চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

হংকংকে ‘স্বাধীন করতে’ ট্রাম্পের প্রতি অনুরোধ বিক্ষোভকারীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১১:৪৬ অপরাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা ও ব্যানার নিয়ে স্লোগানে মুখর হংকংয়ের কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীরা চীন নিয়ন্ত্রিত এ শহরটিকে ‘স্বাধীন করতে’ অনুরোধ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। টানা কয়েক মাসের ধারাবাহিকতায় রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) আন্দোলনকারীরা সড়কে নেমে হংকংয়ের বেইজিং ঘনিষ্ঠ শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

তীব্র গরমে ছাতা হাতে থাকা বিক্ষোভকারীরা এদিন পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েই মার্কিন পতাকা ও গণতন্ত্রের আকুতি জানানো প্ল্যাকার্ড নাড়িয়ে তাদের চীনবিরোধী অবস্থান ব্যক্ত করেন। মার্কিন কনসুলেটে এ সংক্রান্ত একটি আবেদন জমা দেয়ার আগে তারা ‘স্বাধীনতার জন্য লড়ো, হংকংয়ের পাশে দাঁড়াও’, ‘বেইজিংকে প্রতিরোধ কর, হংকং স্বাধীন কর’ স্লোগানও দেয়।

গত মাসে ট্রাম্প ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানোর আগেই হংকংয়ের সংকট ‘মানবিক উপায়ে’ সমাধানের জন্য চীনকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। অবশ্য এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হংকংয়ের এ বিক্ষোভকে ‘দাঙ্গা’ অ্যাখ্যা দিয়ে একে চীনের নিজস্ব ব্যাপার বলেও অভিহিত করেছিলেন। ১৯৯৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থা থেকে মুক্ত হওয়া হংকংয়ের বিক্ষোভ প্রশমনে চীনকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এস্পারও।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিমানবন্দরের প্রবেশপথ বন্ধে বিক্ষোভকারীদের চেষ্টা রুখে দিতে এবং ঘনবসতিপূর্ণ মং কোকে টানা দ্বিতীয় রাত হংকংয়ের পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয়েছে বলে রয়টার্স জানায়।

২২ বছর আগে চীনের ‘এক দেশ, দুই নীতির’ অধীনে যুক্তরাজ্য হংকংকে বেইজিংয়ের কাছে হস্তান্তর করার পর থেকে শহরটি যে পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করে আসছে, তা মূল ভূখণ্ডের দেখা যায় না বলে ভাষ্য পশ্চিমা বিশ্লেষকদের।

বেইজিং দীর্ঘদিন ধরেই হংকংয়ের এ স্বায়ত্তশাসন মুছে ফেলতে চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ শহরটির অনেক বাসিন্দার। তারই ধারাবাহিকতায় বেইজিংঘনিষ্ঠ প্রশাসন জুনে বিতর্কিত একটি বিল পাসের পরিকল্পনা করে, বলছেন তারা। বিলটিতে বিচারের জন্য বাসিন্দাদের চীনের মূল ভূখণ্ডে পাঠানোর সুযোগ রেখে আইন সংশোধনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারী ও নেতাদের স্তব্ধ করে দিতেই বিলটি আনা হয়েছে বলে সমালোচকরা সেসময় দাবি করেছিলেন। বিতর্তিক এ বিল প্রত্যাহারের দাবিতেই হংকংয়ে গড়ে ওঠে সবচেয়ে বড় আন্দোলন। টানা বিক্ষোভের মুখে সরকার বিলটি পাসের পরিকল্পনা ‘স্থগিত’ রাখার কথা বলেও বিক্ষোভকারীদের শান্ত করতে পারেনি।

গত সপ্তাহে হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম বিলটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও বিক্ষোভকারীরা মাঠ ছাড়েনি; সরকার ‘অনেক দেরিতে সামান্য কিছু’ দাবি মেনে নিয়েছে উল্লেখ করে তারা এখন শহরটিতে আরও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রণয়নে আন্দোলন করছে।

চীন শুরু থেকেই হংকংয়ের বিক্ষোভকে ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে এলেও এতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য বিক্ষোভকারীদের উসকে দিচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগও করেছে বেইজিং। টানা আন্দোলন হংকংয়ের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে সতর্কও করেছে তারা।

সূত্র : রয়টার্স

পূর্বকোণ/আফছার

শেয়ার করুন