মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আবারও বলেছেন, চীন যদি তাইওয়ান আক্রমণ করে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রক্ষা করবে। দ্বীপরাষ্ট্রটিকে মার্কিন সৈন্যরা রক্ষা করবে কিনা-সিবিএসের সাথে এক সাক্ষাৎকারের সময় এরকম এক প্রশ্নের জবাবে মি. বাইডেন বলেন, “হ্যাঁ করবে, যদি সত্যিই এমন কোন নজিরবিহীন আক্রমণ হয়।”
তবে তার এই মন্তব্যের পর হোয়াইট হাউস থেকে এ ব্যাপারে একটি ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়, এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি নীতিতে – যাতে তাইওয়ানের ব্যাপারে সামরিক পদক্ষেপের অঙ্গীকার নেই – কোন পরিবর্তন হয়নি।
মি. বাইডেনের এসব মন্তব্যে সামরিক হস্তক্ষেপের ব্যাপারে এ পর্যন্ত স্পষ্টতম মত প্রতিফলিত হয়েছে। দৃশ্যতঃ তা এ ব্যাপারে কৌশলী মার্কিন অবস্থানের বিরোধী – যাতে ওয়াশিংটন তাইওয়ানকে রক্ষা করার অঙ্গীকার করে না, আবার এ বিকল্পটি একেবারে উড়িয়েও দেয় না। রোববার সিবিএসের ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানের সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয়।
বেজিং এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছে যে তারা মি. বাইডেনের সামরিক পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতির “নিন্দা ও দৃঢ়ভাবে বিরোধিতা করে।”
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে , এ মন্তব্যের ব্যাপারে ওয়াশিংটনের কাছে তাদের কড়া অভিমত জানিয়েছে।গতবছরের অক্টোবর মাসের পর থেকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন এ নিয়ে তৃতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি অবস্থানের বাইরে গিয়ে কথা বললেন। রোববারের ওই সাক্ষাতকারে মি. বাইডেন আবারো বলেন যে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের স্বাধীনতা ঘোষণাকে উৎসাহ দিচ্ছে না।
“আমাদের ‘এক চীন’ নীতি আছে এবং স্বাধীনতার ব্যাপারে তাইওয়ানের সিদ্ধান্ত তাদের নিজেদের ব্যাপার। আমরা তাদের স্বাধীন হতে উৎসাহিত করছি না, এটা তাদের সিদ্ধান্ত” – বলেন তিনি। তাইওয়ান এমন একটি স্বশাসিত দ্বীপ যা চীনের পূর্ব উপকুল থেকে কিছু দূরে অবস্থিত এবং বেজিং একে তাদের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে। ওয়াশিংটন এ প্রশ্নে বরাবরই কূটনৈতিকভাবে দুই কুল রক্ষা করে এক কৌশলী অবস্থান নিয়ে আসছে।
একদিকে তারা ‘এক চীন’ নীতি মেনে চলে যা বেজিংএর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ভিত্তি। এর অধীনে তারা চীনের একটি মাত্র সরকারকেই স্বীকৃতি দেয় এবং তাইওয়ানের পরিবর্তে শুধু বেজিংএর সাথে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রাখে। কিন্তু একই সাথে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের সাথেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রক্ষা করে চলে এবং একটি আইনের অধীনে তাদের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে। এই আইনটিতে বলা আছে যে যুক্তরাষ্ট্র এই দ্বীপটিকে অবশ্যই তাদের আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ দেবে।
এ মাসেই আরো আগের দিকে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের কাছে ১১০ কোটি ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রি করতে একমত হয়। চীন এর পর ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়। তথ্যসূত্র : বিবিসি বাংলা
পূর্বকোণ/রাজীব/পারভেজ