চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

‘জঘন্য, ভয়ংকর’ কাহিনীগুলো প্রাসাদ থেকেই ছড়িয়েছে : প্রিন্স হ্যারি

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

১৩ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ

রাজপরিবারের সদস্যরা তাদের নিজেদের ভাবমূর্তির উন্নতি ঘটাতে তার ও তার স্ত্রী মেগানের নামে ‘কুৎসিত’ কাহিনী ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রিন্স হ্যারি। ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যরা ট্যাবলয়েড পত্রিকার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে নেতিবাচক পরিণতি ডেকে এনেছেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

 

রাজতন্ত্রকে সাহায্য ও গণমাধ্যমকে পরিবর্তন করার চেষ্টায় তিনি তার সঙ্গে ব্রিটিশ রাজপরিবারের দ্বন্দ্বের কথা সংবাদপত্রে প্রকাশ করেছিলেন বলে দাবি করেছেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের কনিষ্ঠ পুত্র। হ্যারি জানান, তার গণমাধ্যমের পরিবর্তনের চেষ্টাকে বাবা চার্লস ‘আত্মহত্যার মিশন’ বলে বর্ণনা করেছিলেন।

 

তার স্মৃতিকথামূলক বই ‘স্পেয়ার’, প্রকাশের আগে গণমাধ্যমে (মার্কিন টিভি ও রেডিও সার্ভিস ‘সিবিএস’র এন্ডারসন কুপারকে) দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন ডিউক অব সাসেক্স। তিনি জানান, ২০২০ সালে তিনি ‘নিজেদের জীবন নিয়ে শঙ্কা থেকে’ তার পরিবার নিয়ে ব্রিটেন ছেড়ে পালিয়েছিলেন।

 

তিনি বলেন, “অনেক বছর ধরে আমার ও আমার পরিবার সম্পর্কে মিথ্যা বলার পর পরিবারটির কিছু নির্দিষ্ট সদস্যের সঙ্গে ট্যাবলয়েডগুলোর সম্পর্ক আবার শুরু হয়, এই সদস্যরা তাদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে এই অসৎ সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। এই পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার এক পর্যায়ে আমার, আমার পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি করা শুরু হয়, তখন আমি সীমারেখা টেনে দেই।”

 

সিবিএস চ্যানেলের ‘সিক্সটি মিনিটিস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রিন্স হ্যারি জানান, তিনি তার ভাই প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে কিছু সময় কথা বলেননি। এই ডিউক অব সাসেক্স জানান, তিনি তার বড় ভাইয়ের সঙ্গে ‘এখনও’ কথা বলেন না তবে ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার অপেক্ষায় আছেন’। হ্যারি জানান, তিনি তার বাবা রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গেও ‘দীর্ঘদিন’ কথা বলেননি।

 

তাদের পরিবারের আবার পুনর্মিলনের সম্ভাবনা আছে কিনা, এমন প্রশ্নে হ্যারি বলেন, “বল এখন অনেকটাই তাদের কোর্টে আছে।”

 

প্রিন্স হ্যারির প্রকাশিত স্মৃতিকথার বিয়ষবস্তু নিয়ে বাকিংহাম প্রাসাদের মন্তব্য জানতে চাওয়া হলেও তারা বারবার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।

 

ভাষ্যকাররা বলেছেন, চার্লসের সঙ্গে তার প্রথম স্ত্রী প্রিন্সেস ডায়নার (উইলিয়াম ও হ্যারির মা) সম্পর্কের ভাঙনকে কেন্দ্র করে ১৯৯০ দশকের টেলিভিশন সিরিজের সময় ব্রিটিশ রাজতন্ত্র যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল তারপর এবার হ্যারির বই তাদের সবচেয়ে বড় সংকটে ফেলেছে। রানি এলিজাবেথের মৃত্যু ও চার্লস সিংহাসনে বসার মাত্র চার মাসের মধ্যে এসব ঘটনা ঘটছে।

 

রাজকীয় দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকে হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগান যেসব অভিযোগ করেছিলেন সাক্ষাৎকারে হ্যারি সেগুলোরই আরও বিস্তারিত পুনরাবৃত্তি করেছেন। তিনি বলেছেন, রাজপরিবারের সদস্যরা ও তাদের সহযোগীরা শত্রুভাবাপন্ন ও কখনও কখনও বর্ণবাদী ব্রিটিশ সংবাদপত্র থেকে তাদের রক্ষা করতে শুধু ব্যর্থ হয়নি, অজ্ঞাত উৎসের মাধ্যমে তাদের নিয়ে কাহিনীও ফাঁস করেছে।

প্রিন্স হ্যারির সাক্ষাৎকার

প্রিন্স হ্যারি তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘স্পেয়ার’ প্রকাশের আগে একাধিক সাক্ষাৎকারে মিডিয়াকে পরিষ্কার বলেছেন, বইটি প্রকাশ করে তিনি পরিবারের কোনও সদস্যের প্রতি ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করতে চাননি। তিনি কেবল যা ঘটেছে, তা সবার সমক্ষে আনতে চেয়েছেন।

 

এখানে মার্কিন টিভি ও রেডিও সার্ভিস ‘সিবিএস’র এন্ডারসন কুপারকে দেয়া তার সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। আজ তার ৪র্থ ও শেষ কিস্তি।

 

পূর্বকোণ/আরএ

 

শেয়ার করুন