চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ইইউ’র ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবনা, তালিকায় আছে বাংলাদেশও

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৬ জানুয়ারি, ২০২৩ | ৫:০৭ অপরাহ্ণ

ইউরোপে আশ্রয় পাওয়ার অধিকার নেই এমন অভিবাসন প্রত্যাশীকে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। লোকজনকে ফেরত নেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতায় ব্যর্থ বিবেচিত হওয়া দেশগুলোর নাগরিকদের ভিসায় সংস্থাটি বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে। এই প্রস্তাবনা তালিকায় আছে বাংলাদেশও।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) এ বিষয়ে আলোচনা করতে ইইউ’র অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রীরা বৈঠকে বসছেন। ওই বৈঠক থেকে আরও বেশি সংখ্যক লোককে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ডাক আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

 

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সহযোগিতা না করায় এখন পর্যন্ত শুধু গাম্বিয়াই আনুষ্ঠানিকভাবে ইইউ-র শাস্তি পেয়েছে। ইইউ-র নির্বাহী পরিষদ ইউরোপীয় কমিশন ইরাক, সেনেগাল ও বাংলাদেশের জন্যও একই ধরনের শাস্তির প্রস্তাব করলেও সাম্প্রতিক সময়ে লোকজনকে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে ঢাকার সহযোগিতার মাত্রা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন দুই ইইউ কর্মকর্তা।

তবে তা সত্ত্বেও ২০২১ সালে ইইউভুক্ত দেশগুলো থেকে ফেরত পাঠানোর হার সব মিলিয়ে ২১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলে জানাচ্ছে ইউরোস্ট্যাটের সর্বশেষ তথ্য।

 

এক ইইউ কর্মকর্তা জানান, ‘সদস্য দেশগুলো এই হারকে কম ও অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচনা করছে।’

ইউরোপের এ জোটের ভেতর অভিবাসন ইস্যুটি ক্রমেই রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে উঠছে। সে কারণেই সদস্য দেশগুলোকে এখন ইউরোপে পৌঁছাতে পারা অভিবাসন প্রত্যাশী এবং যারা অভিবাসনের সুযোগ পাচ্ছে তাদের দায়িত্ব ভাগাভাগি নিয়ে তিক্ত বৈরিতা পুনরুজ্জীবনের চেয়ে অবৈধ অভিবাসন কমানো এবং আশ্রয় পাওয়ার অধিকার পেতে ব্যর্থদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কার্যক্রমে গতি বাড়ানো নিয়ে আলোচনা করতে হচ্ছে।

 

“প্রত্যাবাসন বিষয়ক সাধারণ এবং কার্যকর ইইউ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা অধিক কার্যকর ও আস্থাযোগ্য অভিবাসন ও আশ্রয় দেওয়া সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনার মূল স্তম্ভ,” মন্ত্রীদের বৈঠকের জন্য তৈরি করা এক আলোচনা পত্রে বলেছে কমিশন; রয়টার্স ওই পত্রটি দেখেছে।

রয়টার্স বলছে, মন্ত্রীদের যৌথ বিবৃতির এক খসড়ার বলা হয়, ‘সংশ্লিষ্ট সকল ইইউ নীতিকে কাজে লাগিয়ে লোকজনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কার্যকর উপায় বের করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’

 

সহযোগিতা না করা তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর ওপর ভিসা বিধিনিষেধসহ নানান সাজা দেওয়ার ব্যাপারে অভিবাসন মন্ত্রীদের চাপ থাকলেও অতীতে জোটভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্র ও উন্নয়ন মন্ত্রীদেরকেই এর বিরোধিতা করতে দেখা গেছে। ইইউভুক্ত দেশগুলোতে বিভিন্ন ইস্যুতে ভিন্নমতের কারণেও ওই চাপ কার্যকরের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

যে কারণে এখন পর্যন্ত গাম্বিয়া ছাড়া অন্য কোন দেশের ওপর ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে ইইউ দেশগুলোর ভেতর পর্যাপ্ত সমর্থন জোগাড় করা যায়নি। ওই বিধি-নিষেধের কারণে গাম্বিয়ার নাগরিকরা এখন ইউরোপের জোটভুক্ত দেশগুলোতে ঢুকতে মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা পাচ্ছে না, ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে অপেক্ষার সময়ও অন্যদের চেয়ে বেশি লাগছে।

 

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, কেবল গত বছরই আফ্রিকা, দক্ষিণপূর্ব এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দারিদ্র্য ও যুদ্ধপীড়িত দেশগুলো থেকে ইউরোপে পালাতে চাওয়াদের প্রধান রুট ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়েছে প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ। এর বাইরে প্রায় ৮০ লাখ নিবন্ধিত ইউক্রেনীয় শরণার্থীও ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছে।

 

পূর্বকোণ/এএস/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট