চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

চলে গেলেন ভারতের সাবেক অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৪ আগস্ট, ২০১৯ | ২:৩০ অপরাহ্ণ

ভারতের সাবেক অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি আর নেই। গত কয়েকদিন ধরে এইমস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সেই অবস্থাতেই শনিবার দুপুর ১২টা  ৭ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।

দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ অরুণ জেটলি। ডায়াবিটিসের রোগী তিনি। অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন গতবছর কিডনি প্রতিস্থাপনও হয় তাঁর। যে কারণে ফেব্রুয়ারি মাসে অন্তর্বর্তী বাজেটের সময় সংসদে উপস্থিত থাকতে পারেননি।  শারীরিক অসুস্থতার জেরে মে মাসেও এক বার এমসে ভর্তি হন জেটলি। সেই থেকে সক্রিয় রাজনীতিতে সে ভাবে আর দেখা যায়নি তাঁকে।

শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যার কারণে তাকে নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্স (এআইআইএমএস) হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।-খবর এনডিটিভি ও ইন্ডিয়া টুডের

এক বিবৃতিতে হাসপাতালটি জানায়, আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সাবেক অর্থমন্ত্রী শ্রী অরুণ জেটলি ২৪ আগস্ট ১২ টা ৭ মিনিটে মারা গেছেন। গত ৯ আগস্ট তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

এমনকি এ বছর লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরলেও, মন্ত্রিত্ব নিতে রাজি হননি জেটলি। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ তিনি। চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাই এ বার নিজের জন্য একটু সময় চান। নতুন সরকারে তাঁকে কোনও দায়িত্ব না দিলেই ভাল। তবে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে গেলেও, সোশ্যাল মিডিয়ায় বরাবরই সক্রিয় অরুণ জেটলি। মোদী সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের পক্ষে নিয়মিত সওয়ালও করেন তিনি।

ডায়াবেটিসের কারণে হওয়া অতিরিক্ত ওজন কমাতে বছর চারেক আগে ২০১৪ সালে তার ব্যারিয়্যাট্রিক অস্ত্রোপচার হয়। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতায় আসার প্রথম মেয়াদে তিনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে আবির্ভূত হন। অরুণ জেটলি পেশাগত জীবনে একজন আইনজীবী ছিলেন। তার বাবা মহারাজ কিষাণ জেটলিও ছিলেন একজন আইনজীবী। ইন্দিরা গান্ধী সরকারের আমলে জরুরি অবস্থার সময় তাকে জেল খাটতে হয়েছে। তখন তিনি ছাত্রনেতা ছিলেন। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ভারতীয় জনসংঘের একজন সদস্য হিসেবে সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এরপর দলটিতে বড় পদে আসীন হন তিনি। জনসংঘই পরবর্তী সময়ে বিজেপিতে রূপ নেয়।

১৯৯১ সাল থেকে তিনি দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে ছিলেন। ১৯৯৯ সালে বাজপাইর সরকারে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান অরুণ জেটলি। পরে আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও তার উপর চেপেছিল। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালে বিজেপি বিরোধী দলে ছিল। তখন অরুণ জেটলি রাজ্য সভায় বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেন।

অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর তাকে দেখতে গিয়েছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।

অরুণ জেটলির জন্ম ১৯৫২ সালের ২৮ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে। হিসাব বিজ্ঞানে পড়াশোনার পর দিল্লি ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলবি ডিগ্রি নেন অরুণ জেটলি। অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের নেতা ছিলেন তিনি। দিল্লি ইউনিভার্সির ছাত্র সংসদের সভাপতিও ছিলেন। অরুণ জেটলি বিয়ে করেন কাশ্মীরের সাবেক অর্থমন্ত্রী গিরিধারী লাল ডোগরার মেয়ে সঙ্গীতাকে। তাদের দুই ছেলে-মেয়েও আইনজীবী।

 

পূর্বকোণ/পলাশ

শেয়ার করুন