ অপরাহ্ণ

এ বছর থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ পালনের খরচ। ওমরাহ ভিসার ওপর সৌদি সরকারের নতুন ফি আরোপসহ কিছু বাধ্যবাধকতার কারণে খরচ বাড়বে। তবে কী পরিমাণ বাড়বে তা এখনো পরিষ্কার নয়। ওমরাহর ফি নিয়ে সাম্প্রতিক সৌদি গেজেটের একটি রিপোর্টের কারণে এ নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।

রিপোর্টে হজ, ওমরাহ ও ভিজিট ভিসার ওপর ৩শ সৌদি রিয়াল ফি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত আসছে বলে জানানো হয় রিপোর্টে। অন্যদিকে, তিন বছরের মধ্যে একাধিকবার ওমরাহ করার ক্ষেত্রে দু্ই হাজার রিয়াল অতিরিক্ত প্রদানের বাধ্যবাধকতা বাতিল করা হয়েছে। বাংলাদেশের হজ ও ওমরাহ পালনকারীরা সৌদি সরকারের নতুন নিয়মের কারণে ওমরাহ ফি বৃদ্ধি পাবে এটা অনেকটা নিশ্চিত। তবে কত বৃদ্ধি পেতে পারে সেটি পরিষ্কার ঘোষণা আসার আগ পর্যন্ত বলা যাবে না। কারণ আগেও ওমরাহ ভিসার জন্য সৌদি কোম্পানিগুলোকে ২৫০ থেকে ৩০০ রিয়াল প্রদান করতে হতো।

এখন যে ৩০০ রিয়াল ফি আরোপের কথা বলা হচ্ছে সেটি সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় থেকে আসেনি। যদি পত্রিকার পূর্বাভাস সঠিকই হয় তবে সেটি কোম্পানিগুলোর ফিসহ কিনা তা বোঝা যাচ্ছে না। অনেকে আবার সব মিলিয়ে ৫০০ রিয়াল ফি নির্ধারিত হওয়ার কথাও বলছেন। সৌদি সরকার হোটেল ও যাতায়াতের খরচ অনলাইনে পরিশোধ বাধ্যতামূলক করছে। ফলে এতে ভিসার সময় খরচ বৃদ্ধি পাবে ধরে নেয়া যায়। কারণ আগেও এসব অপশন ছিল; কিন্তু ভিসা আবেদনের সময় অনলাইনে পরিশোধ করা বাধ্যতামূলক ছিল না। ফলে অনেকে নিজস্ব খরচে বিমানবন্দর থেকে মক্কায় যেতেন এবং হোটেলে থাকার খরচও নিজে বহন করতেন। সেই খরচ এখন আগাম আইবিএনে দিতে হবে।

এদিকে, রিপিট ওমরাহর জন্য যে ২০০০ রিয়াল ফি ছিল তা সৌদি সরকার বাতিল করেছে সেটা সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়। ওমরাহ ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলো বলছে, আগে ওমরাহ ভিসার জন্য আসলে সরকারি কোনো ফি ছিল না। ফলে সৌদি সরকার ওমরাহ ফি কমানোর প্রশ্নই আসে না।

এখন যদি রিপিট ওমরাহর জন্য নির্ধারিত ২ হাজার রিয়াল বাতিল করে গড়ে সব ওমরাহ ভিসায় ৩শ’ রিয়াল ফি আরোপ করে তাহলে বাংলাদেশের এজেন্সিগুলোর আগের ওমরাহ ভিসা খরচের সাথে এই ৩’শ রিয়াল সমপরিমাণ প্রায় ৬৫০০ টাকা বেশি খরচ হবে। তারা জানান, আগে ওমরাহর যে সিস্টেম (ওয়েব এপ্লিকেশন) থেকে আবেদন করা হয় এবং ফি পেমেন্ট করা হয় সেখানে ভিসা ফির স্থানে লেখা থাকত ‘ফ্রি’। আগে নিয়ম ছিল সৌদি ওমরাহ কোম্পানি সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করে দিতো, যার মধ্যে শুধু এয়ারপোর্ট থেকে মক্কা যাতায়াত যুক্ত ছিল। বাংলাদেশী এজেন্সিগুলো ওই দেশের এজেন্সির সাথে চুক্তিসাপেক্ষে ১০০-২০০ রিয়াল প্রদান করত। আর ওমরাহ ভিসার অনুমতিপত্র তথা মোফার জন্য সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করত। যারা শুধু এজেন্সির মাধ্যমে ওমরাহ ভিসা নিতো তাদের ক্ষেত্রে এ ফিটাই বাংলাদেশের এজেন্সিগুলো মোফা ফি হিসাবে ৬০০০ থেকে ১১০০০ টাকা পর্যন্ত ওমরাহ ভিসা করার জন্য নিতো।

ওমরাহ এজেন্সিগুলো জানিয়েছে, নতুন ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেমের কারণে ভিসা ফি ছাড়াও আলাদা ১০৫ রিয়াল ফি দিতে হবে, হেলথ ইন্স্যুরেন্স ফি ১০০ রিয়াল, খাদ্দেমা ফি ১০০ এবং আইবিএনের মাধ্যমে পরিশোধ করে বাসা বা হোটেল বুকিং দিতে হবে। এতে সামগ্রিক ওমরাহ খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে এজেন্সিগুলো জানায়, সৌদি আরবের ওমরাহ্ সার্ভিস প্রোভাইডার এজেন্সি এবং বিভিন্ন দেশের আপত্তির কারণে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। ওমরাহ ব্যবস্থাপনাকারী এজেন্সিগুলো ব্যাপারটি নিয়ে উদ্বিগ্ন। হারামাইন শরিফাইনের উন্নয়ন প্রকল্প ‘ভিশন ২০৩০’-এর কথা বলে নতুন ফি আরোপে ওমরাহ খরচ বাড়তে পারে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। আবার নতুন প্যাকেজও ঘোষণা করা যাচ্ছে না। ওমরাহ ব্যবস্থাপনাকারীরা এখন সৌদি সরকারের চূড়ান্ত ঘোষণা আসার অপেক্ষায় রয়েছেন।

 মক্কার হজ কাউন্সিলর মো. মাকসুদুর রহমান জানিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে ওমরাহ যাত্রী পাঠানোর কার্যক্রম শুরু হতে আরো দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। ইতোমধ্যে বেশির ভাগ ওমরাহ এজেন্সি লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করলেও এখনো বৈধ ওমরাহ এজেন্সির তালিকা প্রকাশ হয়নি।

 

 

 

 

 

পূর্বকোণ/অভি-ময়মী

শেয়ার করুন