চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান পাঠানোর সিদ্ধান্ত বদলালো জার্মানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১১:২০ পূর্বাহ্ণ

কয়েকমাস ধরে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও অনিশ্চয়তার পর যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি ইউক্রেনে রুশ আক্রমণ মোকাবিলায় সহায়তা করার জন্য ট্যাংক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর এরপরই পশ্চিমাদের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের দিকে নজর দিয়েছে কিয়েভ। তবে ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান পাঠানোর সম্ভাবনা বাতিল করে দিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। ইউক্রেনকে যুদ্ধ ট্যাংক পাঠানোর বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কয়েকদিন পর এই ঘোষণা দিলেন তিনি।

 

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

 

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মান একটি সংবাদপত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ওলাফ শলৎস এই মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে যুদ্ধ চালাতে বারবার অস্ত্র চাওয়ার বিরুদ্ধেও সতর্কতা উচ্চারণ করেন তিনি।

 

 

অবশ্য ইউক্রেন তার মিত্র দেশগুলোকে কিয়েভের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য একটি ‘ফাইটার জেট কোয়ালিশন’ তৈরি করতে বলেছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারা আগামী বৃহস্পতিবার জেট সরবরাহের বিষয়টি নিয়ে কিয়েভের সঙ্গে ‘খুব সাবধানে’ আলোচনা করবে।

 

 

জার্মান দৈনিক পত্রিকা ট্যাগেসপিগেল-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেন, জার্মানির তৈরি লিওপার্ড ২ ট্যাংক সরবরাহের দিকেই তার মনোযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা কেবল (ট্যাংক পাঠানোর বিষয়ে) একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং এতে করে পরবর্তী বিতর্কও জার্মানিতে শুরু হচ্ছে, এটি কেবল অসার বা ফালতু বলেই মনে হচ্ছে।’

 

 

এর আগে বুধবার ইউক্রেনের জন্য ভারী ট্যাংক সরবরাহ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানি। সেসময় চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস জানিয়েছিলেন, জার্মানি ইউক্রেনকে ১৪টি লিওপার্ড ২ ট্যাংক দেবে। পার্লামেন্টে তিনি বলেন, তিনি ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন।

 

 

অন্যদিকে সেসময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, তারা ৩১টি অত্যন্ত শক্তিশালী ও অত্যাধুনিক আবরাম ট্যাংক ইউক্রেনকে দেবেন। হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, এটাই বিশ্বের সবচেয়ে ভালো ট্যাংক।

 

তবে এখানেই থেমে থাকছে না ইউক্রেন। ট্যাংকের নিশ্চয়তা আদায় করার পর পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির নজর এখন পশ্চিমাদের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের দিকে।

 

 

ইউক্রেনের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি মেলনিক পশ্চিমা দেশগুলোকে একটি ‘ফাইটার জেট জোট’ তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন। তার দাবি, এই জোট ইউক্রেনকে মার্কিন এফ-১৬ এবং এফ-৩৫, ইউরোফাইটার, টর্নেডোস, ফরাসি রাফায়েলস এবং সুইডিশ গ্রিপেন জেট সরবরাহ করবে।

 

 

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক ইউক্রেনের ফ্রিডম টেলিভিশন নেটওয়ার্ককে বলেছেন, ‘রাশিয়ান সেনাবাহিনীর প্রধান অস্ত্রকে ঘায়েল করতে তাদেরও ক্ষেপণাস্ত্রের প্রয়োজন।’

 

 

এমনকি প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির কণ্ঠেও একই সুর প্রতিধ্বনিত হয়েছে। তিনি বলেছেন, প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পাল্লার মার্কিন তৈরি এটিএসিএমএস (ATACMS) ক্ষেপণাস্ত্রের প্রয়োজন ইউক্রেনের।

 

তবে ওয়াশিংটন এখনও পর্যন্ত সেই অস্ত্র দিতে অস্বীকার করেছে।

 

 

ট্যাগেসপিগেল-এর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে শলৎস বলেন, সামরিক জোট ন্যাটো রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত নয়। আর তাই ‘আমরা যুদ্ধে এই ধরনের স্তরে নিতে দেবো না।’

 

 

এমনকি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শলৎস নিয়মিত কথা বলেন বলেও নিশ্চিত করেছেন জার্মান এই চ্যান্সেলর। তার ভাষায়, ‘আমাদের একে অপরের সাথে কথা বলা দরকার।’

 

 

তবে শলৎস বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ একেবারেই অগ্রহণযোগ্য এবং কেবলমাত্র রুশ সৈন্য প্রত্যাহারের মাধ্যমেই চলমান পরিস্থিতির সমাধান হতে হবে।

 

 

 

পূর্বকোণ/আরএ

 

 

শেয়ার করুন