চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

পুতিনের ঘোষণার পর ন্যাটোয় যোগ দিতে ইউক্রেনের তোড়জোড়

অনলাইন ডেস্ক

৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ | ১০:৪১ অপরাহ্ণ

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অধিকৃত চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পরপরই ন্যাটোয় যোগ দিতে মরিয়া প্রচেষ্টা শুরু করেছে ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এ সামরিক জোটের সদস্য হওয়ার জন্য ‘দ্রুততর’ আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। খবর আল জাজিরার।

শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জেলেনস্কি বলেছেন, ন্যাটোয় দ্রুততর যোগদানের জন্য ইউক্রেনের আবেদনে সই করার মাধ্যমে আমরা আমাদের সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছি। তবে এই ‘দ্রুততর আবেদন’ শব্দটির অর্থ কী, তাৎক্ষণিকভাবে তা পরিষ্কার নয়। কাউকে ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্ত করতে হলে এর সব সদস্যের সম্মতি প্রয়োজন হয়।

 

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা এরই মধ্যে জোটের মানদণ্ডের সঙ্গে আমাদের সামঞ্জস্যতা প্রমাণ করেছি। সেগুলো ইউক্রেনের জন্য বাস্তব। তিনি বলেন, আমরা একে অপরকে বিশ্বাস করি, একে অপরকে সাহায্য করি এবং একে অপরকে রক্ষা করি। এটাই জোট।

এর আগে, ইউক্রেনের অধিকৃত চার অঞ্চলকে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) মস্কো থেকে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, ওই চার অঞ্চলের জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। ফলাফল সবারই খুব ভালোভাবে জানা।

 

এসময় ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলোকে হুমকি দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ডনবাস অঞ্চল (লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক নিয়ে গঠিত) চিরকালের জন্য রাশিয়ার হবে। আর রাশিয়া তার ভূখণ্ডকে যেকোনো মূল্যে রক্ষা করবে।

ইউক্রেনের লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, জাপোরিঝিয়া ও খেরসনকে রুশ ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রশ্নে গণভোট শুরু হয়েছিল গত শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর)। পাঁচদিন ধরে চলে এই ভোট। এতে ব্যালটবক্স নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যান রাশিয়ার নিয়োগ দেওয়া নির্বাচনী কর্মকর্তারা। গণভোটে ৯৬ শতাংশ মানুষ রাশিয়ায় যোগদানের পক্ষে মত দিয়েছে বলে দাবি করেছে মস্কো।

 

শুক্রবারের ভাষণে পুতিন বলেছেন, আমি নিশ্চিত, ফেডারেল অ্যাসেম্বলি রাশিয়ার চারটি নতুন অঞ্চল রুশ ফেডারেশনে অন্তর্ভুক্তির বিষয়কে সমর্থন করবে… কারণ এটি লাখ লাখ মানুষের ইচ্ছা।

তবে এই ভোট এবং এর ফলাফল অস্বীকার করেছে ইউক্রেন ও পশ্চিমারা। অধিকৃত অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ার সীমানাভুক্ত করতে এই গণভোটের ‘নাটক’ সাজানো হয়েছে বলে দাবি তাদের।

এই চারটি অঞ্চল ইউক্রেনের প্রায় ১৫ শতাংশ এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। রাশিয়া সেগুলোকে নিজের সীমানাভুক্ত করার পর দাবি করতে পারবে, ইউক্রেনকে দেওয়া ন্যাটো জোট ও পশ্চিমা দেশগুলোর অস্ত্র দিয়ে তাদের ভূখণ্ডে আক্রমণ চালানো হচ্ছে।

 

সম্প্রতি মস্কো আরও তিন লাখ বাড়তি সৈন্যকে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য তলব করেছে। রাশিয়া প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ রণক্ষেত্র প্রতিরক্ষায় এদের মোতায়েন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর নিজস্ব ভূখণ্ড রক্ষায় প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকিও দিয়ে রেখেছে ক্রেমলিন।

ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরেই ন্যাটোর সদস্য হওয়ার চেষ্টা করে আসছে। ন্যাটোর পক্ষ থেকেও ইউক্রেনকে বহুবার আশ্বস্ত করা হয়েছে। কিন্তু সাবেক সোভিয়েত দেশটির ন্যাটো সদস্য হওয়াকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করে রাশিয়া। আর তা ঠেকাতেই মূলত কিয়েভ প্রশাসনের বিরুদ্ধে গত ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভিযান শুরু করে মস্কো।

 

পূর্বকোণ/রাজীব/পারভেজ

শেয়ার করুন